shono
Advertisement

‘রাহুলের থেকে অনেক কিছু শিখেছি, অস্বীকার করব না’, ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে অকপট প্রিয়াঙ্কা

'মানুষ হিসাবে আমি আর আগের মতো থাকিনি', স্পষ্ট করলেন প্রিয়াঙ্কা।
Posted: 03:05 PM Jan 06, 2023Updated: 03:05 PM Jan 06, 2023

মুক্তি পেল শ্রীজাত পরিচালিত প্রথম ছবি ‘মানবজমিন’। যেখানে অন‌্যতম প্রধানচরিত্রে রয়েছেন অভিনেত্রী। ছবি নিয়ে আড্ডার ফাঁকে ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে অকপট প্রিয়াঙ্কা সরকার। শুনলেন বিদিশা চট্টোপাধ‌্যায়

Advertisement

নতুন বছরের শুরুতেই মুক্তি পাচ্ছে ‘মানবজমিন’। তাও আবার কবি শ্রীজাত’র পরিচালনায় প্রথম ছবি। কতটা এক্সাইটেড?

প্রিয়াঙ্কা: আমাদের কখনও আলাদা করে এই অনুভূতিটা হয়নি যে এই ছবির পরিচালক একজন কবি। এর থেকে অ‌্যামেচারিশ পরিচালকের সঙ্গে আগে কাজ করেছি। শ্রীজাতদা যেহেতু অনেকদিন ধরে ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে যুক্ত এবং নানাভাবে ইনভলভড থেকেছে, ফলে ফিল্মমেকিং সংক্রান্ত নলেজটা ওর ছিলই। এবং যেহেতু বহু বছর ধরে ছবি করতে চেয়েছিল ফলে ওর প্রিপারেশনটা কিন্তু অনেকদিনের। আমি এই ছবিটা নিয়ে আশাবাদী। এত সুন্দর, মিষ্টি একটা গল্প এবং সহজ ন‌্যারেটিভ, যার মধ্যে দর্শক সবরকম উপাদান পাবেন।

আপনার চরিত্রটা কেমন? এই ছবির জন‌্য রাজি হলেন কেন?
প্রিয়াঙ্কা: এই ছবিতে আমি ‘কুহু’। যে ‘মানবজমিন’ নামে একটা এনজিও চালায়। কুহুর জীবনে এটা অন‌্যতম প‌্যাশন বলতে পারো। সব কিছুর ঊর্ধ্বে গিয়ে মানুষের জন‌্য কাজ করতে চায়। কুহু একটা স্কুল বানাতে চায়। সেটা নিয়ে একটা সমস‌্যা তৈরি হয়। আর প্রেম তো রয়েইছে। আর এই ছবিতে কবিতার এত সুন্দর ব‌্যবহার রয়েছে, আমার মনে হয় দর্শকের ভাল লাগবে। আমি যখন স্ক্রিপ্টটা শুনি, গল্পটা খুবই ভাল লেগেছিল। তারপর পরানদা, খরাজদা, পরমব্রতর মতো অভিনেতাদের সঙ্গে শ্রীজাতদার পরিচালনায় কাজ করার সুযোগ ছাড়তে চাইনি।
‘মানবজমিন’-এ পরমব্রতর বিপরীতে প্রথম কাজ করলেন, কেমন অভিজ্ঞতা?

প্রিয়াঙ্কা: পরমব্রত খুবই প্রিয় নায়ক আমার। অনেকদিন ধরে কাজ করার ইচ্ছে ছিল। আমার মনে আছে, পরমদার সঙ্গে প্রথম কাজ করেছিলাম তখন আমার বারো কি তেরো বছর বয়স। ‘স্বপ্নের রং নীল’ ধারাবাহিকে। তারপর ‘হেমলক সোসাইটি’, ‘যকের ধন’-এ কাজ করেছি। এবারে কাজ করেও দারুণ লাগল।

নতুন বছরে আর নতুন কী হতে চলেছে?
প্রিয়াঙ্কা: কিছুদিন আগেই পরিচালক সৌমিক হালদারের সঙ্গে ‘বিবাহ অভিযান’-এর সেকেন্ড পার্ট-এর শুটিং শেষ করলাম। অভিমন্যুর পরিচালনায় বনির সঙ্গে একটা ছবি রেডি হয়ে রয়েছে, নাম ‘অহল‌্যা’। আর ইন্দ্রনীল রায়চৌধুরির পরিচালনায় সিরিজ করলাম, ‘ছোটলোক’। আরও বেশ কিছু কাজের কথা চলছে।

[আরও পড়ুন: মা হতে চলেছেন দীপিকা? ‘পাঠান’ বিতর্কের মাঝেই নতুন গুঞ্জনে জড়ালেন রণবীর ঘরনি ]

প্রায় পনেরো-ষোলো বছরের ফিল্ম কেরিয়ার। নতুন এবং পুরনোদের ভিড়ে, আগামী বছরে কীভাবে নিজেকে দেখতে চান?
প্রিয়াঙ্কা: এখনও অভিনেতা হিসাবে নিজেকে এক্সপ্লোর করা বাকি রয়ে গিয়েছে। অনেক কাজ বাকি। কত ধরনের চরিত্র করা বাকি। অনেক পরিচালকের সঙ্গে কাজ করা হয়নি! আরও বেশি সংখ‌্যক দর্শকের কাছে পৌঁছতে চাই। আমি যখন বারো বছর বয়সে টেলিভিশনে কাজ করা শুরু করেছি, তখন একরকমের চ‌্যালেঞ্জ ছিল। ‘চিরদিনই…’-র পর অন‌্য ধরনের চ‌্যালেঞ্জ। গ‌্যাপ নিয়ে ফেরার পর অন‌্য ধরনের চ‌্যালেঞ্জ। আর এই নানা চ‌্যালেঞ্জ আছে বলেই আমার প‌্যাশনটা এখনও আগের মতোই।

ব‌্যক্তিগত জীবনে কতটা পরিবর্তন? রাহুলের সঙ্গে সেপারেশন, সহজকে নিয়ে আপনার জার্নি, এখন আবার রাহুলের সঙ্গে বেড়াতে গেলেন। বন্ধুত্বটা কি জোড়া লাগছে তাহলে?

