সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: পুলিশ সুপারের নকল ফেসবুক আইডি তৈরি করে প্রতারণার ঘটনায় আন্ত:রাজ্য চক্রের যোগ। অবশেষে দুই যুবককে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফেসবুক আইডি নকল করে রাজ্য জুড়ে প্রতারণার জাল বিছিয়ে ছিল একটি চক্র। এছাড়া রাজস্থান ও মধ্যপ্রদেশেও এই চক্র তাদের কাজকর্ম শুরু করে। সেই চক্রের দুই সদস্যকে উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়া থেকে শনিবার রাতে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। রবিবার সকালে ধৃত ওই দুই যুবককে পুরুলিয়া জেলা পুলিশের বেলগুমা পুলিশ লাইনে নিয়ে এসে এই অপরাধ সংক্রান্ত নানা তথ্য পুরুলিয়া জেলা পুলিশের তরফে জানানো হয়।
ধৃত যুবক সান্টু মাঝি, ঝাড়খণ্ডের গুমলার তেলগাঁওতে তার আদি বাড়ি। বর্তমানে উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়াতে থাকত। সে পেশায় মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ। এছাড়া তার সঙ্গী রাহুল ঘটকের বাড়ি হাবড়া পুরসভার ২১ নম্বর ওয়ার্ডে। সে আইটিআই ছাত্র। পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বেশ কয়েকদিন যাবৎ আমার নামে নকল ফেসবুক আইডি করে একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে প্রতারণা করছিল। মেসেঞ্জারে বার্তা পাঠাচ্ছিল। এই ঘটনায় মোট দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। একটি চক্র কাজ করছে। ধৃতদের কাছ থেকে সমস্ত কিছু জানার চেষ্টা চলছে।”
[আরও পড়ুন: জগদ্ধাত্রী পুজোর আনন্দ মাটি করবে বৃষ্টি? জেনে নিন কী বলছে হাওয়া অফিস]
পুরুলিয়া জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, যে নম্বরগুলি ব্যবহার করে ফেসবুক আইডি খুলেছিল তার অধিকাংশ কিছুই নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। মেসেঞ্জারে মেসেজ পাঠিয়ে প্রতারণা সংক্রান্ত লেনদেনও খতিয়ে দেখছে পুরুলিয়া জেলা পুলিশl পুলিশ সুপারের ওই নকল ফেসবুক আইডি থেকে একাধিককে মেসেঞ্জারে বার্তা পাঠিয়ে জানানো হচ্ছে, সন্তোষ কুমার নামে তার এক সিআরপিএফ বন্ধুর বদলি হয়ে যাচ্ছে। ফলে তার সদ্য কেনা গৃহস্থালির বহু জিনিসপত্র স্বল্প দামে বিক্রি করে দিতে চান। ইচ্ছুক থাকলে যোগাযোগ করুন। মেসেজের প্রেক্ষিতেই অর্থাৎ পুলিশ সুপারের ওই আবেদন শুনে কোন কিছু না জেনেই মানুষজন ১০ হাজার, ২০ হাজার, ২৫ হাজার টাকা পাঠিয়ে দেন। অথচ ওই টাকা পাঠিয়ে দেওয়ার পরেও যারা টাকা পাঠাচ্ছেন তারা পুলিশ সুপারকে কিছু বলতেও পারছেন না।
এই বিষয়গুলি পরবর্তীকালে জানতে পারেন পুলিশ সুপার। প্রথমে দুটি নকল ফেসবুক আইডি হয়েছিল। তার প্রেক্ষিতে একটি সুনির্দিষ্ট মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। এই তদন্ত চলাকালীন একটি নকল ফেসবুক অ্যাকাউন্ট সামনে আসে। পুলিশ সুপার জানান, “সন্তোষ নামে আমার কোন সিআরপিএফ বন্ধু নেই। এরকম যদি কোন মেসেজ কারো কাছে আসে তাহলে তা এড়িয়ে যান। তাছাড়া এই ধরনের অপরাধের বিষয়ে সতর্ক হোন। সচেতন থাকুন। কোনও সন্দেহ হলে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।” মোট তিনটি নকল ফেসবুক আইডিতে পুলিশ সুপারের নাম, পদবি ও ছবি ব্যবহার করে এই কাজ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ।