দীপঙ্কর মণ্ডল: কেন্দ্রের কৃষি আইন (Farming Law) বাতিলের দাবিতে দেশজুড়ে চলছে আন্দোলন। শেষবার ক্ষমতায় থাকা বামফ্রন্টের স্লোগান ছিল ‘কৃষি আমাদের ভিত্তি’। সেই সুর শোনা গেল রাজ্যের নতুন স্কুলপাঠ্যে। বিধানসভা ভোটের বছরে স্কুলপড়ুয়াদের কৃষির সাতকাহন বিস্তারিতভাবে পড়ানো হবে।
পঞ্চম শ্রেণির স্বাস্থ্য ও শারীরশিক্ষা বইয়ে ‘কৃষিকাজ’-এর উপর আলাদা চ্যাপ্টার রাখা হয়েছে। খেতে ধানের বীজ বপন থেকে গোলায় ওঠা পর্যন্ত ধাপে ধাপে সমস্ত প্রক্রিয়া এবার ছবি-সহ রাখা হয়েছে স্কুলপাঠ্যে। জোড়া বলদের লাঙল করা, ধানগাছ কাটা, গরুর গাড়িতে তা তুলে নিয়ে যাওয়া, পাটায় ধান (Paddy) ঝাড়ানো। এমনকী, ঢেঁকিতে ধান ভানার কথাও হবে পাঠ্যের বিষয়। বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিকাশচন্দ্র সিংহ মহাপাত্র এ প্রসঙ্গে বলেন, “করোনা কালে সব কিছু বন্ধ থাকলেও কৃষকরা মাঠে চাষ করেছেন। তার ফলেই দেশবাসীর সমস্যা হয়নি। কৃষিকাজ স্কুলপাঠ্যে এতদিন উপেক্ষিত ছিল। রাজ্যের স্কুলপড়ুয়াদের তা শেখানোর উদ্যোগ খুব ভাল সিদ্ধান্ত।”
[আরও পড়ুন: ‘দাক্ষিণাত্যের রুই’ মাছের সফল বাণিজ্যিক চাষ, তাক লাগাল হলদিয়া]
কৃষিকাজ বিষয়টিকে অনুকরণজাতীয় খেলা হিসাবেও স্কুলে শেখানো হবে। বীজ রোপন, ধান কাটা, ধান ঝাড়ানো বা ঢেঁকিতে ধান ভানার নকল করে খেলোধুলোও করবে ছাত্রছাত্রীরা। স্কুলশিক্ষা দপ্তরের এক কর্তা জানিয়েছেন, “কৃষিকাজ শেখানোর বিষয়টি পাঠ্যে রাখার প্রস্তাব দিয়েছিল স্কুলশিক্ষা বিশেষজ্ঞ কমিটি। সেই প্রস্তাব গ্রহণ করে সরকার।” কমিটির এক সদস্য জানিয়েছেন, “কৃষিকাজের বিষয়ে গ্রামের পড়ুয়ারা জানে। কিন্তু শহুরে ছাত্রছাত্রীদের এই বিষয়ে ধারণা নেই। বাড়িতে যে ভাত খাওয়া হয়, কীভাবে উৎপন্ন হয় তা জানা জরুরি।”
দেশজুড়ে ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে করোনা প্রতিষেধক দেওয়ার কাজ। কয়েকটি রাজ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললেও করোনা সতর্কতায় বাংলার স্কুলগুলি এখনও বন্ধ। টানা দশ মাস ক্লাসে গিয়ে পড়াশোনা করতে পারছে না পড়ুয়ারা। যে কারণে এই ভোগান্তি, সেই কোভিড-১৯ ভাইরাসের কথাও ঢুকছে সিলেবাসে। থাকছে পরিচ্ছন্নতার কথাও। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, স্কুলে স্যানিটাইজেশনের কাজ চলছে। স্বাস্থ্যবিধি বজায় রেখে স্কুল খোলার বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। করোনা সংক্রমণ রুখতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিকে বিশেষ নির্দেশিকা পাঠাচ্ছে সরকার। নির্দেশিকায় বেশ কয়েক দফা পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সাবান দিয়ে বারবার হাত ধোয়া। কথা বলার সময় দূরত্ব বজায় রাখা। করমর্দন এবং চুম্বন এড়িয়ে চলা। জ্বর-সর্দি-কাশি হলে কোভিড পরীক্ষা করানো এবং চিকিৎসকের কাছে যাওয়া। হাঁচি-কাশির সময় মুখ-নাক ঢেকে রাখার কথা বলেছে স্কুলশিক্ষা দপ্তর।