বিদিশা চট্টোপাধ্যায়: সিনেমা হলে চলছে ‘ট্যাংরা ব্লুজ’ (Tangra Blues)। মুখ্য চরিত্রে পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ের (Parambrata Chatterjee) সঙ্গে রয়েছেন মধুমিতা সরকার (Madhumita Sarcar)। নববর্ষে ছবির মুক্তি নিয়ে খুবই এক্সাইটেড মধুমিতা। টেলিফোনে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে বললেন,“’লাভ আজ কাল পরশু’ মুক্তি পেয়েছিল ভ্যালেনটাইন্স ডে’তে, ‘চিনি’ মু্ক্তি পেয়েছিল ক্রিসমাসে। আর এটা মুক্তি পেল পয়লা বৈশাখে। এটা ভেবে আমার খুব মজা লাগছে। শুধু তাই নয়, এই সব বলে আমি নিজেকে পজিটিভ ফিল করাতে চাই।” ট্যাংরার অভ্যন্তরে শুটিং হয়েছে ছবিটির। মধুমিতা জানালেন, তিনি এর আগে চায়না টাউন এক্সপ্লোর করলেও এতটা কাছ থেকে ওখানকার জীবন দেখেননি। “আসলে আমি আমার চারপাশটা অবজার্ভ করতে খুব ভালবাসি। লোকজন কীভাবে কথা বলছে, কীভাবে বিহেভ করছে, সবটাই আমার দারুণ লাগে। স্কুলে এবং যাদবপুরে পড়ার সময় মাঝে মাঝেই আমি বন্ধুদের সঙ্গে হাঁটতে বেরতাম। অদম্য কৌতূহল থেকে বিডন স্ট্রিটের নিষিদ্ধ পাড়াতেও গিয়েছি। আবার চায়না টাউনে খেতে গিয়ে সেই চারপাশও ঘুরে দেখেছি।”
‘ট্যাংরা ব্লুজ’ ছবিতে জয়ীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন মধুমিতা। যে মিউজিক কম্পোজ করে। পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় রয়েছেন ট্যাংরার একটি মিউজিক ব্যান্ড লিডারের চরিত্রে। জয়ী একটু অন্য ধরনের মিউজিক করতে চায়। জয়ীর মিউজিক স্টাইল অনেকেই বুঝতে পারে না। মুম্বইয়ে গিয়ে কাজ করে ব্যর্থ হওয়ার পর কলকাতায় ফিরে আসে। এই ছবিতে জয়ীর চোখ দিয়ে ট্যাংরার অলিগলি, সেখানকার জীবনযাপন এবং মিউজিককে বুঝবে দর্শক। মধুমিতা জানালেন, তিনিও মিউজিক প্রচণ্ড ভালবাসেন। “আমার জীবনে সবচেয়ে প্রিয় তিনটে জিনিস- নিজের কাজ, বেড়াতে যাওয়া এবং মিউজিক। আমি সব ধরনের মিউজিক শুনতে ভালবাসি। হেডফোন মাস্ট। ওটা ছাড়া বাঁচতে পারি না। তাই জয়ীর চরিত্রটাকে চিনতে বা বুঝতে আমার কোনও অসুবিধা হয়নি।”
[আরও পড়ুন: কলকাতার অন্ধকার জীবনকে কীভাবে সুরে বাঁধল ‘ট্যাংরা ব্লুজ’? পড়ুন ফিল্ম রিভিউ]
পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা দারুণ। স্বীকার করে নিলেন মধুমিতা। “অভিনেতা পরমব্রতকে তো সবাই চেনে। আমি নতুন করে কিছু বলার ধৃষ্টতা রাখি না। তবে প্রোডিউসার হিসাবে এত সুন্দরভাবে সবকিছু হ্যান্ডেল করেছে পরমব্রত, ভাবাই যায় না। সহ অভিনেতা হিসাবে খুবই কো-অপারেটিভ এবং হেল্পফুল।” মধুমিতার কেরিয়ারে তিনটে ছবি। প্রতিটা চরিত্রই অন্যটার থেকে আলাদা। খুব সচেতনভাবেই তিনি এই ছবিগুলো বেছে নিয়েছেন। “আমি সবসময় মাথায় রাখার চেষ্টা করি যাতে প্রতিটা চরিত্রই আলাদা হয়। সিরিয়ালে কাজ করার ক্ষেত্রেও এটা মেনটেন করার চেষ্টা করেছি। নিজেকে কখনওই রিপিট করতে চাই না।”
তবে মধুমিতা এও স্বীকার করে নিলেন, মেগা সিরিয়ালের স্টারডম এবং ইমেজ তাঁর পিছু ছাড়েনি। “সিরিয়াল করতে গিয়ে আমি যে স্টারডমটা পেয়ে গিয়েছি সেটার পর ব্যক্তি মধুমিতা কেমন বা অ্যাক্টর মধুমিতা কেমন সেটা নিয়ে দর্শক ভাবতে চায় না। এই ইমেজটা সেট হয়ে আছে। তাই আমি এক ধরনের কাজ ভালবাসলেও দর্শক আমার কাছ থেকে আরেক ধরনের কাজ আশা করছে। এই ইমেজটা ব্রেক করা আমার কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।” রিলেশনশিপ স্টেটাস জানতে চাওয়ায় মধুমিতার মন্তব্য, “কমিটেড টু ওয়ার্ক”। এতটাই কাজে ব্যস্ত তিনি যে, বেড়াতে যাওয়ার প্ল্যান করতে পারছেন না। “তবে ইচ্ছে আছে জুলাই-আগস্ট নাগাদ গোয়ায় একটা ছোট্ট ট্রিপ করব। কারণ ৮-১০ দিনের বড় ট্রিপ করার সময় আমার হাতে নেই”, বললেন মধুমিতা।