রুক্মিণী মৈত্র, টলিউডে তাঁর ছবির সংখ্যা মাত্র চারটে। এতেই বাজিমাত করেছেন। প্রত্যেকটা চরিত্রে নিজেকে ভেঙেছেন। কম সময়ে দর্শকের প্রশংসাও কুড়িয়েছেন। আজ তাঁর চতুর্থ ছবি ‘কিডন্যাপ’ মুক্তি পেল। কতটা টেনশনে রয়েছেন তিনি? পাশাপাশি পরবর্তী ছবি ‘পাসওয়ার্ড‘-এর শুট কেমন চলছে, যাবতীয় হাঁড়ির খবর নিয়ে অকপট রুক্মিণী মৈত্র। কথা বললেন সন্দীপ্তা ভঞ্জ
আজ প্রথম দিন, কতটা টেনশন হচ্ছে ‘কিডন্যাপ’ নিয়ে?
– প্রথম ছবি মুক্তির দিন ঠিক যতটা টেনশন হয়েছিল ততটাই। সোমবার ভোর চারটে থেকে জ্বর। এতদিন ‘পাসওয়ার্ড’-এর শুট, একদিকে ‘কিডন্যাপ’-এর প্রোমোশন চলছিল। পুরো শরীরে ব্যথা। টেনশনে রাতের ঘুম উড়ে গিয়েছে। ওদিকে দু’দিন থেকে মা চেঁচিয়ে যাচ্ছেন “একটু ঘুমোও, ঘুমোও”। টানা ৩০-৩৬ ঘণ্টা জেগে রয়েছি। আজ রাত ছাড়া ঘুম আসবে না।
‘কিডন্যাপ’-এ মেঘনা চট্টোপাধ্যায়ের চরিত্রটা করার পর পেশা হিসেবে সাংবাদিকতা কতটা চ্যালেঞ্জিং বলে মনে হয়?
– একটাই কথা বলব, দম থাকা চাই বস! কতটা ঝুঁকি নিতে হয়। একটা ব্রেকিং নিউজ দেওয়ার জন্য কীভাবে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়। আন্তর্জাতিক হোক কিংবা জাতীয় স্তরে, সাংবাদিকদের খুন-অপহরণের ঘটনা প্রায়ই খবরের শিরোনামে থাকে। সবাই কিন্তু ভুলেও যাই কী আশ্চর্যজনকভাবে! অথচ এরাই দিন-রাত এক করে সর্বক্ষণ খবরের পিছনে ছুটে যাচ্ছে সাধারণ মানুষের কাছে খবর পৌঁছে দেওয়ার জন্য। সাংবাদিকতাও যে একটা ‘থ্যাঙ্কলেস জব’ তা মেঘনার চরিত্রে অভিনয় করতে গিয়েই বুঝলাম। সাংবাদিকদের প্রতি আমার শ্রদ্ধা কয়েক গুন বেড়ে গিয়েছে।
তোমার তো রীতিমতো পায়ের তলায় সরষে ফুল, এই ‘পাসওয়ার্ড’-এর সেটে স্টান্টস তো এসে আবার ‘কিডন্যাপ’-এর প্রোমোশন…
– শিখে গিয়েছি। ১৩ বছর বয়স থেকে মডেলিং করার পাশাপাশি পড়াশোনা করেছি। ভাল রেজাল্টও করতাম স্কুলে। হাজারও ব্যস্ততার মাঝে পরিবারকে সময় দেওয়া, বন্ধুত্বগুলোকেও টিকিয়ে রেখেছি। তখন থেকেই পারতাম। প্রকাশ পায়নি। তোমার প্রশ্নের পর আবার বুঝতে পারলাম যে সত্যিই তো সবটা সামলাচ্ছি।
‘কিডন্যাপ’-এর বক্স অফিস স্কোর নিয়ে কী মনে হচ্ছে?
– দর্শক খুব স্মার্ট এখন। কমার্শিয়ালের পাশাপাশি যথাযথ কন্টেন্ট না হলে হলমুখোই হবেন না তাঁরা। হিউম্যান ট্রাফিকিং বা মানব পাচারের মতো একটা গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু নিয়ে তৈরি হয়েছে ‘কিডন্যাপ’, যা আজকের জগতে খুবই প্রাসঙ্গিক, দর্শকরা অবশ্যই দেখবেন।
মেঘনার চরিত্র কতটা মনে ধরবে দর্শকদের?
