কৃষ্ণকুমার দাস: হাই কোর্টের নির্দেশে জেল থেকে বাড়ি ফিরে গৃহবন্দি দশার শুরুতেই কলকাতাবাসীদের ঘূর্ণিঝড় যশ ও করোনার দুর্ভোগ থেকে বাঁচাতে ভারচুয়াল বৈঠক সারেন পুরসভার মুখ্যপ্রশাসক ফিরহাদ হাকিম। আরও বেশি সংখ্যায় টিকাকরণ, স্যানিটাইজেশন ও কোভিডের দেহ সঠিক এবং সাবলীলভাবে দাহ করা নিয়ে পুরসভার অফিসারদের একগুচ্ছ নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। আজ ফের এই সব ইস্যুতে বৈঠকে বসবেন তিনি। তবে শুক্রবার তিনি বাড়ি ফিরলেও এখনই হাসপাতাল থেকে ফেরা হচ্ছে না বাকি তিন নেতা সুব্রত মুখোপাধ্যায়, মদন মিত্র ও শোভন চট্টোপাধ্যায়ের। আপাতত তাঁদের চিকিৎসাধীন থাকার প্রয়োজন বলেই জানিয়েছে এসএসকেএম হাসপাতালের মেডিক্যাল বোর্ড।
শুক্রবার চেতলার বাড়ি থেকে ভিডিও কনফারেন্সে হওয়া ফিরহাদের (Firhad Hakim) বৈঠকে পুরসভার কমিশনার, মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক, যুগ্ম সচিব পর্যায়ের অফিসাররা ছাড়াও ছিলেন বেশ কয়েকজন পুর-চিকিৎসকও। বৈঠকের শুরুতেই প্রথমে দৈনিক কতজন সংক্রমিত ও সুস্থ হচ্ছেন তার পাশাপাশি কত সাধারণ মানুষের টিকাকরণ হচ্ছে, তার তথ্য জেনে নেন মুখ্যপ্রশাসক। দেহ দাহে এখন প্লাস্টিকের বদলে ভুট্টাগাছের থেকে তৈরি বিশেষ কাগজের প্যাকেটেই চুল্লিতে দেওয়া হচ্ছে বলে রিপোর্ট দেন পুর অফিসাররা। বৈঠকের শেষ পর্যায়ে আমফানের অভিজ্ঞতা উল্লেখ করে যশ ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় পুরসভাকে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় রাস্তায় নামতে নির্দেশ দেন ফিরহাদ।
[আরও পড়ুন: এবার কলকাতায় ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের হানায় মৃত্যু যুবতীর, বাড়ছে উদ্বেগ]
আদালতের নির্দেশ কার্যকর হলে সন্ধে সাতটা নাগাদ পুলিশের গাড়িতে বাড়ি ফেরেন ফিরহাদ। ঘরে ফেরার আধঘণ্টা পরেই তিনি করোনা সংক্রমণ মোকাবিলা নিয়ে পুর অফিসার ও চিকিৎসকদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স শুরু করেন। তারপর আলোচনা হয় ঘূর্ণিঝড় নিয়ে। আজ ফের করোনা নিয়ে করবেন তিনি। ‘টক টু কেএমসি’ অনুষ্ঠানটি বাড়ি থেকেই ভারচুয়ালি করতে পারেন তিনি। শোনা যাচ্ছে, তাঁর বাড়ির সামনে পুলিশি নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। পরিবারের সদস্য ছাড়া বাকিদের প্রবেশ নিষেধ।
কিন্তু ‘গৃহবন্দি’ ফিরহাদ কাজ শুরু করে দিলেও আগের মতোই হাসপাতালে রয়েছেন নারদ কাণ্ডে (Narada Case) গ্রেপ্তার হওয়া বাকি তিন হেভিওয়েট নেতা। মদন মিত্রের (Madan Mitra) শারীরিক অবস্থার সামান্য উন্নতি হয়েছে বলে খবর। প্রয়োজনে মাঝেমধ্যে অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে তাঁকে। শোভনের অবস্থাও স্থিতিশীল। আজই ইকোকার্ডিওগ্রাফি হতে পারে তাঁর। এদিকে সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের ভোকাল কর্ডে সমস্যা রয়েছে। তাই তাঁদের জন্য তৈরি মেডিক্যাল বোর্ড জানিয়ে দিয়েছে, এখনই তাঁদের ছুটি দেওয়ার যাবে না। আপাতত তাঁদের চিকিৎসার প্রয়োজন। নেতা-মন্ত্রীদের জন্য হাসপাতালের উডবার্ন ওয়ার্ডে বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তাও। প্রত্যেক কেবিনে নজরদারিতে থাকছেন এক এসআই ও দুডন সশস্ত্র পুলিশ।