নিজস্ব সংবাদদাতা, খাতড়া: সেচের জল না মেলায় বোরো ধানের চাষ হয়নি। বোরোর বিকল্প হিসাবে চাষ করা হচ্ছে তরমুজ। সমতল জমি শুধু নয়, ডাঙা জমিতেও ব্যাপকভাবে তরমুজের চাষ করা হয়েছে। এবার আবহাওয়া ভাল থাকায় ফলনও ভাল হয়েছে। মিলছে দামও। বোরো ধানের বিকল্প হিসাবে তরমুজ চাষ করে দক্ষিণ বাঁকুড়ার বিস্তীর্ণ এলাকায় আয়ের নতুন দিশা দেখতে পাচ্ছেন চাষিরা। রোজার মরসুমে বাজারে চাহিদা থাকায় ভাল দামে বিক্রি হচ্ছে তরমুজ। ফলে দক্ষিণ বাঁকুড়ার চাষিদের মুখে হাসি ফুটেছে।

দক্ষিণ বাঁকুড়ার খাতড়া, রানিবাঁধ, রাইপুর, সারেঙ্গা, সিমলাপাল, ইন্দপুর, হিড়বাঁধ, তালডাংরায় কংসাবতীর সেচের জলের সুবিধা পাওয়া যায়। রবি চাষের জন্য সামান্য পরিমাণে জল ছাড়া হয়েছে। তবে কংসাবতীর মুকুটমণিপুর জলাধার থেকে এবার বোরো চাষের জন্য জল ছাড়া হয়নি। খাতড়া মহকুমা এলাকায় সমতল জমির পাশাপাশি অনুর্বর ডাঙা জমিও রয়েছে। এসব জমিতে বৃষ্টির জলের উপরে নির্ভরশীল ধানচাষ। অনেক জায়গায় সেচের জলের অভাবে এলাকার কৃষকরা বোরো ধানের চাষও করেন না।
এই অবস্থায় কৃষিদপ্তরের তরফে ধানের বিকল্প হিসাবে তরমুজ চাষের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কৃষিদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, দক্ষিণ বাঁকুড়ার উঁচু জমিতেও এখন উন্নত মানের তরমুজের চাষ হচ্ছে। গত কয়েক বছর ধরেই এই তরমুজের চাষ হচ্ছে। ফলনও ভালই হয়েছে। স্থানীয় চাষিরা জানান, এখান থেকে স্থানীয় বাজারের পাশাপাশি দুর্গাপুর, বর্ধমানেও এই তরমুজ এখন রপ্তানি হচ্ছে।
কৃষিদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বছর খাতড়ার বিভিন্ন এলাকায় প্রায় চার হাজার হেক্টর জমিতে তরমুজের চাষ হয়েছে। মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকেই অনেক জমিতেই তরমুজ পেকে
গিয়েছে। সেই তরমুজ ব্যাপকভাবে বাজারে রপ্তানিও হচ্ছে।
রাইপুর ব্লকের মালশোল গ্রামের পেশায় চাষি নীহার দাস, জয়দেব দাসরা বললেন, "এবার ১ হাজার ৫০০ থেকে ১,৬০০ টাকা কুইন্টাল দরে তরমুজ বিক্রি হচ্ছে। খরচ বাঁচিয়েও কিছু টাকা লাভ থাকবে। বোরো ধান চাষের বিকল্প হিসাবে তরমুজের চাষ করে আমরা উপকৃত হয়েছি।" খাতড়ার মহকুমা কৃষি আধিকারিক শুভেন্দু হাজরার কথায়, "রানিবাঁধ, খাতড়া, রাইপুর, ইন্দপুর, হিড়বাঁধ ব্লক এলাকার বেশ কিছু জমিতে এখন চাষিরা তরমুজের চাষ করছেন। বোরোর বিকল্প হিসাবে তরমুজ চাষ করে চাষিরা লাভবান হচ্ছেন। এবার আবহাওয়া ভাল থাকায় ফলনও ভালই হয়েছে। তরমুজের সাইজ ঠিক থাকায় চাষিরা এখন ভালো দাম পাচ্ছেন।"