আকাশ মিশ্র: বাংলায় যদি কখনও বলিউডের সিংহমের মতো ছবি তৈরি হয়, তাহলে অঙ্কুশ (Ankush Hazra) যে একেবারে পারফেক্ট বাছাই হবে, তা পুজোয় মুক্তি পাওয়া ‘এফআইআর’ (FIR Bengali Movie) দেখলে একেবারে স্পষ্ট। তবে এই ছবিতে রোহিত শেট্টির কায়দায় গাড়ি না উড়লেও, ছবি জুড়ে যে টানটান ব্যাপারটা ছিল তা কিন্তু ছবির আসল রসদ। যার জন্য পরিচালক জয়দীপ মুখোপাধ্যায় ও চিত্রনাট্যকার অনিরুদ্ধ দাশগুপ্তকে প্রশংসা করতে হয়।
‘এফআইআর’ একেবারেই থ্রিলারধর্মী একটি ছবি। গল্পে সাসপেন্স একেবারে ঠাসা। তাই ছবির গল্প গোটাটা বলে দেওয়া পাপের সমান। এটুকু বলা যায়, রঘুনাথপুর গ্রামে পর পর খুন। আর সেই খুনের তদন্তের ভার পুলিশ অফিসার অভ্রজিতের উপর (অঙ্কুশ)। রঘুনাথপুরে পৌঁছে তাঁর সঙ্গী হয় নরেন ওরফে বনি সেনগুপ্ত। তবে খুনের তদন্ত করতে এসে অভ্রজিতের ও নরেনের সামনে আসে নতুন নতুন রহস্য। ব্যস, এই পর্যন্তই থাক। কারণ বাকিটার জন্য ছবিটা দেখতেই হবে।
‘এফআইআর’ ছবির সবচেয়ে ভাল দিক হল চিত্রনাট্যের শক্তপোক্ত বুনোট। ছবির শেষ পর্যন্ত রহস্য একেবারে ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছেন পরিচালক। যা কিনা যে কোনও থ্রিলার বা সাসপেন্সধর্মী ছবির ক্ষেত্রে অত্যন্ত জরুরী। এই ছবির আরেকটি বিষয়ও প্রশংসা করার মতো। একটি থ্রিলার ছবির ক্ষেত্রে গল্পের শুরু অনেকগুলি চরিত্র নিয়ে আসা এবং তারপর ছবি এগিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চরিত্রের মলাট খুলে দেওয়া। এতে একটাই উপকার দর্শকের মগজেও এক গল্প তৈরি হতে থাকে। আর সেই মগজের গল্পের সঙ্গে যদি ছবির চিত্রনাট্য মিল না খায়, তাহলেই আসল চমক ও পরিচালকের কেল্লাফতে। এফআইআর ছবির ক্ষেত্রেও এমনটি ঘটে। যেখানে মগজে তৈরি হওয়া গল্পের সঙ্গে মিল খায় না ‘এফআইআর’।
[আরও পড়ুন: Shiddat Movie Review: চেষ্টার ত্রুটি ছিল না, কিন্তু সব ছবি কি আর DDLJ হয়?]
অভিনয়ের দিক থেকে অঙ্কুশ বেশ ভাল। অঙ্কুশকে টলিউডের ‘সিংহম’ বললে খুব একটা ভুল বলা হবে না। অন্যদিকে বনি সেনগুপ্তর কমেডি টাইমিং বেশ নজর কাড়ে। ঋতাভরীও বেশ ভাল। বার ডান্সার শিউলির চরিত্রে একেবারে মানানসই ফলক রশিদ রায়। শান্তিলাল মুখোপাধ্য়ায়ের অভিনয় নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। খলনায়কের চরিত্রে তিনি একেবারে পারফেক্ট।
সব ভালর মধ্য়ে ‘এফআইআর’ ছবির একটাই বাজে দিক। অকারণ গান। যা কিনা থ্রিলারের গতিকে শ্লথ করে। পুজোয় নিশ্চিন্তে দেখে ফেলুন অঙ্কুশের এই ছবি। খারাপ লাগবে না। আর হ্য়াঁ, ছবির শেষে একটা চমক রয়েছে!