সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘হৃদয়ে লেখো নাম সে নাম রয়ে যাবে।’ কিন্তু সেই হৃদয়ই যদি ছোট হয়ে যায়? গবেষকদের দাবি তেমনই। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, মহাকাশচারীদের (Astronaut) হৃদয় (Heart) সঙ্কুচিত হয়ে যাচ্ছে দীর্ঘ সময় মহাকাশে (Space) কাটানোর সময়! সম্প্রতি সামনে এসেছে এমনই চমকপ্রদ তথ্য।
২০৩০ সালের মধ্যেই মঙ্গলে মানুষ পাঠাতে চায় NASA। তার আগে বিজ্ঞানীরা খুঁটিয়ে দেখে নিচ্ছেন, মহাকাশে দীর্ঘ সময় কাটানোর সময় মহাকাশচারীদের শরীরে তেমন উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হচ্ছে কিনা। টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের সাউথ-ওয়েস্টার্ন মেডিক্যাল সেন্টারের এক নতুন গবেষণার ফল সদ্য সামনে এসেছে। ২০১৫ সালের ২৭ মার্চ থেকে ২০১৬ সালের ১ মার্চ, মোট ৩৪০ দিন আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে ছিলেন বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত নভোচর স্কট কেলি। গবেষকদের দাবি, ওই মহাকাশচারীর হৃৎপিণ্ডের ভর মহাকাশে থাকার সময় সপ্তাহে গড়ে ০.৭৪ গ্রাম করে হ্রাস পেয়েছিল!
[আরও পড়ুন: ‘দূষণের প্রভাব, ছোট হচ্ছে পুরুষাঙ্গ’, বিজ্ঞানীদের সতর্কবার্তা নিয়ে টুইট গ্রেটা থুনবার্গের]
তবে হৃদযন্ত্র সঙ্কুচিত হয়ে গেলেও তার কর্মক্ষমতা হ্রাস পায়নি। অন্যতম গবেষক বেঞ্জামিন লেভিন জানিয়েছেন, ”ওটা হয়তো একটু সঙ্কুচিত হয়েছে। কিন্তু সামান্য ছোট হয়ে গেলেও এটির কাজ করার ক্ষমতায় কোনও পরিবর্তন হয়নি। আমি মনে করি, এটা দীর্ঘ সময়ের মহাকাশযাত্রার ক্ষেত্রে বেশ উৎসাহব্যঞ্জক। প্রায় এক বছর মহাকাশে থাকার পরও হৃৎপিণ্ড দিব্যি কাজ করছে।”
প্রসঙ্গত, হৃৎপিণ্ড ছোট হয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছিল এক সাঁতারুর জীবনেও। প্রশান্ত মহাসাগরে বছরের প্রায় অর্ধেক সময় কাটানোর পরে তাঁর শরীরেও এই পরিবর্তন হয়েছিল। সেই ঘটনার উল্লেখ করে লেভিনের দাবি, সাঁতারুর ক্ষেত্রে পরিবর্তনটা মহাকাশচারীর পরিবর্তনের থেকেও বিস্ময়কর।
[আরও পড়ুন: ঐতিহাসিক! প্রথমবারের জন্য লেন্সবন্দি ব্ল্যাক হোলের চারপাশের চৌম্বক ক্ষেত্র]
দীর্ঘ মহাকাশযাত্রা অর্থাৎ দূরের গ্রহে পাড়ি দেওয়ার পরিকল্পনা নাসার অনেক দিনের। কেবল তারাই নয়, চিন কিংবা অন্যান্য মহাকাশবিজ্ঞানে এগিয়ে থাকা দেশগুলিও এমন স্বপ্ন দেখছে। কিন্তু সেক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াচ্ছে মূলত দু’টি বিষয়। এর মধ্যে অন্যতম রসদের ঠিকঠাক ব্যবস্থা রাখা। পাশাপাশি দীর্ঘ সময় মহাকাশে কাটানোর সময় শরীরে কোনও খারাপ প্রভাব পড়লে তা থেকে নিজেকে রক্ষা করা। নয়া গবেষণায় দ্বিতীয় বিষয়টির ক্ষেত্রে কিছুটা স্বস্তির ইঙ্গিত মিলল। তবে এবিষয়ে এখনও বিস্তারিত পর্যবেক্ষণ ও গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহলের।