shono
Advertisement

‘সবই অনিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল’, লকডাউনের ভয়ংকর অভিজ্ঞতা জানালেন রাজকুমার

'ভিড়' ছবির মুক্তির আগেই সংবাদ প্রতিদিনকে বিস্তারিত জানান বলিউড তারকা।
Posted: 06:38 PM Mar 24, 2023Updated: 06:38 PM Mar 24, 2023

সিনেমা হলে মুক্তি পেয়েছে অনুভব সিনহা পরিচালিত ‘ভিড়’। ছবি ও লকডাউন অভিজ্ঞতা নিয়ে শম্পালী মৌলিকের মুখোমুখি রাজকুমার রাও (Rajkummar Rao)।

Advertisement

আবার কলকাতায় খুব অল্প সময়ের ব‌্যবধানে।
কলকাতায় সবসময় ভাল লাগে। সকালে ওয়াকাথন ছিল, তারপরে বিভিন্ন সাক্ষাৎকার দেওয়া ইত‌্যাদি। শুরুতে যখন আমি আর পত্রলেখা ডেটিং করছিলাম প্রায়ই কলকাতায় আসা হত, কারণ ওর বাড়ি আছে। অনেক রাস্তায় ঘুরেছি আমরা, বিশেষ করে পার্ক স্ট্রিট। কত সুন্দর সব স্মৃতি রয়েছে।

‘এলএসডি’ করেছিলেন ২০১০ সালে। ১২ বছর কাটিয়ে ফেললেন ইন্ডাস্ট্রিতে। ৩০টিরও বেশি ছবি করেছেন। কেরিয়ারগ্রাফ নিয়ে খুশি?
হ্যাঁ, কোনও অভিযোগ নেই। আমি ছোট শহর থেকে এসেছিলাম, অভিনেতা হওয়ার স্বপ্ন ছিল। সেটা যখন সত্যি হল, আমার জন‌্য বড় ব‌্যাপার ছিল। আজকের সময়ে দাঁড়িয়ে কোনও কমপ্লেন নেই, কিছুই বদলাতে চাই না।

শুধু হিন্দি ছবিই নয়, হলিউড ফিল্ম-ও (‘দ‌্য হোয়াইট টাইগার’) করে ফেলেছেন। এরপরের লক্ষ‌্য কী?
ওভাবে টার্গেট রাখি না। আমার লক্ষ‌্য থাকে পরবর্তী ছবি। যেটা এক্সাইটিং স্টোরি থাকবে এবং নিজেকে অভিনেতা হিসাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ থাকবে, চ‌্যালেঞ্জ থাকবে। চিত্রনাট‌্য নির্বাচনের ক্ষেত্রে গাট ফিলিং দিয়ে চলি। আর মেকারকেও ভাল লাগতে হবে। কারণ সিনেমা পরিচালকের ভিশন।

২৪ মার্চ (আজ) আপনার অভিনীত ‘ভিড়’ রিলিজ করবে। প্রত‌্যাশা কতটা?
এই ছবিটা উত্তরসূরিদের জন‌্য। এটা এমন ছবি, যা নিয়ে অনেক বছর পরেও কথা হবে। গল্পের কারণে, মেকিংয়ের জন‌্য। অনুভব স‌্যার যেভাবে ছবিটার জন‌্য ঘাম-রক্ত দিয়েছেন, কী বলব! ওঁর করা আমার অন‌্যতম ফেভারিট ছবি এটা। উনি ‘থাপ্পড়’, ‘আর্টিকল ১৫’, ‘মুলক’-এর মতো ছবি করেছেন। ‘ভিড়’ একদম উপরের সারিতে থাকবে।

