ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: জয়নগরের নিহত অঞ্চল সভাপতি সইফউদ্দিন লস্করের পরিবারের পাশে তৃণমূল। আগামী রবিবার নিহতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যাবেন ফিরহাদ হাকিম। ওইদিন সেখানে সভাও করবেন তৃণমূল নেতা।
নিহত বছর তেতাল্লিশের সইফউদ্দিন লস্কর, বামনগাছি গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য ছিলেন। শুধু তাই নয় তিনি তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতির পদও সামলাতেন। তাঁর স্ত্রী বামনগাছি পঞ্চায়েতের প্রধান। গত ১৩ নভেম্বর ভোর পাঁচটা নাগাদ মসজিদে নমাজ পড়তে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বেরন। পথে তাঁকে ঘিরে ধরে দুষ্কৃতীরা। এক রাউন্ড গুলি চলে। গুলি লাগে তাঁর কাঁধে। রক্তারক্তি কাণ্ড ঘটে। রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন তৃণমূল নেতা। গুলির শব্দে ঘুম ভেঙে যায় স্থানীয়দের। ঘুমঘোর কাটিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েন অনেকেই। তাঁরা পৌঁছন ঘটনাস্থলে। তৃণমূল নেতাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করেন স্থানীয়রা। নিয়ে যাওয়া হয় জয়নগর ১ নম্বর ব্লকের পদ্মেরহাট গ্রামীণ হাসপাতালে। তবে তাতে লাভ হয়নি কিছুই। চিকিৎসকরা জানান হাসপাতালে আসার পথেই প্রাণ গিয়েছে তৃণমূল নেতার।
[আরও পড়ুন: ঘরে স্ত্রী-সন্তান, খুন করতে গোখরো ছেড়ে দরজায় খিল দিলেন ব্যক্তি, তার পর…]
এদিকে, পিছু ধাওয়া করে ঘটনাস্থল থেকে কিছুটা দূরে খুনে অভিযুক্ত এক ব্যক্তিকে পাকড়াও করে স্থানীয়রা। গণপিটুনিতে মৃত্যুও হয় তার। নিহত তৃণমূল নেতার বাবার দাবি, সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীরা তাঁর ছেলেকে খুন করে। তৃণমূল নেতা খুনের ‘বদলা’ নিতে দলুয়াখাঁকি গ্রামের একের পর এক সিপিএম নেতা-কর্মীর বাড়িতে ভাঙচুর করা হয়। কার্যত ‘বগটুই মডেলে’ ৮-১০টি বাড়িতে আগুনও লাগিয়ে দেওয়া হয়। পুলিশও পরিকল্পনামাফিকভাবে ঘটনাস্থলে দেরিতে পৌঁছয় বলেই অভিযোগ। আতঙ্কে ঘর ছাড়েন অনেকেই। বর্তমানে ধীরে ধীরে গ্রামে ফিরছেন অনেকেই। তবে এখনও সেখানকার বেশ কয়েকটি বাড়ি পুরুষশূন্য বলেই খবর। রাজনৈতিক হিংসায় থমথমে দলুয়াখাঁকিতে ত্রাণ পৌঁছতে বাধা পায় সিপিএম, কংগ্রেস। ঘটনার জল গড়ায় কলকাতা হাই কোর্টে। তবে হাই কোর্টের নির্দেশের পর ইতিমধ্যে গ্রামে পৌঁছেছে ত্রাণসামগ্রী। আতঙ্ক কাটিয়ে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে দলুয়াখাঁকি।