সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শীতের মরশুম মানেই দেদার খাওয়াদাওয়া। অতীতে একসময় গৃহিণীদের হাতের ছোঁয়ায় তৈরি হত নানা ধরনের পিঠেপুলি থেকে পায়েস। তার গন্ধে যেন ম-ম করত গোটা বাড়ি। বর্তমানে অবশ্য খাওয়া দাওয়ায় কিছুটা বদল এসেছে। বর্তমানে রান্নাবান্না হলেও ব্যস্ততার তাগিদে সহজ রেসিপিতে ভরসা রাখছেন বহু গৃহিণী। চলুন একনজরে দেখে নেওয়া যাক, ঠিক কোন কোন খাবারদাবার আজ অস্তিত্ব সংকটে।
আগে পৌষ সংক্রান্তিতে বাড়ি বাড়ি চোষি কেটে তার পায়েস তৈরির রেওয়াজ ছিল। যা চেটেপুটে খেত আট থেকে আশি। তবে এই পদ যে বেশ সময়সাপেক্ষ সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। বর্তমানে চোষির পায়েস আর বাড়িতে হয় না বললেই চলে।
অতিরিক্ত ঝাল খাওয়ার প্রবণতা এখন আগের তুলনায় কিছুটা কম। তাই গৃহস্থ বাড়িতে লঙ্কা ও ধনেপাতা বাটা মুরগির মাংসও রান্না প্রায় হয় না বললেই চলে। তার পরিবর্তে আধুনিক গৃহস্থের রান্নাঘরে কাবাব জাতীয় পদের চল বেশি।
পাটিসাপটা বর্তমানে বেশিরভাগ মিষ্টির দোকানে পাওয়া যায়। তাই ঝক্কি করে বাড়িতে করার অভ্যাস কিছুটা হারাতেই বসেছে। তবে দোকানে বর্তমানে চালের গুড়ির পাটিসাপটা পাওয়া যায় না। পরিবর্তে ময়দা এবং সুজির মিশ্রণে তৈরি হওয়া পাটিসাপটাই খান বেশিরভাগ মানুষ।
দুধ, নারকেল, ঘি দিয়ে তৈরি গোকুল পিঠের চলও প্রায় নেই বললেই চলে। ঐতিহ্যবাহী এই বাঙালি রান্নাই আজ প্রায় অস্তিত্ব সংকটে।
রাঙা আলু দিয়ে নানা মিষ্টি তৈরি করা যায়। ঠিক যেমন রসবড়া। আগে প্রায় ঘরে ঘরে শীতের মরশুমে এই ধরনের মিষ্টি তৈরি হত। বর্তমানে আর সে ধরনের মিষ্টি হয় না বললেই চলে।
আরিষা পিঠে এবং কাঁকারা পিঠেও আগে গ্রামবাংলায় খুবই তৈরি করা হত। বর্তমানে এই ধরনের পিঠে ঘরের তৈরির চল নেই বললেই চলে। আদৌ কতজন এই ধরনের পিঠের নাম জানেন, তা নিয়েও রয়েছে সন্দেহ।
পেঁপের ভিতর পুর দিয়ে দোলমা তৈরি হত একসময় ঘরে ঘরে। সহজপাচ্য এই খাবার বেশিরভাগ মানুষ পছন্দও করতেন। বর্তমানে পেঁপের দোলমার চল নেই বললেই চলে। তার বদলে পটলের দোলমা রান্নাঘরে বেশিরভাগ জায়গা দখল করে নিয়েছে।
অতীতে বেশিরভাগ মহিলাই ছিলেন গৃহবধূ। তাই তাঁদের বেশিরভাগ সময় কেটে যেত রান্নাঘরেই। পরিবারের লোকজনের জন্য বিশেষ পদ রান্নায় কোনও ত্রুটি রাখতেন না তাঁরা। বর্তমানে মহিলারা সামাল দেন অফিস ও বাড়ি দু'দিক। তার ফলে চটজলদি রান্না করে নেওয়া প্রবণতা ও প্রয়োজন। তাই নানা সুস্বাদু খাবার এখন আর পাওয়াই যায় না।