অনুভব সিনহা অত‌্যন্ত সংবেদনশীল পরিচালক। কোভিডকাল, লকডাউন, পরিযায়ী শ্রমিকের দুরাবস্থা ছবি জুড়ে। আপনার চরিত্রটা বিশদে বলবেন?
আমার চরিত্রের নাম ‘সূর্যকুমার সিং’। সৎ, সিনসিয়ার পুলিশ অফিসার। গল্পটা শুরু হয়, যখন কোভিড সবে ছড়াতে শুরু করেছে দেশে। মানুষের তখন কোনও ধারণা নেই অসুখটা বা ভাইরাসটা সম্বন্ধে। তখন সূর্যকুমারের ডিউটি চেকপোস্টে। কাজটা সহজ ছিল না, অপ্রত‌্যাশিত সব ঘটনা ঘটছে। সূর্য অতটা অভিজ্ঞ নয়, কিন্তু সব সামলাতে হচ্ছিল। তার শিরদাঁড়া বড্ড সোজা, এটুকুই বলব।

আমাদের সকলের জন‌্যই ওই সময়টা কঠিন ছিল। আপনার ক্ষেত্রে কেমন ছিল?
প্রথম লকডাউনের সময়টা অতটা কঠিন ছিল না। কারণ তার আগে অবধি কাজ করেছিলাম। ফলে অফ পিরিয়ড ছিল। তিন-চারমাস কাজ করিনি। সেটা আমার জন‌্য ক্রিয়েটিভ পিরিয়ড ছিল। দ্বিতীয় লকডাউনে, যখন সেকেন্ড ওয়েভ চলছে, ভয়ংকর ছিল। খুব ডিপ্রেসড হয়ে পড়েছিলাম। যতজনকে পারি সাহায‌্য করার চেষ্টা করেছিলাম। ওটাই তখন একমাত্র ফোকাস ছিল।

‘ভিড়’ ছবিটায় খুব হার্ডহিটিং সংলাপ আছে। যেমন –‘জাস্টিস ইজ অলওয়েজ ইন দ‌্য হ‌্যান্ডস অফ দ্য পাওয়ারফুল। ইফ দ‌্য পাওয়ারলেস সার্ভড জাস্টিস ইট উড বি ডিফারেন্ট।’
অনুভব স‌্যর পরিচিত এমন হার্ডহিটিং কাজের জন‌্য। ওঁর ভয়েস হল সাধারণ মানুষের কণ্ঠস্বর, হ‌্যাভ নটসদের ভয়েস। উনি এটা বোঝেন এবং দারুণ সংলাপ লেখেন। এই প্রথমবার আমি সংলাপ তেমন ইমপ্রোভাইজ করার সুযোগ পাইনি। লেখাটাই এত শক্তিশালী ছিল।

[আরও পড়ুন:শরীরের ব্যথা-বেদনা নিয়েই কাজে ফিরলেন অমিতাভ বচ্চন, কী লিখলেন নিজের ব্লগে?]

‘ভিড়’ বড় বাস্তবছোঁয়া। ছবিতে পরিযায়ী শ্রমিক এবং মধ‌্যবিত্তের ছবিটাও উঠে আসবে। লকডাউন নিয়ে আপনার কী মতামত?
লকডাউন খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তখন ওটাই একমাত্র সলিউশন ছিল। এত অনিশ্চয়তা ছিল। পরিযায়ী শ্রমিকের জন‌্য বিষয়টা খুব কঠিন ছিল। সবাই অনিশ্চিত ছিলাম আমারা ভবিষ‌্যৎ নিয়ে। সবাই নির্দিষ্ট গন্তব্যে বা ঘরে ফেরার চেষ্টায় ছিল। যখন যাতায়াতের কিচ্ছু ছিল না, পায়ে হেঁটেই তারা হাজার কিলোমিটার পাড়ি দিয়েছিল। সবাই সে ছবি দেখেছি আমরা। ইট ওয়াজ ট্রমাটাইজিং, হৃদয়বিদারক। ছবির বীজটা সেখানে। তারপর ওই মানুষগুলোর কী হয়েছিল সেটা নিয়েই ছবিটা।

‘ভিড়’-এর ট্রেলার বিতর্ক তৈরি করেছে। কী মনে করেন, কন্ট্রোভার্সি ছবিকে সাহায‌্য করে?
আই থিঙ্ক অনলি আ ফিল্ম হেল্পস আ ফিল্ম, নাথিং এল্‌স। এবং গল্পটা।

ভূমি পেড়নেকারের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন? আগে আপনারা ‘বধাই দো’-তে কাজ করেছেন।
ভূমি আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু। আমরা কমফর্ট লেভেল শেয়ার করি। আমাদের মানসিক মিল আছে। দু’জনেই গল্পে বিশ্বাস করি। ইট ইজ ফান ওয়ার্কিং উইথ ফ্রেন্ডস। ভূমি ছাড়াও দারুণ সব অভিনেতা রয়েছেন এই ছবিতে– আদিত‌্য শ্রীবাস্তব, আশুতোষ রাণা, পঙ্কজ কাপুর, বীরেন্দ্র সাকসেনা প্রমুখ।

‘ভিড়’-এর পরে কী আসবে আপনার?
‘গান্‌স অ‌্যান্ড গুলাবস’ সিরিজ শেষ করলাম, রাজ অ‌্যান্ড ডিকের পরিচালনায় নেটফ্লিক্সে আসবে। ‘শ্রী’ ছবিটা আসবে, ভিসুয়ালি ইমপেয়ারড শ্রীকান্ত বোল্লার জীবন নিয়ে। যেখানে নামভূমিকায় রয়েছি। খুব চ‌্যালেঞ্জিং এই দৃষ্টিহীন চরিত্রটা। এছাড়া শুটিং করছি ‘মিস্টার অ‌্যান্ড মিসেস মাহি’-র জাহ্নবী কাপুরের সঙ্গে। শরণ শর্মার পরিচালনায়।

আর হনসল মেহতার সঙ্গে কাজ?
আমাদের কথা চলছে, হবে নিশ্চয়ই শিগগির। প্রায় পাঁচ-ছ’টা ছবি আমরা একসঙ্গে করেছি। উই আলসো মিস ইচ আদার। আবার সিরিয়াসলি কথা হচ্ছে।

ভারতের জোড়া অস্কার প্রাপ্তি নিয়ে কী বলবেন?
ইট মেড মি সো প্রাউড। প্রতিবারের মতো লাইভ দেখেছি। আই ওয়াজ রুটিং ফর বোথ দ‌্য অস্কারস। ‘অল দ‌্যাট ব্রিদস’ নিয়েও আশা করেছিলাম কিন্তু দুর্ভাগ‌্যজনক। ‘আরআরআর’-এর এবং গুণীতের জন‌্য খুব খুশি। গুণীত ইজ আ ডিয়ার ফ্রেন্ড। আমার মনে হয়, এটা দেখাল কীভাবে ভারতীয় ছবি আন্তর্জাতিক মঞ্চে পৌঁছতে পারে।

 

আপনি যখন শুরু করেছিলেন কোটি ক্লাবের লড়াইয়ের বিষয়টা ছিল না। এখন এটা বিরাট ব‌্যাপার। আপনি কী মনে করেন?
ইটস গ্রেট। দশ বছর আগে হয়তো ১০০ কোটি ক্লাবের কথা হত, এখন হাজার কোটির কথা হয়। ইটস আ গ্রোথ। কত সংখ‌্যক লোকে ছবি দেখতে হল-এ যাচ্ছে বোঝা যায়। আমি কোনও কোটি ক্লাবের জন‌্য লড়ছি না। ‘স্ত্রী’ করার সময়েও ভাবিনি বক্স অফিসে এতটা আর্থিক সাফল‌্য পাবে। হৃদয় দিয়ে ছবিটা করতে হবে, এটাই মন্ত্র। দর্শকের কাছে ক্লিক করলে, তারাই ক্লাবে জায়গা দেবে, যেখানে মনে করবে (হাসি)।

[আরও পড়ুন: ‘রানিকে প্রথমে নকল চড় মেরেছিলাম!’, ‘মিসেস চ্যাটার্জি ভার্সেস নরওয়ে’ ছবি নিয়ে অকপট অনির্বাণ ]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement