নব্যেন্দু হাজরা: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এই এলাকাতে এয়ারস্ট্রিপ ছিল। ইংরেজরা তৈরি করেছিল। কিন্তু তারপর থেকে তা পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে রয়েছে। এবার সেখানেই আধুনিক বিমানবন্দর (Airport) তৈরির কাজ শুরু করল রাজ্য সরকার এবং বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। যেমনটা হয়েছে কোচবিহারে। এবার তেমনই বিমানবন্দর তৈরি হবে পুরুলিয়ার (Purulia) ছররাতে।
ছোট, মাঝারি, বড় সব ধরনের বিমানই নামতে পারবে সেখানে। দিনকয়েক আগেই এই বিমানবন্দর তৈরির জমি পরিদর্শন করে আসেন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ এবং রাজ্য প্রশাসনের কর্তারা। রাজ্য সরকারের তরফে ছিলেন পরিবহণ দপ্তরের বিশেষ সচিব, পুরুলিয়ার জেলাশাসক, অতিরিক্ত জেলাশাসক-সহ অন্যান্য আধিকারিকরা। নবান্নসূত্রে খবর, ২০২৫ সালের মাঝামাঝি এই বিমানবন্দর চালুর লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে। সেইমতো কাজ শুরু হয়েছে।
[আরও পড়ুন: ভাতারে TMC বিধায়কের বিরুদ্ধে ‘দূর হঠো’ পোস্টার, নেপথ্যে কারা? ভিন্নমত বিধায়ক-ব্লক সভাপতির]
ছররা বিমানবন্দর তৈরির টাকা দেবে রাজ্য। তবে তা বানাবে এয়ারপোর্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (Airport Authority of India)। প্রকল্প রূপায়ণে আনুমানিক ২৫০-৩০০ কোটি টাকা খরচ হবে বলে মনে করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই প্রকল্পটি সমীক্ষার জন্য রাজ্য বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে ২৫ লক্ষ টাকা দিয়েছে। কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে। এখান থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিমান উড়তে এবং নামতে পারবে। নবান্নের এক কর্তার কথায়, এখানে এয়ারপোর্ট তৈরি হলে পুরুলিয়া, বাঁকুড়াকে কেন্দ্র করে পর্যটনশিল্পের বিকাশও ব্যাপকভাবে হবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও চাইছেন এরাজ্যে পর্যটনের বিকাশ। সেখানে এখানে বিমানবন্দর তৈরি হলে তাতে দেশ-বিদেশের পর্যটকদের আসা-যাওয়ায় অনেক সুবিধা হবে। এই জেলা সামাজিক ও অর্থনৈতিক দিক থেকে সমৃদ্ধ হবে। বেশ কয়েকটি জেলার হাল বদলে যেতে পারে।
জানা গিয়েছে, ১৭২২ মিটার দৈর্ঘ্য এবং ৩৫০ মিটার প্রস্থ হবে বিমানবন্দরের। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটিশদের তৈরি একটি পরিত্যক্ত এয়ারস্ট্রিপ রয়েছে ওই ছররা এলাকায়৷ সেটিকেই এ বার পুরোদস্তুর বিমানবন্দর হিসাবে গড়ে তুলতে সক্রিয় হয়েছে রাজ্য। আটের দশকেই ছাররার এয়ারস্ট্রিপ ও তার সংলগ্ন ওই বিপুল জমি রাজ্য সরকারের হাতে তুলে দিয়েছিল তৎকালীন কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু এতদিন সেটি পরিত্যক্ত হিসাবেই পড়ে ছিল। প্রশাসনের দাবি, পুরুলিয়া থেকে সবচেয়ে কাছের বিমানবন্দর রাঁচিতে। কিন্তু এই এলাকার খুব কাছেই পড়শি রাজ্য ঝাড়খণ্ডে বোকারোর শিল্পতালুক। ছাররা সংলগ্ন ওই এয়ারস্ট্রিপের পুরনো পরিকাঠামোকে ঘিরেই নতুনভাবে বিমানবন্দরের পরিকল্পনা করা হয়েছে৷ ওই এলাকায় বিশেষ জনবসতি না-থাকায় জমিকে ঘিরে কোনও সমস্যা হবে না বলেই আশাবাদী প্রশাসন৷
[আরও পড়ুন: মাদক পাচারের পর্দাফাঁস, মুর্শিদাবাদে এসটিএফের হাতে গ্রেপ্তার ভিনরাজ্যের যুবক-সহ ৪]
পুরুলিয়া-বরাকর রোডের পাশেই রয়েছে বিশাল জমি৷ আদ্রা-টাটা রুটে এখানেই রয়েছে ছররা স্টেশন। পুরুলিয়া শহর থেকে প্রায় ৯ কিলোমিটার দূরে তৈরি হবে এই বিমানবন্দর। তবে প্রশাসনের কর্তারা জানাচ্ছেন, রাজ্যের এই অঞ্চলে পর্যটনের বিকাশে বিমানবন্দর তৈরি একটা অন্যতম বড় পদক্ষেপ হতে চলেছে। অযোধ্যা পাহাড়কে কেন্দ্র করে সাজছে পর্যটনও। যে কারণে মনে করা হচ্ছে, বিমানবন্দর তৈরি হলে বছর তিনেক পর এখানকার ভোল বদলে যেতে পারে।