দুলাল দে: দিল্লি ফুটবল সংস্থার চিঠি ঘিরে শোরগোল পড়ে গেল দেশের ফুটবল রাজনীতিতে। প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি অসুস্থ হওয়ার পর থেকেই অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশনের (AIFF) সভাপতি পদে রয়েছেন প্রফুল প্যাটেল (Praful Patel)। এখনও নিজের পদে স্বমহিমায় বহাল তিনি। অথচ, ফেডারেশনের সভাপতি থাকাকালীনই নাকি তাঁকে দেওয়া হবে সাম্মানিক ‘ইন্ডিয়ান ফুটবল রত্ন’ পুরস্কার! সম্প্রতি দিল্লি ফুটবল সংস্থার তরফে বেশ কিছু রাজ্যের ফুটবল সংস্থাকে এই মর্মে পাঠানো হয়েছে একটি চিঠি।যা নিয়ে এই মুহূর্তে তোলপাড় ভারতীয় ফুটবল রাজনীতি।
একটু খোলসা করে বিষয়টা বলা যাক। দিল্লি ফুটবল সংস্থার সভাপতি ডঃ সাজি প্রভাকরণ বেশ কিছু রাজ্যের ফুটবল সংস্থাকে যে চিঠি পাঠিয়েছেন, তাতে ফুটবল প্রশাসক হিসাবে তাঁর সাফল্য এবং ভারতীয় ফুটবলকে (Indian Football) নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য প্রফুল প্যাটেলকে সাম্মানিক ‘ইন্ডিয়ান ফুটবল রত্ন’ (Indian football Ratna) সম্মান দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। দিল্লি ফুটবল সংস্থার প্রস্তাব অনুযায়ী এটিই হবে ভারতীয় ফুটবলের সর্বোচ্চ সম্মান। প্রফুলকে সম্মানিত করার জন্য একটি অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে ওই চিঠিতে। যে অনুষ্ঠানের জন্য আবার একটি কমিটি গড়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। কমিটির মাথায় থাকবেন এআইএফএফের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সুব্রত দত্ত।
[আরও পড়ুন: বছর তিনেক আগে সই করেও খেলা হয়নি, ফের ইস্টবেঙ্গলের জার্সিতে এই বাঙালি ফুটবলার]
কিন্তু দিল্লি ফুটবল ফেডারেশনের এই চিঠি রীতিমতো হুলুস্থুল কাণ্ড বাঁধিয়ে দিয়েছে ভারতীয় ফুটবল রাজনীতিতে। প্রশ্ন উঠছে, প্রফুল প্যাটেল তো এখনও সভাপতি পদে বহালই রয়েছেন, তাহলে তাঁকে ‘সাম্মানিক’ পুরস্কার দেওয়ার প্রশ্ন আসছে কেন? তাহলে কি প্রফুলকে সভাপতির পদ থেকে সরানোর পরিকল্পনা করছে দিল্লি ফেডারেশন? ওই চিঠির মাধ্যমেই কি ফেডারেশন সভাপতিকে সসম্মানে বিদায় নেওয়ার বার্তা দেওয়া হয়েছে?
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ওই পুরস্কারটি দেওয়ার জন্য যে কমিটি গড়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, তার মাথায় রাখা হয়েছে সুব্রত দত্তকে (Subrata Dutta)। যিনি আবার প্রফুলের পর ফেডারেশন সভাপতি হওয়ার লড়াইয়ে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছেন। যদিও, সুব্রতবাবু এই চিঠি পেয়ে আকাশ থেকে পড়েছেন। শুক্রবার দিল্লিতে কার্যকরী কমিটির মিটিংয়ে যোগ দিতে গিয়ে তিনি বললেন, “আমাকে কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছে অথচ আমিই জানি না।এমনকী চিঠিতে নাম লেখার আগে অনুমতিও নেওয়া হয়নি।” ফেডারেশনের কার্যকরী কমিটির সদস্যদের কাছে তা নিয়ে প্রতিবাদও জানান সুব্রতবাবু। তিনি স্থির করেছেন দিল্লি ফুটবল সংস্থাকে চিঠিও লিখবেন। এদিকে সাজি প্রভাকরণের প্রস্তাব উড়িয়ে দিয়েছেন প্রফুল প্যাটেল। তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, এমন ধরনের কোনও পুরস্কার তিনি গ্রহণ করতে ইচ্ছুক নন। কার্যকরী কমিটির মিটিংয়ে সুব্রত দত্ত তীব্র প্রতিবাদ জানান এ হেন প্রস্তাবের। এমন প্রস্তাবকে একজনের ব্যক্তিগত চিন্তাধারা বলেই মনে করছে সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন।
[আরও পড়ুন: Cristiano Ronaldo-কে রাখতে চায় না জুভেন্তাস, নতুন ক্লাবের খোঁজে মহাতারকা]
ফেডারেশনের সভাপতি পদে প্রফুল প্যাটেলের মেয়াদ আগেই শেষ হয়েছে। কিন্তু বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন তাই ঝুলে রয়েছে নির্বাচন। ফেডারেশনের নির্বাচন নিয়ে আদালত যতদিন পর্যন্ত না কোনও সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, ততদিন দেশের ফুটবল নিয়ামক সংস্থার শীর্ষপদে থাকবেন বর্তমান ফেডারেশন সভাপতি।