বাবুল হক, মালদহ: বিস্ফোরণস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করতে গিয়ে মালদহের (Maldah) সুজাপুরে বিপদের মুখে খোদ ফরেনসিক টিম (Forensic team)। শনিবার দুপুর ১টা নাগাদ বিস্ফোরণ হওয়া প্লাস্টিক কারখানার বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখে নমুনা জোগাড় করছিলেন বিশেষজ্ঞরা। এমন সময়ে আচমকা ধ্বংসস্তুপের এক জায়গা থেকে অগ্নিস্ফুলিঙ্গ দেখা দেয়। তা নিমেষে আগুন ধরে চেহারা নেয়, প্রবল ধোঁয়া বেরতে থাকে। এক ফরেনসিক অফিসারের পিপিই কিটে আগুন লেগে যায়। তিনি বিপদ বুঝে সঙ্গে সঙ্গে তা খুলে নিরাপদ দূরত্বে চলে যান। নাহলে হয়ত বড় বিপদ হতে পারত।
শুক্রবার রাত থেকে সুজাপুরের প্লাস্টিক কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণে ৬ জনের মৃত্যুর পর তদন্তে নেমেছেন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা। প্রথমদিকে ঘটনাস্থল, বিস্ফোরণের ধরন দেখে তাঁদের ধারণা হয়েছিল, সাধারণ মেশিন থেকে বিস্ফোরণ নয় এটি। কিন্তু শনিবার দিনের আলোয় সবটা খতিয়ে দেখে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ চিত্রাক্ষ সরকার জানিয়েছেন, প্লাস্টিক কাটার মেশিনে যান্ত্রিক ত্রুটি থেকেই বিস্ফোরণ। কোনও বিস্ফোরক ছিল না কারখানা বা তার আশেপাশে। অর্থাৎ ফরেনসিক টিমের প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, বিজেপি যে কারখানার আড়ালে বোমা তৈরির কাজ চলছিল বলে অভিযোগ তুলেছিল, তা খারিজ হয়ে গেল।
[আরও পড়ুন: সুজাপুরে প্লাস্টিক কারখানার বিস্ফোরণ ঠিক কীভাবে? ঘটনাস্থলে গিয়ে ধোঁয়াশা বাড়াল ফরেনসিক দল]
বৃহস্পতিবার বেলার দিকে সুজাপুরের ৩৪ নং জাতীয় সড়কের ধারে প্লাস্টিক কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় চার শ্রমিকের। পরে আরও ২ জনের মৃত্যু হয়। ঘটনার প্রায় ৩৬ ঘণ্টা পর ফরেনসিক টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজ শুরু করে। শনিবার কাজের সময় ধ্বংসস্তূপ থেকে ফেটে যাওয়া মেশিনের ভগ্নাংশ পরীক্ষা করার সময় তাতে লেগে থাকা রাসায়নিক থেকে স্ফুলিঙ্গ দেখা যায়। তারপর প্রবল ধোঁয়া বেরতে শুরু করে। স্ফুলিঙ্গ লেগে যায় এক ফরেনসিক বিশেষজ্ঞের পরনে থাকা পিপিই-তে। তিনি তড়িঘড়ি তা খুলে ফেলেন। বিপদ বুঝে এগিয় যায় পুলিশও। তাঁর কোনও ক্ষতি হয়নি।
[আরও পড়ুন: ‘শুভেন্দু, সৌগত-সহ ৫ সাংসদ যে কোনও সময়ে বিজেপিতে আসবেন’, বিস্ফোরক দাবি অর্জুন সিংয়ের]
তবে এমনটা বারবারই হলে, কাজের ক্ষেত্রে বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি হবে বলে আশঙ্কা ফরেনসিক টিমের। সেক্ষেত্রে আরও সাবধানতার সঙ্গে কাজ করা প্রয়োজন। প্রাথমিক তদন্তের পর ফরেনসিকের তরফে একটা রিপোর্ট দিল্লিতে পাঠানো হবে বলে খবর।