প্রসূন বিশ্বাস: ভারতীয় ফুটবল ‘সেনসেক্সে’র গ্রাফ ক্রমশ নিম্নমুখী। নামতে নামতে ফিফা ক্রমতালিকায় ১৪২-এ চলে গিয়েছে ভারত। ২২ বছর পর বাংলাদেশের বিরুদ্ধে হারতে হয়েছে খালিদ জামিলের দলকে। বিগত কয়েক বছর ধরে এমন হতশ্রী পারফরম্যান্সের পর ক্ষোভে ফুঁসছেন প্রাক্তনরা। টাটা স্টিল ম্যারাথনের একটি অনুষ্ঠানে এসে ভারতীয় ফুটবলের বর্তমান র্যাঙ্কিং নিয়ে মন্তব্য করেছেন বাইচুং ভুটিয়া। তাঁর মতে, ভারতীয় ফুটবলের দুর্দশা কাটাতে উত্তর-পূর্বের মুখই ভরসা জোগাতে পারে।
প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক বাইচুং ভুটিয়া বলেন, "তিন বছর ধরে আমাদের ফুটবলে অনেক ক্ষতি হয়েছে। যার প্রভাব দলেও পড়েছে। খেলতে না পারলে তো র্যাঙ্কিংয়ে পতন হবেই। এমন চলতে থাকলে তো ফিফার ক্রমতালিকায় আরও পিছিয়ে পড়তে পারে দল। যদি র্যাঙ্কিং দেড়শোতে চলে যায়, অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। কঠিন সময় সামলে উপরে উঠতে গেলে আরও সময় লাগবে।"
ভারতীয় ফুটবলের এমন অবস্থার জন্য ফেডারেশনকে দায়ী করছেন প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক বাইচুং ভুটিয়া। তাঁর কথায়, "ভবিষ্যতে ফেডারেশনে যদি নতুন বোর্ড আসে, তাঁদের সামনে এটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ হবে। হয়তো শূন্য থেকে আবার সবকিছু শুরু করতে হবে। শেষ তিনটে বছর জাতীয় দলের পারফরম্যান্স সমর্থকদের হতাশ করেছে। বিভিন্ন কারণে পরিস্থিতি প্রতিকূল হয়েছে। তবে শীর্ষ আদালতের রায় অনেক পরে এসেছে। আমি তিন বছর ধরে সংবিধান চালুর জন্য অপেক্ষা করেছি। ফলে সংবিধান চালু নিয়ে রায়টা শীর্ষ আদালত তিন বছর আগে দিলে হয়তো পরিস্থিতি অন্য হত। এর দায় বর্তমান সভাপতি কল্যাণ চৌবেকে নিতে হবে।"
ফেডারেশন সভাপতি হিসাবে কল্যাণ চৌবে এত ব্যর্থতার পরও পদত্যাগ করবেন না বলেই ধারণা বাইচুংয়ের। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "আমেরিকায় আগামী বিশ্বকাপ দেখতে যাবে বলে আগেই পদত্যাগ করবে না কল্যাণ। ফেডারেশন সভাপতির টিকিটে বিশ্বকাপ দেখতে যাবে বলেই এখনও পদত্যাগ করেনি।"
'পাহাড়ি বিছে'কে প্রশ্ন করা হয়, সভাপতি হিসাবে নর্থইস্ট থেকে কাউকে দেখতে চান কি না? জবাবে বাইচুং বলেন, "অবশ্যই। স্বাধীনতার পর নর্থইস্ট থেকে কেউই ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনে সভাপতি হয়ে আসেননি। ভারতীয় ফুটবলে উত্তর-পূর্ব ভারতের অবদান অনস্বীকার্য। চাইব, ফেডারেশনের পরবর্তী নির্বাচনে এখান থেকে কেউ সভাপতি হয়ে আসুক। এখান থেকে পরবর্তী এআইএফএফ সভাপতি হওয়ার সময় এসেছে। উত্তর-পূর্ব ভারতের দু'জন মানুষ ফুটবল উন্নয়নে কাজ করছেন। একজন মিজোরাম ফুটবল সংস্থার সভাপতি লালঘিং হামার (তেতে), আরেকজন অরুণাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী প্রেমা খান্ডু। সময় এসেছে, উত্তর-পূর্ব ভারত এগিয়ে নিয়ে যাবে ভারতীয় ফুটবলকে। আশা করব, নতুন প্রশাসনের অধীনে ভারতীয় ফুটবলের উন্নতি হবে।"
উল্লেখ্য, খালিদ জামিল আসার পর কাফা কাপে তৃতীয় হলেও এশিয়ান কাপে যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি ভারত। ১৪ অক্টোবর সিঙ্গাপুরের কাছে ১-২ গোলে হেরে ভারত এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বের দৌড় থেকে ছিটকে গিয়েছিল ভারত। বাংলাদেশের বিপক্ষে 'নিয়মরক্ষার' ম্যাচেও জয়ের মুখ দেখেননি সন্দেশ জিঙ্ঘানরা।
