দীপঙ্কর মণ্ডল: বিধানসভা ভোটের (Bengal Polls 2021) আবহে রাজ্য সরকার স্কুল পড়ুয়াদের মিড ডে মিলে (Mid Day Meal) ডাল, সোয়াবিন এবং চিনি যোগ করেছিল। মঙ্গলবার স্কুলশিক্ষা দপ্তর জানিয়ে দিল, আগামী মাস থেকে আর ছোলা দেওয়া হবে না। অর্ধেক করে দেওয়া হল চিনি এবং সোয়াবিনের পরিমাণ। গত মার্চ মাসে রাজ্যে জারি হয় আদর্শ আচরণবিধি। দু’মাস আগে সেই সময় রাজ্যের স্কুল পড়ুয়াদের মিড-ডে-মিলের খাদ্য সামগ্রীর প্যাকেটে ডাল, সোয়াবিন এবং চিনি দেওয়া শুরু হয়।
খাদ্য সামগ্রীগুলি বিতরণ হয় স্কুলের মাধ্যমে। মিড ডে মিলের খাদ্য সামগ্রীর মধ্যে অতিরিক্ত জিনিসগুলি ঢুকিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল স্কুলশিক্ষা দপ্তর। কোভিড (COVID-19) সতর্কায় গত বছর স্কুল বন্ধ হওয়ার পর মিড ডে মিলের খাদ্য সামগ্রী বিতরণ শুরু করে রাজ্য। প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণিতে পড়া ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবকদের হাতে তা তুলে দেওয়া হচ্ছে। গত এপ্রিল মাস পর্যন্ত চাল, আলু, এবং সাবান বিতরণ করা হয়েছে। মার্চ থেকে অভিভাবকদের প্যাকেটে যোগ হয় এক কিলো ছোলা, ৫০০ গ্রাম চিনি, ২৫০ গ্রাম ডাল, এবং ২০০ গ্রাম সোয়াবিনের প্যাকেট।
[আরও পড়ুন: মিউকরমাইকোসিসকে ‘মহামারী’ ঘোষণা রাজ্যের, চিকিৎসায় মানতে হবে বিশেষ বিধি]
নতুন বিজ্ঞপ্তিতে সরকার জানিয়েছে, চাল, আলু, ডাল এবং সাবান দেওয়া বজায় থাকবে। চিনির পরিমাণ ৫০০ গ্রাম থেকে কমিয়ে আড়াইশো গ্রাম করা হয়েছে। সোয়াবিন এর পরিমান কমিয়ে করা হয়েছে ১০০ গ্রাম। স্কুল শিক্ষা দপ্তরের মিড ডে মিল প্রকল্পের অধিকর্তা সমস্ত জেলাশাসক, জিটিএ, শিলিগুড়ির মহকুমা শাসক ও কলকাতা পুরসভাকে একটি বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়েছেন। এদিনের সরকারি আদেশনামায় ৭ জুন থেকে পরবর্তী মিড ডে মিলের সামগ্রী বিতরণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেখানে ছোলার উল্লেখ করা হয়নি।
রাজ্যের শিক্ষক সংগঠনগুলির অভিযোগ, “ভোটারদের প্রভাবিত করতে মিড ডে মিলের খাদ্য সামগ্রীতে নতুন একাধিক জিনিস যোগ করেছিল রাজ্য সরকার। ভোট মেটার পর নতুন এই সিদ্ধান্ত অনৈতিক।” চলতি বছরে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের ট্যাব বা স্মার্ট ফোন কেনার জন্য প্রত্যেককে দশ হাজার করে টাকা দিয়েছে রাজ্য সরকার। সেই টাকা সরাসরি ছাত্রছাত্রীদের অ্যাকাউন্টে চলে গিয়েছে। যাদের নাম সংক্রান্ত সমস্যা ছিল তাদের চেক পাঠানো হয়েছে। টাকা পাঠানো হয়েছে ‘সমগ্র শিক্ষা অভিযান’ প্রকল্প থেকে।
[আরও পড়ুন: ‘প্রশাসনের বার্তার দিকে নজর রাখুন’, ‘যশ’ মোকাবিলায় মমতার উপরই আস্থা দলত্যাগী রাজীবের!]
উল্লেখ্য, এটি কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্প। কেন্দ্রের একটি খাতের টাকা অন্য খাতে ব্যবহার করা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। রাজ্যের স্বীকৃত সমস্ত শিক্ষক সংগঠন একযোগে দাবি করেছে, এইভাবে একটি খাতের টাকা অন্য খাতে খরচ করা যায় না। স্কুলশিক্ষা দপ্তরের দাবি, সমগ্র শিক্ষা অভিযান প্রকল্পে রাজ্যেরও শেয়ার আছে। তাই রাজ্য অন্য প্রকল্পে সেই টাকা খরচ করতে পারে।