প্রিয়াঙ্কা: বন্ধুত্ব আমাদের চিরকালই ছিল। দুটো মানুষ এক ছাদের তলায় থাকলে যেমন ঠোকাঠুকি লাগে, তেমন পরস্পরের প্রতি কাজের জায়গায় যে মিউচুয়াল রেসপেক্ট সেটা সবসময় ছিল। হয়তো একমাস কথা হয়নি। ভাল সিনেমা বা সিরিজ দেখলে হয়, টেক্সট করে বলেছি, এটা দেখো। আর আমি ওর থেকে যা-যা শিখেছি সেটা সব সময় স্বীকার করেছি। ছোটবেলা থেকে আমার বড় হওয়াটা, এনরিচ হওয়াটা রাহুলের সান্নিধ্যেই। সেটা কী করে অস্বীকার করব! চিরকালই চেষ্টা করেছি আমাদের পার্সোনাল এবং প্রফেশনাল জায়গাটা আলাদা করার। সেপারেশনের সময় খুব খারাপ ফেজের মধ্যে যখন ছিলাম, তখনও আমরা একসঙ্গে কাজ করেছি।

একটা কথা স্বীকার করতেই হয়, আপনারা দু’জনেই কখনও কাদা ছোড়াছুড়িতে যাননি…

প্রিয়াঙ্কা: আসলে কী বলো তো, এমন কিছু ঝোঁকের মাথায় কখনও বলতে চাইনি যেটা থেকে যাবে। কোনও স্টেটমেন্ট দিতে চাই না। অভিজ্ঞতা থেকে জানি আমরা হয়তো নিজেদের মতো করে অনেক প্ল‌্যান করি, কিন্তু আমাদের হাতে সব কিছু থাকে না। সময় নিজের মতো করে ডিসাইড করে। আর সোশ‌্যাল মিডিয়ার ইমপ‌্যাক্টটা বুঝতে আমার অনেকটা সময় লেগেছে। অনেক কথা হয়তো বলে ফেলেছি, যেটা সহজের সামনে আসা উচিত নয়। ও এখন ছোট, কিন্তু পরে বড় হয়ে সেগুলো জানবে। তাই এখন প্রাইভেট স্পেসটাকে আরও একটু প্রাইভেট রাখতে চাই। আর আজকাল বাচ্চাদের হাতে ইন্টারনেট, ইউটিউব সবই হাতের মুঠোয়। আজকে একটা কিছু বললাম, সেটা থেকে যাবে। আমাদের ছোটবেলাটা তো এরকম ছিল না। খবরের কাগজে বেরল কিংবা টিভিতে হয়তো দেখাল। কিন্তু তারপর সেটা হারিয়েও যেত। এখন তো সব ডেটা, তথ‌্য থেকে যায়। তাই এই সময়ে ব‌্যক্তিগত জীবন নিয়ে কমেন্ট না করাটাই বেটার।

‘সহজ’ অনেকটাই আপনাদের একসঙ্গে বেঁধে রেখেছে…

প্রিয়াঙ্কা:কোভিড, লকডাউন, আমার অ‌্যাকসিডেন্ট– সব কিছুর পর একটা জিনিস মনে হয় খুব– জীবনটা খুব অস্থায়ী। আমাদের হাতে কতটা সময় আছে আমরা জানিও না। তাই খুব দরকার সুন্দর স্মৃতি তৈরি করার। আমার নিজের জন‌্যও এবং আমার কাছের মানুষদের জন‌্যও। যেমন এখন আমি বাবা-মায়ের সঙ্গে অনেক বেশি থাকার চেষ্টা করি। তেমন সহজও চায় তার মা-বাবার সঙ্গে সময়টা কাটাতে। ওরও দু’জনকেই দরকার। আর ও যেমন দিদা-দাদুর সঙ্গে সময় কাটাচ্ছে তেমন আমি যদি আমার ইগোর জন‌্য ওকে ঠাম্মি-ঠাকুরদার কাছে না যেতে দিই, সেটা অন‌্যায় হবে। আর আমি বা রাহুল রিজিড হয়ে সেটা করতে চাইও না। আশা করছি উই ক‌্যান ফিগার আউট থিংস উইথ টাইম।

সহজ যখন ছোট ছিল সেটা একরকম, কিন্তু ও বড় হওয়ার সঙ্গে আপনার মধ্যে কতটা পরিবর্তন হয়েছে?

প্রিয়াঙ্কা: অনেকটাই পরিবর্তন হয়েছে। মানুষ হিসাবে আমি আর আগের মতো থাকিনি। সব বাবা-মায়েরই তাই হয় বোধহয়। দায়িত্ব অনেক বেড়ে যায়। আমি যখন কোনও অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত নিচ্ছি, বা কোনও কাজ করছি কিংবা আমার ফ্রি টাইম কীভাবে কাটাব – সব কিছুই সহজের কথা মাথায় রেখে। সহজ যেমন বড় হচ্ছে, তেমন আমি ওর সঙ্গে সঙ্গে তাল মিলিয়ে বড় হচ্ছি।

[আরও পড়ুন: ৫ কোটি রোজগারের মুরোদ নেই, পারিশ্রমিক ২০ কোটি! বলি তারকাদের কটাক্ষ করণের]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement