সুপর্ণা মজুমদার: মানসিক টানাপোড়েন, রহস্য আর ধাঁধার খেলা। এর মিশেলেই তৈরি সায়ন্তন ঘোষাল পরিচালিত ‘রক্তকরবী’ ওয়েব সিরিজ। সিরিজের দুই মুখ্য চরিত্র সাত্যকি ও রঞ্জা। মগজাস্ত্রের খেলা এই দু’জনের মধ্যেই চলেছে। সাত্যকির ভূমিকায় অভিনয় করেছেন বিক্রম চট্টোপাধ্যায় (Vikram Chatterjee)। আর রঞ্জা হয়েছেন রাইমা সেন (Raima Sen)।
সাইকোলজির মেধাবি ছাত্র সাত্যকি। সদ্য পাশ করে চেম্বার খুলেছে। বিদুলার (রুকমা রায়) সঙ্গে বিয়ের কথাও পাকা। মা-বাবা তো বটেই বউদি রঞ্জাও প্রশংসায় পঞ্চমুখ। কিন্তু শিবরাত্রির দিন সমস্ত কিছু পালটে যায়। সাত্যকির প্রথম রোগীই আত্মহত্যা করে। যাবতীয় দোষ সাত্যকির ঘাড়েই পড়ে। তার আত্মবিশ্বাস ভেঙে যায়।
মাসতুতো দেওরের এই অবস্থা মেনে নিতে পারে না রঞ্জা। পরিকল্পনা করে তাঁকে নিজেদের উড়ালডাঙার বাড়িতে নিয়ে আসে। কিন্তু সেখানে শুরু হয় নতুন রহস্যের খেলা। একের পর এক মৃত্যু ঘটতে থাকে উড়ালডাঙার বাড়িতে। প্রথমে রঞ্জার স্বামী শৈবাল (ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়)। তারপর তার শ্বশুর রাধাপ্রসন্ন (শান্তিলাল মুখোপাধ্যায়) ও শাশুড়ি সত্যবতী (তুলিকা বসু)। এই মৃত্যুমিছিলের নেপথ্যে কে? খুঁজে বের করতে মরিয়া সাত্যকি।
[আরও পড়ুন: ‘সুশান্তের মতো পরিণতি হোক চাই না’, মন্তব্য রাখি সাওয়ান্তের স্বামীর, কী প্রতিক্রিয়া অভিনেত্রীর?]
রহস্য গল্প। তাই এর চেয়ে বেশি গল্প বলা অপরাধ। বিক্রম চট্টোপাধ্যায়ের (Vikram Chatterjee) অভিনয় ভাল। সাত্যকির এই চরিত্রে তিনি ‘তানসেনের তানপুরা’র আলাপের কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন। বিশেষ করে তদন্তের দৃশ্যে। রাইমা নিজের ভূমিকা যথাযথভাবে পালন করেছেন। ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়, শান্তিলাল মুখোপাধ্যায়, তুলিকা বসু, অঙ্গনা রায়রা এ সিরিজে পার্শ্ব চরিত্র। প্রত্যেকেই অভিনয় ভাল করেছেন। তবে কিঞ্জল নন্দর চরিত্র আশিস ও রুকমা রায়ের চরিত্র বিদুলার তেমন কিছু করার সুযোগ ছিল না।
অভিনয়ের ক্ষেত্রে আরও দু’জনের কথা না বললেই নয়। ভুলু জেঠুর চরিত্রে হরিদাস চট্টোপাধ্যায় ও পিসিমার ভূমিকায় লাবণী সরকার। দু’জনের অভিনয় কাহিনির গ্রিপ ধরে রাখতে সাহায্য করেছে। পরিচালক সায়ন্তন রহস্য গল্পের প্রেমিক। তার সেই প্রেম প্রত্যেকটি এপিসোডে দেখা গিয়েছে। সিরিজের সৃজনশীল পরিচালক আবার সাহানা দত্ত। তাই সম্পর্ক ছকভাঙা সমীকরণও দেখা হয়েছে। মোট ১১টি এপিসোডের কয়েকটি জায়গা ধীরগতির মনে হলেও এ সিরিজ একবার দেখাই যায়।
ওয়েব সিরিজ – রক্তকরবী
অভিনয়ে – রাইমা সেন, বিক্রম চট্টোপাধ্যায়, তুলিকা বসু, শান্তিলাল মুখোপাধ্যায়, হরিদাস চট্টোপাধ্যায়, লাবণী সরকার, ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়, রুকমা রায়, অঙ্গনা রায়, কিঞ্জল নন্দ
পরিচালনা – সায়ন্তন ঘোষাল