রাজর্ষি গঙ্গোপাধ্যায়: বাংলাদেশ ক্রিকেটের মতো ডামাডোল তাড়া করছে বাংলাদেশ ফুটবলকেও। টানা দ্বিতীয় বারের মতো সাফে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরেও চরম আর্থিক দুর্ভোগে ভুগতে হচ্ছে বাংলাদেশের মহিলা ফুটবলারদের।
গতকালই নেপালকে সাফ ফাইনালে ২-১ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন সাবিনা খাতুন-ঋতুপর্ণা চাকমারা। কিন্তু তাঁদের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আনন্দ অনেকটাই মলিন হয়ে যাচ্ছে আর্থিক দোলাচলে। পদ্মাপারে ফোন করে জানা গেল, দু’মাসের বেতন এখনও বকেয়া বাংলাদেশের মহিলা ফুটবলারদের। পরপর দু’বার সাফ চ্যাম্পিয়ন হলে কী হবে, ঠিক মতো বেতন তাঁদের দিতে পারছে না বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। শুধু তাই নয়, সাফজয়ী বাংলাদেশের মহিলা টিমের ব্রিটিশ কোচ পিটার বাটলারেরও তিন মাসের বেতন বাকি! যে কারণে বাটলার ঠিক করেছেন যে, আর কোচের দায়িত্বে থাকবেন না তিনি। সাফ জেতার পরের দিনই দেশে ফিরে যাচ্ছেন কোচ বাটলার। যিনি পদ্মাপারের সাংবাদিকদের বলেও গিয়েছেন যে, পেশাদার বলে ফেডারেশনের সঙ্গে চুক্তিকে তিনি সম্মান করবেন। আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত তাঁর চুক্তি রয়েছে। সে দিনই আনুষ্ঠানিকভাবে চুক্তি ভাঙবেন। কিন্তু কাজ আর করবেন না। পেশাদার বলে সাফে দল নিয়ে গিয়েছিলেন। ব্যস। আর এগোবেন না। সাফই তাঁর কোচ হিসেবে শেষ টুর্নামেন্ট!
ওয়াকিবহাল মহলের কেউ কেউ বলছিলেন যে, বাংলাদেশে রাজনৈতিক পালাবদলের প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশের ফুটবল ফেডারেশনের উপরেও। মঙ্গলবারই দেশে ফিরছে সাফ জয়ী বাংলাদেশ মহিলা ফুটবল দল। তাঁদের ছাদখোলা বাসে করে ফুটবল ফেডারেশনের হেড কোয়ার্টারে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনাও রয়েছে। কিন্তু সাবিনাদের প্রাপ্য অর্থ দেওয়া যাচ্ছে না। শুধু মাসিক বেতনই নয়, ম্যাচ ভাতাও ফুটবলারদের দিতে পারছে না বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। সাফে খেলতে যাওয়ার আগে চারটে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছিল বাংলাদেশের মহিলা ফুটবল দল। এমনিতেই প্লেয়ারদের ম্যাচ ফি অত্যন্ত কম। মাত্র পঞ্চাশ ডলার! কিন্তু তাঁদের সেটুকুও দিয়ে উঠতে পারেনি বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। খবর যা, ফেডারেশনের পক্ষ থেকে দ্রুত চেষ্টা করা হচ্ছে প্লেয়ারদের অর্থকড়ি মিটিয়ে দেওয়ার। দেখার, সাবিনা-মণিকা-ঋতুপর্ণারা প্রাপ্য পান কত দিনে।