অসিত রজক, বিষ্ণুপুর: 'গান, বাজনা, মোতিচুর- তিন নিয়ে বিষ্ণুপুর।' বাঁকুড়ার এই শহরের গান-বাজনা অনেক আগেই উচ্চস্থান পেয়েছে। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের জিআই ট্যাগ পেয়েছে এখানকার 'মোতিচুর লাড্ডু'। তারপর থেকে চাহিদা অনেক বেড়ে গিয়েছে। এবারে ভাইফোঁটায় মিষ্টিদের মধ্যে একেবারে 'হিরো' হয়ে উঠেছে বিষ্ণুপুরের নিজস্ব ঘরানার মিষ্টি ‘মোতিচুর লাড্ডু’।
পিয়াল ফলের বেসনে তৈরি এই মোতিচুরের রয়েছে দীর্ঘ ঐতিহ্য। কথিত আছে, মল্ল রাজাদের আরাধ্য দেবতা মদনমোহনের ভোগে একসময় এই লাড্ডু নিবেদন করা হত। বলা হয়, মদনমোহনের সবচেয়ে প্রিয় মিষ্টান্ন ছিল এই মোতিচুর। কুলদেবতার জন্যই নাকি মল্ল রাজারা মুর্শিদাবাদ থেকে বিশেষ হালুইকরদের বিষ্ণুপুরে নিয়ে আসেন। তাঁরাই এই বিশেষ মিষ্টি তৈরি করতেন।
ভাইফোঁটায় শহরের প্রায় সমস্ত মিষ্টির দোকানেই জায়গা করে নিয়েছে মোতিচুরের লাড্ডু। অন্যান্য বারের থেকে এবার বিক্রিও বেড়েছে। ১৫ টাকা দরে দেদার বিকোচ্ছে এই লাড্ডু। শহরের ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, স্বীকৃতি পাওয়ার পর থেকেই মোতিচুরের বিক্রি কয়েকগুণ বেড়ে গিয়েছে। এক দোকান মালিক গৌতম যাদব বলেন, "একটি লাড্ডু ১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আজ প্রায় ৩০ কেজি লাড্ডু তৈরি করিয়েছিলাম। সব শেষ। কাল আবার রাত থেকে তৈরি শুরু হবে। বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, কলকাতা-সহ একাধিক জায়গা থেকে অর্ডার পাচ্ছি। সব জায়গায় সাপ্লাই দিতে পারছি না।
ক্রেতা বুল্টি মুখোপাধ্যায় বলেন, “ভাই বাইরে থাকে, কিন্তু ফোন করে বলেছে ভাইফোঁটার মিষ্টিতে যেন বিষ্ণুপুরের মোতিচুর লাড্ডু থাকে। অনেক লাইন থাকলেও আধঘণ্টা দাঁড়িয়ে লাড্ডু কিনেছি।"
