বাবুল হক, মালদহ: আইসিডিএস (ICDS) প্রকল্পে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী হিসাবে চাকরি দেওয়ার নামে মোটা টাকা প্রতারণার অভিযোগ। কাঠগড়ায় মালদহ জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা মালতিপুরের বিধায়ক আবদুর রহিম বক্সি। গাজোলের জনাকয়েক মহিলা আবদুর রহিম বক্সির নামে মালদহের জেলাশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছিলেন। এই ঘটনায় জেলার রাজনৈতিক মহলে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। জোর চর্চা শুরু হয়েছে ফেসবুক-সহ সোশ্যাল মিডিয়ায়।
মালদহের (Malda) গাজোলের উত্তর আলিনগরের বাসিন্দা ফারিদা খাতুন-সহ মোট পাঁচজন মহিলার সই করা একটি অভিযোগপত্র মঙ্গলবার মালদহের জেলাশাসকের দপ্তরে জমা পড়ে। সেই অভিযোগপত্রে সরাসরি আবদুর রহিম বক্সির বিরুদ্ধে আইসিডিএস প্রকল্পে চাকরি দেওয়ার নামে মোটা টাকা নেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ওই মহিলাদের অভিযোগ, আবদুর রহিম বক্সি তখন আরএসপি দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীর চাকরি দেওয়ার কথা বলে তিনি মোটা টাকা নেন। পরবর্তীতে যে নিয়োগপত্রগুলি পাঠানো হয়েছিল, সেগুলি ‘ভুয়ো’ হওয়ায় তাঁরা কাজে যোগ দিতে পারেননি। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের আধিকারিকরা তাঁদের নিয়োগপত্রগুলিকে ভুয়ো বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন। এরপর ওই মহিলারা টাকা ফেরত চেয়ে রহিম বক্সির দ্বারস্থ হন। কিন্তু এযাবৎ তাঁরা টাকা ফেরত পাননি বলে অভিযোগ।
[আরও পড়ুন: মধ্যযুগীয় বর্বরতা! বাইরে কাজে যাওয়ায় নেড়া করা হল বধূকে, লজ্জায় গ্রামছাড়া নির্যাতিতা]
এদিন গাজোলের উত্তর আলিনগরের বাসিন্দা ফারিদা খাতুন বলেন, “বছর তিনেক আগে আমরা চাকরির জন্য আড়াই লক্ষ টাকা করে দিয়েছি। তারপর আরএসপি ছেড়ে রহিম বক্সি তৃণমূলে যোগ দেন। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে আমাদের নিয়োগপত্র দেওয়া হয়। কিন্তু অফিসাররা জানিয়ে দেন, এগুলি নকল। এরপর আমাদেরকে টাকা ফেরত দিতে চেয়েছিল। এ-ও বলেছিল, এই সরকারের আমলে চাকরি করে দেব। এভাবে আজ-কাল করে যাচ্ছে। জেলাশাসকের কাছে অভিযোগ দিয়ে এসেছি। আমরা টাকা ফেরত চাই।” এদিন সকাল থেকেই ফেসবুক-সহ সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায় সেই অভিযোগপত্রের ফটোকপি।
এবিষয়ে আবদুর রহিম বক্সি বলেন, “মিথ্যা অভিযোগ। ওই মহিলাদের আমি চিনি না। ষড়যন্ত্র করে আমাকে হেনস্তা করার চেষ্টা করছে।” ষড়যন্ত্র যাঁরা করছেন তাঁরা কি তৃণমূলের, না বিরোধী দলের? এমন প্রশ্নে আবদুর রহিম বক্সি বলেন, “আমি যা বলার বলে দিয়েছি, এর চেয়ে বেশি কিছু বলব না।” মালদহের জেলাশাসক নীতিন সিংহানিয়া বিষয়টি নিয়ে কিছু জানাতে চাননি। জেলা প্রশাসনের একটি সূত্র জানিয়েছে, “এই ধরনের একটি অভিযোগ এসেছে। তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক।” এই ঘটনায় চরম অসস্তিতে পড়েছে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।