সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হার্সেউইঙ্কিলে তখন সবে পর্তুগালের অনুশীলন শেষ হয়েছে। একে একে মাঠ ছাড়ছেন ফুটবলাররা। এর মধ্যেই মাঠে ঢুকে পড়লেন কয়েকজন দর্শক। প্রত্যেকেরই লক্ষ্য এক। ছয় ফুট দুই ইঞ্চির মানুষটাকে ছুঁয়ে দেখা। নিরাপত্তাকর্মীদের বাধা কাটিয়ে একজন প্রায় পৌঁছেও গিয়েছিলেন অভীষ্ট লক্ষ্যে। তবে নিখুঁত দক্ষতায় পর্তুগিজ গোলকিপার জোসে সা সরিয়ে নিয়ে গেলেন তাঁকে।
আসলে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোকে নিয়ে অনুরাগীদের পাগলামো যে সারা বিশ্বে একই রকম। জার্মানির এই ছোট্ট শহরও তার ব্যতিক্রম নয়। না হলে কেনই বা কেউ পর্তুগালের প্র্যাকটিস সেশনে গ্যালারিতে বসার জন্য হাজার ইউরো খসাতে রাজি হবেন? আর কেনই বা এভাবে মাঠে ঢুকে পড়বেন?
[আরও পড়ুন: এমবাপের কটাক্ষের পালটা জবাব, কোপার আগে ব্রাজিল তারকার মুখে মেসিদের ‘প্রশংসা’!]
রোনাল্ডো অবশ্য এই উন্মাদনা নিয়ে তেমন ভাবনাচিন্তা করছেন না। বরং তাঁর মননে শুধুই রয়েছে ইউরো জয়ের পরিকল্পনা। আর সেই কাজে দলের তরুণ ব্রিগেডের উপরেই ভরসা রাখছেন তিনি। আট বছর আগে যাঁদের সঙ্গী করে ইউরোপ সেরা হয়েছিলেন সিআর, তাঁদের একটা বড় অংশই এখন অবসরের বৃত্তে। রুই প্যাট্রিসিও, পেপে, দানিলো ছাড়া আর কেউই নেই সেই দলের থেকে। বরং গনসালো র্যামোস, নুনো মেন্ডেস, আন্তোনিও সিলভা, জোয়াও নেভেসের মতো একঝাঁক তরুণ মুখ রয়েছে স্কোয়াডে।
আর এই তরুণ দলের উপরেই ভরসা রাখছেন সিআর। মঙ্গলবার রাতে চেক প্রজাতন্ত্রের বিরুদ্ধে ইউরো অভিযান শুরু করবে পর্তুগাল। তার আগে এক সাক্ষাৎকারে রোনাল্ডো বলেছেন, “আমি মনে করি, পর্তুগালের বর্তমান প্রজন্ম ইউরোর মতো ট্রফি জেতার যোগ্য। সবাই প্রশ্ন করছে, আমরা কি সেমিফাইনাল খেলব? আমি আশা করছি এই দলটা তার থেকেও ভালো ফল করবে।”
তবে সেই সাফল্য পাওয়ার কক্ষপথও নির্ধারণ করে দিয়েছেন সিআর, “আমাদের ধাপে ধাপে এগোতে হবে। সব মুহূর্তকে উপভোগ করে, ঠাণ্ডা মাথায়, নিজেদের দায়িত্ব পালন করতে হবে। যেভাবে এতদিন করে এসেছি। আমি নিশ্চিত, সেটা করতে পারলে সাফল্য আসবেই।”
কাতার বিশ্বকাপে তাঁকে রিজার্ভ বেঞ্চে রাখা নিয়ে বিতর্ক হয়েছে পর্তুগাল শিবিরে। যদিও এই ইউরোয় দলের প্রয়োজনে বাইরে বসতেও রাজি পর্তুগিজ মহাতারকা। চেকদের বিরুদ্ধে মাঠে নামলেই নতুন রেকর্ড গড়বেন রোনাল্ডো। গ্রহের প্রথম ফুটবলার হিসাবে খেলে ফেলবেন হাফডজন ইউরো। সঙ্গে করতে পারেন আরও কয়েকটা রেকর্ড। যদিও রেকর্ড বা গোল নয়, চল্লিশ ছুই ছুই বয়সে ফুটবল উপভোগই প্রাধান্য পায় রোনাল্ডোর কাছে।
“আমি ফুটবল ভালোবাসি। রেকর্ড তো এমনিই তৈরি হয়ে যায়। আর গোলও করে ফেলি স্বাভাবিকভাবে। এটা আমার ষষ্ঠ ইউরো। ফলে যতটা সম্ভব ভালোভাবে উপভোগ করতে চাই। ভালো খেলতে চাই। দলের জয়ে অবদান রাখতে চাই,” বলছিলেন পর্তুগিজ মহাতারকা, “এবার শুরুটা ভালো হওয়া দরকার। আমি খেলার জন্য তৈরি। ইউরোর জন্য নিজেকে তৈরি করেছি আমি। এবার শুধু ম্যাচের অপেক্ষা।”
সত্যিই তাই। কোটি কোটি সিআর-উপাসকও অপেক্ষা করছেন রোনাল্ডোর মাঠে নামার।