shono
Advertisement

নজিরবিহীন সাফল্য ‘অপরাজিত’র, তা সত্ত্বেও ছবি নিয়ে খুঁতখুঁতানি রয়েছে অনীক দত্তর

ছবির দু-একটা গুরুত্বপূর্ণ দৃশ্য বাদ দিতে হয়েছে অনীককে।
Posted: 07:06 PM May 20, 2022Updated: 07:06 PM May 20, 2022

অপরাজিত’র (Aparajito) অভূতপূর্ব সাফল‌্যের পরে একান্ত সাক্ষাৎকারে ধরা দিলেন পরিচালক অনীক দত্ত (Anik Dutta)। তাঁর কথা শুনলেন শম্পালী মৌলিক।

Advertisement

হল ভিজিটের অভিজ্ঞতা কেমন?
খুবই ভাল। অত‌্যন্ত স্বতঃস্ফূর্ত সাড়া পাচ্ছি। লোকজন হাততালি দিচ্ছে। আবেগের চূড়ান্ত বহিঃপ্রকাশও দেখলাম। হাত-টাত ধরে ফেলছে একেবারে।

রবীন্দ্রনাথ কিংবা সত‌্যজিৎ রায়কে নিয়ে কাজ করা মানেই তো পান থেকে চুন খসলে মানুষ তেড়ে আসবে। সেখানে আপনি যেচেপড়ে এই গুরুদায়িত্ব নিজের কাঁধে নিলেন কেন?
যখন বাবুদা হ্যাঁ বলেন, তারপর বিশপ লেফ্রয় রোডের বাড়ির সিঁড়ি দিয়ে নামছিলাম আর ভাবছিলাম বাঁশটা কেন নিজে নিলাম। কিন্তু মানুষ তো এরকম করে। কাজটা করার ডিসিশনটা সুইসাইডাল ছিল কিনা জানি না। বাঙালি তো আত্মঘাতীই বলে, এটা সেরকমটা নয়। তবে কোনও একটা জায়গায় গিয়ে মনে হয়েছিল, এই ছবিটা করেই দেখা যাক। ইট-পাটকেল পড়লে হেলমেট পরে ডিফেন্স নেওয়া যায়, কিন্তু মারধর খেলে মুশকিল হত। সেটা এখনও সৌভাগ‌্যক্রমে হয়নি (হাসি)।

আপনার তো নিশ্চিতভাবেই সত‌্যজিৎ রায়ের প্রতি একটা আগ্রহ বা ভালবাসা ছিল শুরু থেকেই।
সে তো অনেক লোক রয়েছে পৃথিবীতে। সত‌্যজিৎ রায়কে (Satyajit) নিয়ে আমার শুধু আগ্রহ বলব না, অবসেশন ছিল শুরু থেকে। খুব ছোটবেলায় যখন ‘সন্দেশে’র গ্রাহক ছিলাম তখন থেকে ওঁর আঁকা আমার খুব ভাল লাগত, অনুপ্রাণিত করত। আমার নিজের আঁকায় তাঁর ইনফ্লুয়েন্স থাকত। আমাকে একজন তো বলেছে–এটা ‘গুরুদক্ষিণা ২’!

[আরও পড়ুন: আরও একবার মন ভরাল ফুলেরা ‘পঞ্চায়েতে’র কাণ্ডকারখানা, সচিবজি’কেও ছাপিয়ে গেলেন এঁরা]

প্রশংসা পাচ্ছেন, সপ্তাহান্তে হল হাউসফুল যাচ্ছে, কাজের দিনেও মারাত্মক ভিড়। সেই সঙ্গে IMDB রেটিং ৯.৭ পেয়েছে ‘অপরাজিত’। আর কোনও বাংলা ছবির এমন ঘটেছে বলে জানা নেই।
সেটা কিন্তু আমার জানা নেই, এমনটা লেখা হচ্ছে বটে। এখনও এই রেটিং, আবার কমতেও পারে, আমি জানি না।

এত প্রশংসা সত্ত্বেও আপনার নিজের কোনও খুঁতখুঁতানি আছে ছবিটা নিয়ে?
হ্যাঁ, হ্যাঁ প্রচুর। এমন আমার সব ছবি নিয়েই থাকে। ‘অপরাজিত’ নিয়েও খুঁতখুঁতানি আছে। যেগুলো আউটডোরে করব ঠিক করেছিলাম, সেগুলোর অনেকগুলোই হয়নি। প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং অন‌্যান‌্য নানারকম বিপত্তির কারণে। আমার মনে হয়, ওই জায়গাগুলো আরও সমৃদ্ধ করা যেত। দু-একটা খুব ইন্টারেস্টিং সিনও আমাকে ড্রপ করতে হয়েছে, নয়তো ছবিটা লম্বা হয়ে যেত।

‘অপরাজিত’ দেখতে গিয়ে মনে হয়েছে, আপনি অত‌্যন্ত সত‌্যনিষ্ঠ থেকে কাজটা করেছেন এবং সন্দীপ রায়ের পরামর্শও নিয়েছেন। তবু চরিত্রগুলোর নাম বদলে দিলেন কেন?
 সেটা বাবুদাই আমাকে বলেন যে, ‘নামগুলো পালটে দাও।’

এই সপ্তাহেই ‘বেলাশুরু’ চলে আসছে। সেটা নিয়ে চিন্তা আছে?
না, না। আমার এইসব চিন্তা হয় না। হয়তো ‘বেলাশুরু’-র অডিয়েন্স আর ‘অপরাজিত’-র দর্শক ওভারল‌্যাপ করবে। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে করবেও না আমার মনে হয়। আমি ভুলও হতে পারি।

ছবিতে প্রথমে আবির চট্টোপাধ‌্যায়ের করার কথা ছিল। তাঁর জায়গায় আপনি জীতু কামালকে নিলেন। এতটা ক্লিক করে যাবে ভেবেছিলেন?
না, এতটা ভাবিনি। আমি জানতাম ওর ফিচার্স সত‌্যজিৎ রায়ের কাছাকাছি। কলেজ জীবনের চরিত্রে অল্প কিছু দৃশ্যের জন‌্য প্রথমে জীতুকে ভেবেছিলাম তাই। পরে যখন মেকআপ থেকে বেরল, সেই সময় আমি শিওর ছিলাম, যে জীতুকে দিয়ে করানো উচিত।

কণ্ঠটা যে ডাব করাবেন, সেই বিষয়ে কি শুরু থেকেই নিশ্চিত ছিলেন?
হ্যাঁ, একদম। কয়েক জনকে ট্রাই করেছিলাম চন্দ্রাশিসের গলাটাই সব থেকে ভাল লাগে।

কখনও মনে হয়, আরও আগে ছবি বানানো শুরু করলে ভাল হত?
এটা তো সবসময়ই মনে হয়। আমি তিরিশ বছর অপেক্ষা করেছি ছবি করার জন‌্য। বারবার কাছাকাছি এসেও হয়নি। আমাকে কেউ সুযোগ দেয়নি তখন। আর আমিও হাত কচলাতে পারি না। যদি আমাকে কেউ বসিয়ে রাখত, আমি আধঘণ্টা পরে উঠে চলে আসতাম। আমার কাছে আত্মসম্মান বজায় রাখাটা ছবি করার থেকে অনেক জরুরি।

[আরও পড়ুন: ‘আমরা বাঁচব অনেক দীর্ঘকাল…’, শেষ দেখায় স্বাতীলেখাকে কবিতা শোনান সৌমিত্র, দেখুন ভিডিও]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement