আকাশ মিশ্র: গত শুক্রবার মুক্তি পেয়েছে পরিচালক অনীক দত্তর ‘অপরাজিত’। এই ছবি রিলিজের পর থেকেই দম ফেলার সময় নেই ‘অপরাজিত’ (Aparajito) ছবির দুর্গা ওরফে অনুষা বিশ্বনাথনের (Anusha Vishwanathan)। অভিনেত্রীর বাইরেও তাঁর আরও একটি পরিচিতি রয়েছে। অনুষা বাচিকশিল্পী ও সঞ্চালিকা মধুমন্তী মৈত্র এবং পরিচালক অশোক বিশ্বনাথনের মেয়ে। ইদানীং পাড়া-প্রতিবেশি, আত্মীয়-পরিজন, বন্ধুবান্ধব সবাই দুর্গা বলেই ডাকছেন তাঁকে। আর ডাকবেন নাই বা কেন? অনীকের ‘পথের পদাবলী’তে তো দুর্গা চরিত্রে অভিনয় করে নজর কেড়ে নিয়েছেন অনুষা!
প্রশংসিত হয়ে কেমন লাগছে অনুষার?
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালকে অনুষা জানিয়েছেন, ”দারুণ লাগছে। গোটা দেশজুড়েই এই ছবি দেখে উচ্ছ্বসিত সবাই। এই রেসপন্সটা সত্যিই খুব আনন্দ দিচ্ছে। আমার এখনও মনে আছে, আমাকে অনীকদা ফোন করে খুব ক্যাজুয়ালভাবেই বলেছিলেন, দুর্গার মতো করে শাড়িটা পরে, একটা ছবি পাঠাতে। তখন আমি বুঝতে পেরেছিলাম। কিছু একটা হচ্ছে। অনীকদাকে জিজ্ঞেস করাতে, আমাকে ছোট্ট করে ছবির কথা বলেছিলেন। এরপর কয়েকটা লুক টেস্ট হয়েছিল। তারপর ফাইনালাইজ হয়ে যায়। তবে প্রথম প্রথম একটু ভয়ও লেগেছিল। আসলে দুর্গা চরিত্রটা খুবই আইকনিক। কিন্তু মনে মনে এটা ঠিক করে নিয়েছিলাম, এই সুযোগ কিছুতেই হাতছাড়া করা যাবে না। কারণ, সেই সময় থেকেই বুঝতে পেরেছিলাম, এই ছবি সফল হবেই।”
দুর্গা হিসেবে নিজেকে তৈরি করতে কতবার দেখেছিলেন সত্যজিৎ রায়ের পথের পাঁচালী?
অনুষার সোজা উত্তর, ”আগেও বহুবার দেখেছি এই ছবি। তবে স্ক্রিপ্ট হাতে পাওয়ার পর অপরাজিত ছবিতে যে দৃশ্যগুলো পুনর্নির্মাণ করা হয়েছিল, শুধু সেগুলোর ক্লিপিংস আমাদের দেওয়া হয়েছিল। সেগুলো নিয়মিত দেখতাম। পথের পাঁচালীর দুর্গা হয়ে ওঠার চেষ্টা করি।” অনুষার কথায়, এরকম একটা আইকনিক চরিত্রে অভিনয় করাটা আমার কাছে খুব বড় সুযোগ ছিল। চ্যালেঞ্জিংও ছিল। তবে ছবি মুক্তির পর যেভাবে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তর থেকে প্রশংসা পাচ্ছি, আমার কাছে তা সত্যিই দারুণ ব্যাপার। আমি অনীকদার কাছে কৃতজ্ঞ যে এরকম একটা ছবির অংশ আমাকে বানিয়েছেন, তাও আবার এক আইকনিক চরিত্রে!”
[আরও পড়ুন: ‘কেজিএফ চ্যাপ্টার ২’কে টেক্কা, রেটিং তালিকার শীর্ষে ‘অপরাজিত’ ]
পরিচালক অশোক বিশ্বনাথনের মেয়ে তুমি। মা মধুমন্তীও বহুদিন ধরে এই শিল্পজগতের সঙ্গে যুক্ত। অভিনয় দেখে তাঁরা কী বলছেন? তাঁদের থেকে টিপস পেয়েছেন?
অনুষার কথায়, ভীষণ খুশি তাঁরা। ”শুধু মা-বাবা নয়, দিদাও খুব খুশি। পথের পাঁচালীর দুর্গা আমার দিদার সহপাঠী ছিলেন। দিদার কাছ থেকে তাঁর কথা শুনেছি। সবাই খুব খুশি। আর বাবার সঙ্গে সব সময়ই সিনেমা নিয়ে আলোচনা হতে থাকে। তাছাড়াও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি সাহিত্য নিয়ে পড়ার সময় ‘পথের পাঁচালী’ নিয়ে একটা প্রজেক্ট করেছিলাম। তখন বাবা আমাকে খুব সাহায্য করেছিল। দুর্গার চরিত্রে অভিনয় করার সময়ে খুব কাজে এসেছিল এই প্রজেক্টটা। তবে হ্যাঁ, যেহেতু দুর্গা চরিত্রটা গ্রামবাংলার এক মেয়ের, তাই নিজেকে প্রচুর বদলে ফেলতে হয়েছিল। এটা আমার কাছে খুব বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। আর এর ক্রেডিট আমি দেব অনীকদাকে।”
অনুষার হাতে রয়েছে বেশ কিছু কাজ। তবে আপাতত কিছুদিন ‘অপরাজিত’ ছবির সাফল্যের আনন্দেই ভেসে যেত চান। দর্শক তাঁকে নতুন দুর্গা হিসেবে মেনে নিয়েছেন, এটাই অনুষার কাছে বড় পাওনা।