শাহাজাদ হোসেন, ফরাক্কা: মা দুর্গা নয়, চিরাচরিত প্রথা মেনে প্রায় তিনশো বছরেরও বেশি সময় ধরে মা পদ্মা পূজিত হয়ে আসছেন মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জের ধুসরীপাড়ায়। যদিও এবছর ভাঙনে বিদ্ধস্ত ওই এলাকা। কয়েক হাজার বাড়ির মতোই গঙ্গা গর্ভে তলিয়ে গিয়েছে পদ্মাদেবীর মন্দির। ফলে আদৌ পুজো হবে কি না, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন গ্রামবাসীরা। তবে সমস্যা সমাধানও করেছেন তাঁরাই। তাঁদের উদ্যোগেই গ্রামেরই এক কোণে ফের তৈরি হচ্ছে মন্দির। সেখানেই হবে পুজো।
প্রতিবছর পুজো উপলক্ষে বিশাল মেলার আয়োজন করা হয় ধুসরীপাড়ায়। মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) বিভিন্ন প্রান্তের পাশাপাশি মালদহ, বীরভূম এমনকী ঝাড়খণ্ডের বিভিন্ন গ্রামের মানুষও শামিল হয় ওই পুজোয়। চারদিন ধরে চলে উৎসব। আগের রীতি মেনে পুজো (Durga Puja 2020) আয়োজনের সদিচ্ছা থাকলেও একদিকে করোনার প্রকোপ অন্যদিকে রাক্ষুসী গঙ্গার ভয়াবহ তাণ্ডবে চলতি বছরে এলোমেলো হয়ে গিয়েছে সবটা। গ্রামবাসীদের চেষ্টায় শেষমেষ পুজোর আয়োজন করা সম্ভব হলেও তা একেবারেই আড়ম্বরহীন।
[আরও পড়ুন: উৎসবে আয়োজন নয়, করোনা কালে ‘লৌকিক’ ছোঁয়ায় শারদ অঞ্জলি ৯৫ পল্লিতে]
পুজো কমিটির অন্যতম উদ্যোক্তা রাহুল সিংহ বলেন, “গঙ্গা ভাঙনে মা পদ্মার মন্দির গঙ্গা গর্ভে তলিয়ে গেলেও আমরা গ্রামের এক কোণে নতুন করে দেবীর বেদি তৈরি করে পুজোর আয়োজন করেছি। করোনা আবহে মেলা না বসলেও এই পুজো ভাঙনের দুঃস্বপ্নের মধ্যেই কিছুটা হলেও স্বস্তি দেবে আমাদের।” অন্যদিকে নতুন করে পদ্মাদেবীর মন্দিরের জন্য জমি দান করে স্থানীয় বাসিন্দা শান্তি সিংহ জানান, “মা পদ্মার চলে যাওয়া আমরা কোনওভাবেই মেনে নিতে পারছি না। এবারে জাঁকজমক ছাড়াই পুজো করব। গঙ্গা ভাঙন রোধের জন্য মায়ের কাছে প্রার্থনা করব।” দেবী সন্তুষ্ট হলে গঙ্গা ভাঙ্গনের কবল থেকে রক্ষা পাবে এলাকা, বিশ্বাস গ্রামবাসীদের।