শাহজাদ হোসেন, ফরাক্কা: জেলা পরিষদের সভাধিপতির সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে সংঘাত। এনিয়ে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েও সুরাহা না হওয়ায় পদ ছাড়লেন মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের সদস্য শাহনাজ বেগম। ফেসবুকে একটি দীর্ঘ পোস্ট করে তিনি এই সংক্রান্ত ঘোষণা করেছেন। সেখানে স্পষ্ট লিখেছেন, 'চোর জেলা পরিষদের একজন অংশীদার হয়ে থাকা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তাই আপনাদের দেওয়া টার্ম পূর্ণ হওয়ার আগেই আমি সদস্য পদ ত্যাগ করতে বাধ্য হলাম।'
শাহনাজ বেগমের নিশানায় মূলত জেলা পরিষদের সভাধিপতি, তৃণমূল নেত্রী রুবিয়া সুলতানা। তাঁর বিরুদ্ধে আগে একাধিকবার আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগ তুলেছেন জেলা পরিষদের সদস্য শাহনাজ বেগম। এছাড়া বহুদিন ধরে জেলা পরিষদের কোনও বৈঠক ডাকা হয় না, সদস্যদের পরামর্শ, আলোচনা হয় না বলেও অভিযোগ তাঁর। তিনি এই মর্মে দলনেত্রী তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সির কাছে চিঠি পাঠিয়ে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। কিন্তু তাঁদের তরফে কোনও সাড়া মেলেনি বলে দাবি শাহনাজের। তাতেই বীতশ্রদ্ধ হয়ে তিনি পদত্যাগ করেছেন বলে খবর।
যদিও ফেসবুক পোস্টে শাহনাজ বেগম এসব কিছুই লেখেননি। তাঁর পোস্টে লেখা, 'আমি ১৭ ডিসেম্বর সম্মানীয় ডিভিশনাল কমিশনার সাহেবকে মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের সদস্য পদ থেকে ইস্তফা পত্র পাঠিয়েছি। সোমপাড়া -১, সোমপাড়া -২, রামপাড়া -১ এবং রামনগর বাছড়ার মানুষ ২০১৩ সাল থেকে একই আসনে পরপর তিনবার আমাকে নির্বাচিত করেছেন। এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে দল-মত এবং জাতি বর্ণ ধর্ম নির্বিশেষে আমার অভিভাবক হয়ে আমাকে আশীর্বাদ করেছেন, দোয়া করেছেন। আপনাদের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা, শ্রদ্ধা, সম্মান, ভালোবাসা চিরদিন থাকবে। চোর জেলা পরিষদের একজন অংশীদার হয়ে থাকা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তাই আপনাদের দেওয়া টার্ম পূর্ণ হওয়ার আগেই আমি সদস্য পদ ত্যাগ করতে বাধ্য হলাম।'
শাহনাজ বেগমের ফেসবুক পোস্ট।
উল্লেখ্য, জেলায় রুবিয়া সুলতানা এবং শাহনাজ বেগমের দ্বন্দ্ব নতুন নয়। এলাকায় কার, কত প্রভাব, তা নিয়েই মূলত বর্তমান ও প্রাক্তনের সংঘাত। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মুর্শিদাবাদ সফরের পর শাহনাজকে বার্তা দেওয়া হয়েছিল জেলা পরিষদের তরফে। অফিসিয়াল হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে তাঁকে বাদ দিয়ে দেওয়া হয়। এনিয়ে বেশ তোলপাড় হয়েছিল। এবার শাহনাজ বেগমের ইস্তফাপত্র পাঠানোয় স্পষ্ট, ছাব্বিশের নির্বাচনের আগে জেলা তৃণমূলের অন্দরে দ্বন্দ্ব চরমে উঠল।
