সৌরভ মাজি, বর্ধমান: আবেদন না করলেও শতাধিক জনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট (Bank Account) খোলা হয় বলে অভিযোগ উঠেছিল প্রায় সাত মাস আগে। অজান্তেই বেসরকারি ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খোলার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা ওই বেসরকারি ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ জানান। প্রশাসনিক স্তরের বিভিন্ন মহলেও অভিযোগ করেছিলেন। সুরাহা কিছুই হয়নি। পূর্ব বর্ধমানের (East Burdwan) খণ্ডঘোষ থানার কালনা গ্রামের এই ঘটনায় শোরগোল পড়েছিল। ফের ওই গ্রামের কয়েকজনের এটিএম কার্ড পাঠানো হয়েছে ওই বেসরকারি ব্যাঙ্ক থেকে। প্রাপকদের দাবি, তাঁদের অজান্তে অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। তাই এই এটিএম বা ডেবিট কার্ড পাঠানো হয়েছে। যা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। সহায়ক মূল্যে ধান কেনায় দুর্নীতিতে এই ভুয়া অ্যাকাউন্টের সম্পর্ক থাকতে পারে বলে অভিযোগ তুলেছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। ঘটনার সঠিক তদন্ত দাবি করেছে শাসক শিবির।
কালনা গ্রামের শতাধিক বাসিন্দা গত মে মাসে ব্যাঙ্ক আকাউন্ট সংক্রান্ত নথি হাতে পান পোস্ট অফিসের মাধ্যমে। এটিএম কার্ডও (ATM Card) পান অনেকে। অবাক হয়ে যান নবকুমার বাগদী, তপন বাগদী-সহ বেশ কয়েকজন গ্রামবাসী। গত ৩০ মে তাঁরা এই বিষয়ে ওই বেসরকারি ব্যাঙ্কের বর্ধমান শাখায় লিখিতভাবে অভিযোগ জানান। সেই সময় পুলিশ সুপার-সহ (SP) প্রশাসনিক স্তরেও ওই অভিযোগের প্রতিলিপি জমা দেন তাঁরা। তার পর আর যে কিছুই হয়নি তা বোঝা যায় দিন কয়েক আগে। ওই গ্রামের বাসিন্দাদের কাছে ফের এটিএম কার্ড আসে। যাঁরা অ্যাকাউন্টই খোলেননি। গ্রামবাসীদের দাবি, তাঁরা সকলেই দিন আনা দিন খাওয়া পরিবারের সদস্য। বেসরকারি ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খোলার মতো সামর্থ্যও তাঁদের নেই।
[আরও পড়ুন: টেলিফোন বুথ থেকে ৭ কলেজের মালিক, রকেট গতিতে উত্থান ডোমকলের বিধায়ক জাফিকুলের]
গ্রামবাসী তপন বাগদী শুক্রবার বলেন, “আমরা অ্যাকাউন্টই খুলিনি। তা সত্ত্বেও কীভাবে অ্যাকাউন্ট হয়ে গিয়েছে বুঝতে পারছি না। কয়েকমাস আগে আমরা অভিযোগও জানিয়েছিলাম সব জায়গায়। কিছুই হয়নি। না হলে আবার নতুন করে অনেকের কাছে এটিএম কার্ড আসে কীভাবে।” নবকুমার বাগদীর পরিবারের সদস্যরাও একই দাবি করেছেন।
[আরও পড়ুন: বাতিল হবে কি ২০০০ টাকার নোট? এখনও বাজারে প্রায় ১০ হাজার কোটির মুদ্রা, মুখ খুলল RBI]
এই ঘটনার পিছনে সহায়ক মূল্যে ধান কেনায় দুর্নীতির যোগ থাকতে পারে বলে অভিযোগ তুলেছে বিজেপি (BJP)। দলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র বলেন, “এই সব ভুয়া অ্যাকাউন্ট খুলে ব্যাপক দুর্নীতি করা হয়েছে সহায়ক মূল্যে ধান কেনায়। আমরা খবর পেয়েছি এই সব অ্যাকাউন্টে বিশাল অঙ্কের লেনদেন করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সংস্থাকে দিয়ে তদন্ত করালেই সব ধরা পড়বে।” তৃণমূলের (TMC) খণ্ডঘোষ ব্লকের সভাপতি অপার্থিব ইসলাম দাবি করেন, বিরোধীরা সব কিছুতেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে। পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি শ্যামাপ্রসন্ন লোহার বলেন, “কয়েকমাস আগে বিষয়টি সামনে এসেছিল। অভিযোগের তদন্ত করে দেখছে পুলিশ প্রশাসন।”
দেখুন ভিডিও: