সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পরিবারের প্রতি কর্তব্য আর পেশার প্রতি নিষ্ঠা - দুয়ের সামঞ্জস্য বজায় রাখা যে মাঝেমাঝে কতটা কঠিন হয়ে পড়ে, তা আমরা সকলেই কমবেশি বুঝতে পারি। কর্মক্ষেত্রে উচ্চতর জায়গায় প্রতিষ্ঠিত মানুষজনেরও এই অভিজ্ঞতা থাকে বইকী। একসময়ে এমন উভয় সংকটে পড়তে হয়েছিল আজকের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকরকেও। শুক্রবার জেনেভায় প্রবাসী ভারতীয়দের সঙ্গে আলাপচারিতায় সেই অভিজ্ঞতার কথা শোনালেন তিনি। জানালেন, ১৯৮৪ সালে অপহৃত হওয়া বিমানের যাত্রী ছিলেন তাঁর বাবাও! জয়শংকর তখন তরুণ অফিসার। কোনদিক সামলাবেন, তা নিয়ে ভাবনা হলেও শীতল মস্তিষ্কে সমস্ত কর্তব্য সুসম্পন্ন করেছিলেন।
সেটা ১৯৮৪ সালের আগস্ট মাস। নিষিদ্ধ অল ইন্ডিয়া শিখ স্টুডেন্টস ফেডারেশনের সাতজন সদস্য ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্স ফ্লাইট 421 (IC421 ) বিমান অপহরণ করে। যাত্রী ছিলেন ৭৪ জন। দিল্লি থেকে তা শ্রীনগর বিমানবন্দর হয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যাওয়ার দাবি করে অপরহরণকারীরা। বিমানটি লাহোর, করাচি এবং দুবাইয়ে যায়। সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে তৎকালীন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুম যাত্রীদের মুক্তি এবং অপহরণকারীদের আত্মসমর্পণের বিষয়ে আলোচনা করেন। পরে সকলকে মুক্ত করে ভারতের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
এই ঘটনায় পণবন্দিদের মুক্তি নিয়ে তখন তুমুল ব্যস্ততা কেন্দ্রে। নিরাপদ মুক্তি নিয়ে মাথাব্যথা শীর্ষ স্তরে। কীভাবে এর মোকাবিলা হবে, তার জন্য একটি টিম তৈরি করা হয় কেন্দ্রের তরফে। এস জয়শংকর তখন ছিলেন তরুণ IAS অফিসার। স্মৃতির পাতা উলটে তিনি বলেন, ''মাকে ফোন করে বলালম, আজ ফিরতে পারছি না। একটা অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। ততক্ষণে ৩-৪ ঘণ্টা কেটে গিয়েছে। মাকে ফোন করার পরই আমি জানতে পারলাম, ওই বিমানে আমার বাবাও আছেন! তবে সৌভাগ্যবশত, কারও প্রাণহানি হয়নি। আমার কাছে এই ঘটনা বিশেষ গুরুত্বের। কারণ, একদিকে আমি আমার কর্তব্যে বদ্ধপরিকর ছিলাম, অন্যদিকে অপহৃত যাত্রীদের পরিবারেরও আমি একজন, যারা সেসময় যে কোনওরকম সমঝোতার জন্য সরকারকে চাপ দিচ্ছিল।''