দুলাল দে: ইস্টবেঙ্গল দল ভালো করার জন্য ঘানা থেকে ফুটবলার এনে সাহায্য করতে চান লাল-হলুদের প্রাক্তন অধিনায়ক সুলে মুসা। আশিয়ান জয়ী অধিনায়কের এইরকম বার্তা যেদিন ইস্টবেঙ্গলের তরফ থেকে প্রকাশ করা হল, সেদিনই ইস্টবেঙ্গল দু'জন বিদেশিকে মোটামুটিভাবে নিশ্চিত করে ফেলেছে। একজন বসুন্ধরা কিংসে অস্কার ব্রুজোর অধীনে আগেই খেলা ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার মিগুয়েল ফেরেইরা আরেকজন সার্বিয়ান ডিফেন্ডার ইভান মিলাদিনোভিচ। এই দু’জন ফুটবলারকে নেওয়া হচ্ছে অস্কার ব্রুজোর পরামর্শে। যে ফুটবলারটির সঙ্গে এতদিন ধরে কথা চলছিল, সেই বিপিন সিংয়ের সঙ্গে দু'বছরের জন্য চুক্তি করে ফেলল।
এই বছর শুরু থেকেই কোমর বেঁধে দল গড়তে নেমেছে ইস্টবেঙ্গল। তারা জানে আর যাইহোক ভালো ফুটবলার না নিতে পারলে সাফল্য আসবে না। তারা পুরোটাই করছে কোচ অস্কার ব্রুজোর পরামর্শ মেনে সঙ্গে হেড অফ ফুটবল থাংবোই সিংটোকে আলোচনায় রেখে। অস্কার ফুটবলারের যে তালিকা দিয়েছেন, সেই ফুটবলারদের সঙ্গে কথা বলছেন তাঁরা। অস্কারের তালিকার প্রথম পছন্দের ফুটবলারকে না পেলে তখন দ্বিতীয় নামের সঙ্গে কথা বলছেন। দ্বিতীয় পছন্দকে না পাওয়া গেলে তখন তার পরের ফুটবলারের সঙ্গে কথা বলছেন সিংটোরা। এভাবেই দল গঠন করছে ইস্টবেঙ্গল। সেক্ষেত্রে শুরুতেই তাঁরা নিশ্চিত করে ফেলেছেন দুই বিদেশি মিগুয়েল আর ইভানকে।
মিগুয়েল বসুন্ধরা কিংসে খেলেছেন অস্কারের কোচিংয়ে। সেন্ট্রাল মিডফিল্ড পজিশনে খেলা এই ব্রাজিলীয় ফুটবলার গত মরশুমে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে ন'টি ম্যাচে পাঁচটি গোল করেছেন। সঙ্গে ছ'টি অ্যাসিস্ট রয়েছে তাঁর। বসুন্ধরার হয়ে গত মরশুমে এসিএল টু কোয়ালিফায়ারে খেলেছেন এই ব্রাজিলিয়ান মিডিও। ব্রাজিলের দ্বিতীয় ডিভিশন ক্লাব গোয়িয়াস থেকে বসুন্ধরা কিংসে এসেছিলেন মিগুয়েল। এই মরশুমে অস্কারের চেয়েছিলেন তাঁকে। অন্যদিকে, অস্কারের পছন্দের আরেক বিদেশি ৩০ বছর বয়সি ইভান মিলাদিনোভিচ খেলেন সেন্টার ব্যাক পজিশনে। এই সার্বিয়ান ফুটবলারটি রক্ষণের পাশাপাশি সাইডব্যাকেও খেলতে পারেন। তিনি এখন খেলছেন কাজাখস্তানের প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্লাব তোবল কাস্তানায়। এই ক্লাবের হয়েই জিতেছেন কাজাখ সুপার কাপও।
হেক্টর ইউস্তে আর ক্লেটন সিলভার পরিবর্তে বিদেশি খুঁজছিলেন লাল-হলুদ ম্যানেজমেন্ট। রক্ষণে হেক্টর শেষ ম্যাচ খেলে ফেলেছেন সুপার কাপে। আর সুপার কাপের কয়েক দিন আগেই ক্লেটন সিলভাকে ছেড়ে দিয়েছে ইস্টবেঙ্গল। ক্লেটনের সঙ্গে কোচ অস্কারের সম্পর্কও ভালো যাচ্ছিল না। এর মধ্যে বিপিন সিং দলে আসায় উইং শক্তিশালী হল বলাই যায়। এবছর আরও কয়েকজন তরুণ ফুটবলারকে পেতে ঝাঁপিয়েছে ইস্টবেঙ্গল। শোনা যাচ্ছে, ইন্টারকাশীর তরুণ ছাব্বিশ বছর বয়সি অ্যাটাকিং ফরোয়ার্ড এডমুন্ড লালরিনডিকাকে নিতে আগ্রহী ইস্টবেঙ্গল। এডমুন্ডকে পেতে চাইছে কেরালা ব্লাস্টার্স, মুম্বই সিটি এফসি ও গোয়া এফসিও। কাশীর সঙ্গে আরও এক বছরের চুক্তি রয়েছে এডমুন্ডের।
ইস্টবেঙ্গল টিম ম্যানেজমেন্ট মনে করছে গত মরশুমেও তাঁরা যথেষ্টই ভালো দল গঠন করেছিলেন। কিন্তু আইএসএলের প্রথম ছ'টি ম্যাচের খারাপ ফলই প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে দিয়েছে তাদের। এই ছয় ম্যাচ থেকে কোনও পয়েন্ট তুলে আনতে না পারায় আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি দল। যে কথা বারবার বলেওছেন বর্তমান কোচ অস্কার ব্রুজোও। তার সঙ্গে আরও একটি বিষয়কে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। দলের ফিটনেসের দিকটা। গতবার বারবার চোটের কবলে পড়তে হয়েছে লাল-হলুদের গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলারদের। অন্য দলের থেকে ফিজিক্যাল ফিটনেসে বেশ পিছিয়ে ছিলেন তারা। গতবারের গতবারের ফিজিও আর ফিটনেস ট্রেনারকেও তাই বদলে দেওয়া হয়েছে এই মরশুমে। গত মরশুমের ভুল শুধরে এই মরশুমে যে কোনও মূল্যে ভালো ফল করতে মরিয়া লাল-হলুদ ব্রিগেড।
