বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: আলু, টম্যাটোতে লোকসানের মুখে পড়েছিলেন কৃষকরা। এবার উচ্ছে চাষে ঘুরে দাঁড়ালেন উত্তরের সবজি চাষিদের একাংশ। মাঠ থেকেই খেতের ফসল পাড়ি দিচ্ছে রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ, দিল্লিতে। লক্ষ্মীলাভে খুশি চাষিরা। এতদিন কৃষিদপ্তরের তরফে প্রচার ছিল, যে এলাকায় হাতির উপদ্রব বেশি সেখানে উচ্ছের চাষ করুন। চাষিদের বেশিরভাগ ওই পরামর্শে আমল দেয়নি। ধান কেটে ঘরে তোলার পর উলটে অনেকেই আলু, ভুট্টা, টম্যাটো চাষে ঝুঁকেছেন। বাজারে চাহিদা কমতে এবার আলু ও টম্যাটো চাষিদের মাথায় হাত পাড়েছে। যে চাষিরা কৃষিদপ্তরের পরামর্শ মেনে ধান কেটে ঘরে তোলার পর উচ্ছে চাষ করেছেন, তাঁরা লক্ষ্মীলাভে রীতিমতো উচ্ছ্বসিত।
খেতের ফসল বিক্রি করতে তাঁদের পাইকারি বাজারে ছুটতে হচ্ছে না। ভিন রাজ্যের ক্রেতারা সটান হাজির হচ্ছেন মাঠে। নির্দিষ্ট মাপের উচ্ছে ২০-২২ টাকা কেজি দামে কিনে যাচ্ছে তাঁরা। জলপাইগুড়ির রামশাই কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের কো-অর্ডিনেটর বিপ্লব দাস বলেন, ‘‘যে এলাকায় হাতির উপদ্রব বেশি, সেখানে অনেকদিন থেকেই ধান ঘরে তোলার পর উচ্ছে চাষের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু অনেকেই গুরুত্ব দেয়নি। যারা দিয়েছেন এবার তাঁরা ভালো লাভ করছেন।’’ তিনি জানান, উত্তরের জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার জেলা এবং শিলিগুড়ির গ্রামীণ এলাকায় বিক্ষিপ্তভাবে উচ্ছে চাষ হচ্ছে।
কৃষি গবেষকদের বক্তব্য যে অমূলক নয়, সেটা উচ্ছে চাষিদের কথাতেই স্পষ্ট। যেমন, ময়নাগুড়ির উচ্ছে চাষি আলিয়ার রহমান জানান, বিহার, ওড়িশা, উত্তরপ্রদেশের ক্রেতারা সোজা ফসলের মাঠে পৌঁছে যাচ্ছে। সপ্তাহে তিনদিন আসছে। পছন্দ হলে ২০ টাকা থেকে ২২ টাকা কেজি দাম দিচ্ছে। আলিয়ার বলেন, ‘‘আড়াই বিঘা জমিতে উচ্ছে চাষ করেছি। খরচ হয়েছে প্রায় ১৫ হাজার টাকা। ইতিমধ্যে ৪০ হাজার টাকার উচ্ছে বিক্রি করেছেন।’’ শিলিগুড়ির নকশালবাড়ি এলাকার উচ্ছে চাষি নিবারণ দাস বলেন, "ধান কেটে ঘরে তোলার পরই সহজে উচ্ছে চাষ হচ্ছে। ভিন রাজ্যের আয়ুর্বেদিক ওষুধ কোম্পানিগুলো পছন্দের উচ্ছে খুঁজে নিয়ে যাচ্ছে।"