সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘বিপুলা এ পৃথিবীর কতটুকু জানি?’, এই না জানার প্রতি কৌতূহল মানুষের আজন্ম। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে চেনা-জানার পরিসর বিস্তৃত হয়েছে দিগন্ত থেকে দিগন্তে। এই দেশ, এই পৃথিবী, এই সৌরজগতের যত সামান্য অংশই জ্ঞাত হোক না কেন, বাহির থেকে আরও বাহিরের দিকে জ্ঞানের আগ্রহ বিস্তারে তো আপত্তি নেই। তাই তো এবার সৌরজগতের বাইরে (Exoplanets) আরও বিস্তৃত মহাশূন্য সম্পর্কে জানতে বিশেষ টেলিস্কোপ পাতছে ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি (ESA)। আগামী ২ বছর এটি সূর্য পরিবারের বাইরের জগৎ সম্পর্কে তথ্য জোগাড় করে বিশ্লেষণ করবে।
সূর্য এবং নবগ্রহ সম্পর্কেই কত কি জানা হল না, আর তারও বাইরের কিছু জানার উদ্যোগ! নাহ, প্রথমে তাই এর অনুমোদন মেলেনি। কিন্তু জনা কয়েক বিজ্ঞানীর নাছোড় জেদের কাছে পরাজিত ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির কর্তারা। বৃহস্পতিবারই সৌরজগতের বাইরের জগৎ সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের কাজে সবুজ সংকেত দিয়েছে সংস্থা। প্রয়োজনীয় সইসাবুদ করে আগামী ২ বছরের জন্য অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
[আরও পড়ুন: পাঁচ মাসের মধ্যেই দ্বিতীয় অভিযানে SpaceX, চলতি সপ্তাহে ৪ নভোশ্চর যাচ্ছেন মহাকাশে]
এই মিশনের ভার দেওয়া হয়েছে ব্রিটেনের কাঁধে। ‘এরিয়াল’ স্পেস টেলিস্কোপকে প্রযুক্তিগতভাবে চালনা করার দায়িত্ব ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের প্রথম সারির অধ্যাপক জিওভান্না তিনেত্তির। তিনিই টেলিস্কোপের অন্যতম মূল কারিগর। ব্রিটিশ মহাকাশ গবেষণা সংস্থার প্রধান ক্যারোলিন হার্পারের কথায়, ”সৌরজগতের বাইরে এক্সোপ্ল্যানেট নিয়ে আমাদের কাজ অনেক বিস্তৃত। তাই এই কাজের সিংহভাগ দায়িত্ব আমাদের। গোটা বিশ্বের সঙ্গে সমন্বয় রেখে আমরা কাজ করি। এছাড়া এই মিশনের প্রযুক্তির দিকটা যাদের দায়িত্ব, সেই RAL Space বিশ্বমানের ইঞ্জিনিয়ারিং সংস্থা। এখানকার বিশেষজ্ঞ এবং অন্যান্য পরিকাঠামোও খুবই ভাল।”
[আরও পড়ুন: মঙ্গলের আড়ালে লুকিয়ে চাঁদেরই যমজ সঙ্গী! অস্তিত্বের কথা জেনে বিস্মিত বিজ্ঞানীরা]
জানা গিয়েছে, আগামী দু বছর ‘এরিয়াল’-এর মূল কাজ, সৌরজগতের বাইরের গ্যাসীয় পদার্থের বিশ্লেষণ এবং সেখান থেকে অনুমান করা যে ওই জগতের সৃষ্টি কীভাবে, কত বছর আগে, ওখানে কী থাকতে পারে, এমনই কিছু প্রাথমিক বিষয়। এরপর ২০২৯ সাল নাগাদ পৃথিবীর কক্ষপথ থেকে ১৫ লক্ষ কিলোমিটার দূরে পাঠানো হবে ‘এরিয়াল’, অর্থাৎ এই সৌরজগতের বাইরে। তাকে এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, যাতে মহাশূন্যে মাইনাস ২৩০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রাতেও তা কাজ করতে পারে। ২০২৯ সাল থেকে চার বছর ধরে তা মহাশূন্যে থেকে অনুসন্ধানের কাজ চালাবে। অন্তত হাজারটি এক্সোপ্ল্যানেট সম্পর্কে খুঁটিনাটি তথ্য জোগাড় করবে। তারপর বোঝা যাবে, আমাদের চেনা ব্রহ্মাণ্ডের ওপারে আসলে কী আছে।