– আমাকে সাংবাদিক মেঘনা চট্টোপাধ্যায় বানানোর নেপথ্যে যে মানুষটি, তিনি এন কে সলিল। ‘কিডন্যাপ’-এর চিত্রনাট্যকার। চ্যাম্প, কবীর, ককপিট দেখে আমার চরিত্রটা লিখেছেন। প্রথমটায় মেঘনা চরিত্রটা একটা সাধারণ মেয়ের ছিল। কিন্তু উনি আমায় রীতিমতো রাজি করান। রিসার্চ করার সময় জানলাম, সাদা দেওয়ালে কালো রং দিয়ে একটা মেয়ের ছবির পাশে হ্যাশট্যাগ দিয়ে সংখ্যা লেখা থাকে। অনেকেই হয়তো জানেন না, ওটা আমাদের রাজ্যে নিখোঁজ মেয়েদের পরিসংখ্যান। যেটা প্রত্যেক মাসে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। এটা রীতিমতো চিন্তার বিষয়।
ভিলেন থেকে সাংবাদিক… চারটে ছবিতেই আলাদা আলাদা রকম চরিত্রে দেখা গিয়েছে তোমাকে..
– প্রথম ছবি চ্যাম্প-এ ডিগ্ল্যামারাস একটা চরিত্র করে ঝুঁকি নিয়েছিলাম। তারপরেই ককপিট-এ একটা মদ্যাসক্ত এয়ার হোস্টেসের চরিত্রে। কবীর-এ সন্ত্রাসবাদীর চরিত্রে অভিনয় করলাম। হ্যাঁ, নিজেকে ভেঙেছি তো বটেই। সেরকম কন্টেন্ট না হলে কিংবা আমার চরিত্রে সেরকম টুইস্ট না থাকলে, সেই ছবি আমি কোনওদিনই করব না। শুধু নাচ-গান করা আমার না-পসন্দ। তবে, পরিবারের লোকজনরা বলে এবার একটু বিশ্রাম নাও। অনেক কঠিন কঠিন চরিত্রে অভিনয় করে ফেলেছ।
মডেলিং না অভিনয়?
– মডেলিং আমার প্রেম, কিন্তু বিয়েটা অভিনয়ের সঙ্গে করে ফেলেছি মনে হচ্ছে (হাসি)।
সবার কৌতূহল রুক্মিণী কি শুধু দেবের নায়িকা হয়েই থাকবে?
– এ বাবা, তা কেন! জিৎদার প্রোডাকশনের দুটো ছবি ‘শেষ থেকে শুরু’ এবং ‘বাচ্চা শ্বশুর’-এ কাজ করার কথা ছিল। শিডিউল মেলেনি তাই করা হয়ে ওঠেনি। আমি দুঃখিত এর জন্যে। তবে, দর্শক দেব-রুক্মিণী জুটি পছন্দ করেন।
দেব ছাড়া আর কার নায়িকা হিসেবে নিজেকে দেখতে চাও?
– বুম্বাদা, এক্ষেত্রে আমার কোনও সংলাপ না থাকলেও চলবে! তবে পরমব্রত, জিৎ, যিশু সেনগুপ্ত এদের নায়িকা হওয়ার জন্যও এক পা বাড়িয়ে রেখেছি।
সেটে দেব নাকি খুব কেয়ারিং তোমাকে নিয়ে?
– আজ্ঞে! দেব বিশেষ করে আমার খাওয়ার ব্যাপারে কেয়ারিং। ও জানে যে সেটে একটু কাবাব, তন্দুরি চিকেন, একটু কেক না হলে আমার চলবে না। তাই বিশেষ করে এটার খুব খেয়াল রাখে।
ইনস্টাগ্রামে “আই লাভ ইউ দেব” লিখে মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজিটা তো দারুণ ছিল..
– ধন্যবাদ! তার দিন তিনেক পরেই তো জানালাম আসল কারণটা। ভাল হল না!
The post ‘কিডন্যাপ’ মুক্তির আগে টেনশনে নাকি রাতে ঘুম হয়নি রুক্মিণীর! appeared first on Sangbad Pratidin.