অর্ণব আইচ: খোদ কলকাতায় জাল করোনা টিকা (Corona Vaccine) চক্রে পড়ে গেলেন পাঁচ জন। টাকা খোয়ানোর সঙ্গে উদ্বেগে দিন কাটছে তাঁদের। একটি ল্যাবরটরির কর্মী পরিচয় দিয়ে এক মহিলা ‘টিকা’ দিয়ে যান। যাঁদেরকে টিকা দেওয়া হয় তাঁরা পরে বুঝতে পারেন প্রতারিত হয়েছেন। এর পর ফুলবাগান থানায় প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করা হয়। অভিযুক্তের খোঁজ শুরু করেছে পুলিশ।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছ, ফুলবাগান থানা এলাকায় সুরেন সরকার রোডের বাসিন্দা এক মহিলার সঙ্গে পরিচিতর মাধ্যমে অন্য এক মহিলার সঙ্গে পরিচয় হয়। ওই মহিলা নিজেকে মধ্য কলকাতার ইডেন হসপিটাল রোডের একটি ল্যাবরেটরির কর্মী বলে পরিচয় দেন। দাবি করেন, তিনি সরকারি নিয়ম মেনে বাড়িতে গিয়ে করোনার টিকা দিয়ে যাবেন। তার বদলে তিনশো টাকা করে নেবেন। এতে রাজি হয়ে যান সুরেন সরকার রোডের ওই বাসিন্দা। তাঁর সঙ্গে আরও চার জন টিকা নেবেন বলে ঠিক হয়।
[আরও পড়ুন: রাজ্যে একদিনে করোনায় মৃত ১৪৫, সংক্রমণের নিরিখে ফের কলকাতাকে টপকাল উঃ ২৪ পরগনা]
গত ৩ মে ওই মহিলা এসে ৫ জনকে কোভিশিল্ডের নাম করে ইঞ্জেকশন দেন। ‘টিকা’ নেওয়ার পর ওই প্রতারক মহিলার কাছ থেকে সার্টিফিকেট চান তাঁরা। কিন্তু তা দিতে পারেননি তিনি। বলেন, ইডেন হসপিটাল রোডের ওই ল্যাবরেটরির পক্ষ থেকে কিছুদিন পরই তাঁদের টিকার শংসাপত্র দেওয়া হবে। মাথা পিছু ৩০০ টাকা করে মোট দেড় হাজার টাকা নিয়ে চলে যান প্রতারক মহিলা।
এরপর থেকে শংসাপত্রর জন্য ওই মহিলার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাঁকে আর মোবাইলে পাওয়া যায়নি। এতেই সন্দেহ হয়। তাঁরা খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারেন, বাড়িতে এসে করোনার টিকা দেওয়ার পদ্ধতি এখনও চালু হয়নি। কোনও ল্যাবরেটরিও এভাবে বাড়িতে এসে টিকা দিচ্ছেও না। এই খবর জানার পর প্রতারিতদের মনে প্রশ্ন জাগে টিকার নাম করে যে তরল তাঁদের শরীরে ঢোকানো হয়েছে তা আসলে কী? এতে তাঁদের কোনও সমস্যা হবে না তো? যদিও ইঞ্জেকশন নেওয়ার পর তাঁদের এখনও পর্যন্ত কোনও অস্বস্তি বা সমস্যা হয়নি।
[আরও পড়ুন: নিগ্রহের স্মৃতি ভুলে কোভিড রোগীদের জন্য একজোট জুনিয়র ডাক্তাররা, দিলেন ফোন নম্বর]
ফুলবাগান থানায় একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তারই ভিত্তিতে এনফোর্সমেন্ট শাখার গোয়েন্দারা তদন্ত শুরু করেছেন। টিকার বদলে স্যালাইন বা গ্লুকোজের মতো অন্য কোনও তরল তাঁদের দেওয়া হয়েছে, এমন সম্ভাবনাও পুলিশ উড়িয়ে দিচ্ছে না। ইডেন হসপিটাল রোডের যে ল্যাবরেটরির নাম উল্লেখ করা হয়েছিল, সেখানে হানা দিয়ে ওই মহিলার সন্ধান চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।