সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিতর্কে উত্তরপ্রদেশ (Uttar Pradesh) প্রশাসন। করোনা অতিমারীর মাঝেই রবিবার কোভিড বিধি ভঙ্গ করে যোগী আদিত্যনাথের রাজ্যের একাধিক ঘাটে “গঙ্গা দশেরা” (Ganga Dussehra) উপলক্ষ্যে চলল গঙ্গা স্নান। হাপুরের (Hapur) ব্রজঘাট, বারাণসীর (Varanasi) বিভিন্ন ঘাট, ফারুক্কাবাদ-সহ একাধিক জায়গায় দেখা গেল, করোনা (Covid-19) সংক্রান্ত কোনও বিধিনিষেধ না মেনেই গঙ্গা স্নানে নেমে পড়েছেন পুণ্যার্থীরা। সংবাদসংস্থা এএনআই-সহ একাধিক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যাচ্ছে, পবিত্র গঙ্গা স্নানে এসে সামাজিক দূরত্ববিধি যেমন কেউ মানছেন না, তেমনই কারওর মুখে মাস্ক নেই। মাইক লাগিয়ে কোভিডবিধি মেনে চলার প্রশাসনের ঘোষণাই সার, কারওর সেদিকে ভ্রূক্ষেপই নেই। একই দৃশ্য দেখা গিয়েছে আরেক বিজেপিশাসিত রাজ্য উত্তরাখণ্ডের (Uttarakhand) হরিদ্বারের ঘাটগুলিতেও। আর এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড়।
গত বছরে করোনার প্রথম ঢেউয়ের পর চলতি বছরের শুরুতে ভারতে আছড়ে পড়ে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। হু হু করে বাড়তে থাকে সংক্রমণ। দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্রে জারি ছিল মৃত্যুমিছিল। এই সময় উত্তরাখণ্ডে কুম্ভ মেলায় কয়েক লক্ষ পুণ্যার্থীদের সমাগম নিয়ে প্রশ্ন উঠতেও শুরু করে। বহু আন্তর্জাতিক সংস্থা হরিদ্বার কুম্ভমেলাকে (Kumbh Mela) করোনা সুপার স্প্রেডার ইভেন্ট উল্লেখ করে। ভারতে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের পিছনেও অনেকে এই লক্ষ লক্ষ মানুষের জমায়েতকে দায়ী করছেন। এরপর খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এমন উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে সংক্রমণের গতি শ্লথ করতে ‘প্রতীকী কুম্ভমেলা’ পালনের আরজি জানিয়েছিলেন। এরপরই দেশের একাধিক রাজ্যে সংক্রমণ রুখতে কড়া বিধিনিষেধ কার্যকর করা হয়।
[আরও পড়ুন: ‘মমতার লড়াই ও বাঙালি ঐক্য দেশের কাছে অনুপ্রেরণা’, তৃণমূলনেত্রীর প্রশংসায় উদ্ধব ঠাকরে]
যদিও বর্তমানে দেশের সংক্রমণের গ্রাফ অনেকটাই নিম্নমুখী। টিকাকরণ প্রক্রিয়াও চলছে জোরকদমে। ইতিমধ্যে একাধিক রাজ্য বিধিনিষেধ শিথিল করার পথে। যদিও উত্তরপ্রদেশে বড়সড় যেকোনও ধর্মীয় সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে। তবে দু’মাস বন্ধ থাকার পর হাপুরে ছোট ছোট দোকান খোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে কোভিডবিধি মানার নির্দেশ জারি রয়েছে। কিন্তু সেই নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে “গঙ্গা দশেরা” উপলক্ষ্যে এদিন হাজার হাজার ভক্তের সমাগম হল উত্তরপ্রদেশের একাধিক ঘাটে। একাধিক ছবিতে দেখা গিয়েছে, কোথাও সামাজিক দূরত্ব মানার বালাই নেই। যাঁরা স্নান সেরেছেন বা গঙ্গাস্নানে এসেছেন, তাঁদের অনেকের মুখেই মাস্কটুকুও নেই। আর এই ছবি সামনে আসতেই কাঠগড়ায় যোগী প্রশাসন। নেটিজেনদের অনেকেই উত্তরপ্রদেশ সরকারের সমালোচনায় মুখরও হয়েছেন। এদিকে, দ্বিতীয় ঢেউয়ের পর আশঙ্কা রয়েছে দেশে করোনার তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার। তাও আবার আগামী ৬ থেকে ৮ সপ্তাহের মধ্যেই। এই পরিস্থিতিতে এহেন ছবি সামনে আসায় অনেকেই অবাক হয়েছেন।