সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তিন দশক ধরে মহাকাশে মানুষের ‘চোখ’ হয়ে অবস্থান করেছিল হাবল। কয়েক মাস হল ‘বৃদ্ধ’ হাবলকে সরিয়ে তার জায়গায় এসেছে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ (Webb Telescope)। ১০ বিলিয়ন ডলার খরচ করে তৈরি এই টেলিস্কোপের গুরুত্ব ঠিক কতটা তা পরিষ্কার হয়ে গেল সোমবার। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন (Joe Biden) এই টেলিস্কোপের তোলা প্রথম ছবি প্রকাশ করলেন। টেলিস্কোপের ইনফ্রারেড ক্যামেরায় ধরা পড়েছে ৪৬০ কোটি বছর আগের ছবি!
গ্যালাক্সি ক্লাস্টার অর্থাৎ ছায়াপথের (Galaxy) ঝাঁকের এই ছবি ঘিরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। SMACS 0723 নামের ওই ক্লাস্টারের মধ্যে রয়েছে হাজার হাজার ছায়াপথ। সুদূর সময় ও স্থানের ওই সব ছায়াপথের এমন নিখুঁত ও ঝকঝকে ছবি দেখে চোখ ফেরাতে পারছে না জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। এপর্যন্ত কোনও টেলিস্কোপই এমন ছবি তুলতে পারেনি। এতকাল হাবল স্পেস টেলিস্কোপ অনেক অসাধারণ ছবি তুললেও এমন ছবি তোলা তার পক্ষেও সম্ভব ছিল না।
সোমবার বাইডেন ছবিটি প্রকাশ করেন হোয়াইট হাউসে একটি অনুষ্ঠানে। জানা গিয়েছে, আজ, মঙ্গলবার জেমস ওয়েবের তোলা পূর্ণ রঙিন ছবি প্রকাশ করা হবে একটি টেলিভিশন ব্রডকাস্টের মাধ্যমে। জানা যাচ্ছে, প্রায় সাড়ে ১২ ঘণ্টা ধরে ইনফ্রা রেড ক্যামেরায় বিভিন্ন ওয়েবলেংথে তোলা ছবিগুলিকে একত্র করে তবে এই সামগ্রিক ছবি পাওয়া গিয়েছে। কতটা গুরুত্বপূর্ণ এই ছবিগুলি? ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা, এর ফলে ছায়াপথের ভর, বয়স, ইতিহাস, গঠন ও অন্যান্য বহু বিষয়ে খুঁটিনাটি জানা সম্ভব হবে। এতদিনের অনেক অজানা রহস্যের পর্দা উঠবে।
মহাকাশের এই খুব শক্তিশালী টেলিস্কোপটি বানাতে নাসার (NASA) সঙ্গে হাত মিলিয়েছিল ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি এবং কানাডিয়ান স্পেস এজেন্সি। ইউনিভার্সিটি কলেজ অফ লন্ডনের অধ্যাপক আয়ুশ সাক্সেনার আশা, মহাবিশ্বে কোনও বাসযোগ্য গ্রহের সন্ধান দিতে পারে জেমস ওয়েব। আপাতত আগামী ১০ বছর মহাকাশে সন্ধানী দৃষ্টি নিয়ে ঘোরাফেরা করবে নাসার অত্যাধুনিক টেলিস্কোপটি। তুলে ধরবে রহস্যময় ব্রহ্মাণ্ডের নানা সুদূর প্রান্তের ছবি। যা হদিশ দেবে এই বিপুল বিশ্বের নানা অজানা তথ্যের।