সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: উচ্চতা বিচারে ‘দ্য ওয়েস্টইন’ হোটেল জার্মানির শহর লিপজিগে দ্বিতীয়। এতটাই জাঁকজমকপূর্ণ, এতটাই অভিজাত সে হোটেল। কিন্তু সোমবার ইউরোপীয় সময় দুপুর থেকে সে হোটেলের আশেপাশে দিয়ে কারও পক্ষে যাওয়া সম্ভব হয়নি। হোটেলের প্রবেশ-দ্বারের সামনে দু’মিটার উঁচু ‘কনস্ট্রাকশন ফেন্স’ দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়। কাক-পক্ষীও যাতে না ঢুকতে পারে।
করার নেই কিছু। ‘দ্য ওয়েস্টইন’-এ ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো উঠেছেন যে!
জার্মানি ইউরোয় এখনও নামেননি পর্তুগালের ফুটবল-মহামানব। নামবেন আজ রাতে। চেক প্রজাতন্ত্রের বিরুদ্ধে। এবং নামা মাত্র একটা রেকর্ড করে ফেলবেন সিআর। পৃথিবীর প্রথম ফুটবলার হিসেবে ছ’টা ইউরো খেলার রেকর্ডের মালিকানা নিয়ে ফেলবেন তিনি। সোমবার রাতে সিআর সেভেন তাই ঘুমোতে পারবেন কি না, কে জানে। এমনিই খেলার আগের দিন তাঁর ভালো রকম টেনশন হয়। পেটে গুড়গুড় করে। আজও। এই উনচল্লিশের কেরিয়ার-সায়াহ্নেও করে। খেলার আগের দিন।
[আরও পড়ুন: তিন বছরের চুক্তিতে ইস্টবেঙ্গলে ডেভিড, শক্তি বাড়ল লাল-হলুদের আক্রমণভাগে]
খেলার দিন। পর্তুগাল– তারাও তো তার শ্রেষ্ঠ ফুটবল-পুত্রের দিকে তাকিয়ে রয়েছে। তা সে লোকে যতই রোনাল্ডোর বয়স নিয়ে চর্চা চালাক। কথা বলুক। পর্তুগাল কোচ রবার্তো মার্টিনেজ সোমবার প্রাক্ ম্যাচ সাংবাদিক সম্মেলনে বলে গেলেন, ‘‘এটুকু জোর দিয়ে বলতে পারি, নিজের দক্ষতায় জাতীয় দলে জায়গা করে নিয়েছে ক্রিশ্চিয়ানো। দেশের জার্সিতে দারুণ ধারাবাহিকতা দেখিয়েছে। যোগ্যতা অর্জন পর্বে ন’টা গোল করেছে। রোনাল্ডো বুঝিয়ে দিয়েছে যে, ও জাত স্কোরার। যে কি না আক্রমণকে নেতৃত্ব দিতে পারে। ফাঁকা জায়গা তৈরি করে নিতে পারে।’’ দিন কয়েক আগে রোনাল্ডো বলেছিলেন যে, পর্তুগালের বর্তমান স্বর্ণ-প্রজন্মের এবার আন্তর্জাতিক শিরোপা প্রাপ্য। ইউরোপ জয় এই টিমের করা উচিত। মার্টিনেজকে এ নিয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলে গেলেন, ইউরো জিততে তাঁর অধিনায়কই ভরসা। বলছিলেন, ‘‘গ্রুপের তিনটে ম্যাচেই আমাদের দেখাতে হবে, আমরা কোন মানের ফুটবল খেলতে পারি। তবে ইউরো জিততে গেলে ক্রিশ্চিয়ানোর অভিজ্ঞতা আমাদের দরকার। একমাত্র ওরই পাঁচটা ইউরো খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে। এবারেরটা নিয়ে ওর ছ’নম্বর ইউরো হবে।’’ জাতীয় দলে রোনাল্ডোর প্রাক্তন সতীর্থ নুনো গোমস আবার বলে রেখেছেন, ‘‘ইউরোর সর্বোচ্চ গোলদাতা হবে এবার রোনাল্ডো।’’
আর সিআর নিয়ে এ হেন আশাবাদের ফানুসকেই ফুটো করে দিতে চান চেক প্রজাতন্ত্র কোচ ইভান হাসেক। যিনি শপথ নিচ্ছেন রোনাল্ডো-সহ পুরো পর্তুগাল টিমটাকেই থামানোর। যে টিমে একা ক্রিশ্চিয়ানো নন। জোয়াও ফেলিক্স। দিয়েগো দালোত। ব্রুনো ফার্নান্ডেজ। বার্নার্ডো সিলভা। দিয়েগো জোটার মতো অসামান্য সমস্ত প্লেয়ার রয়েছেন। হাসেক বলেছেন, ‘‘পর্তুগালের প্লেয়ারদের গোটা বিশ্ব চেনে। আমাদের চেনে না। কিন্তু আমাদের তো পর্তুগালকে জিততে দিলে চলবে না। বরং একটা টিম হিসেবে লড়তে হবে। আমরা তৈরি। পর্তুগালের প্লেয়াররা বিশ্বের বড় বড় ক্লাবে খেলে। ওরা টুর্নামেন্ট জেতার ব্যাপারে অন্যতম ফেভারিটও। কিন্তু জিততে আমরাও চাই। রোনাল্ডোকে আমরা থামাতে চাই।’’
দেখা যাক, শেষ পর্যন্ত কী হয়? দেখা যাক, শেষ হাসি কে হাসে আজ রাতে?