প্রসূন বিশ্বাস: গড়াপেটার অভিযোগে গ্রেপ্তার খিদিরপুর ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত দুই ফুটবল কর্তা। ময়দানের তিন বড় ক্লাবের কর্তারা এই পদক্ষেপে খুবই খুশি। এদিন তিন প্রধানের কর্তারাই কলকাতা পুলিশের এই পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। গত কয়েক বছর ধরেই ঘরোয়া লিগে গড়াপেটার অভিযোগ উঠছিল। বড় ক্লাবের কর্তারা মনে করছেন, এখানেই থেমে থাকা নয়। ক্যান্সারের মতো এই ফিক্সিংয়ের রোগকে ময়দান ছাড়া করতে এভাবেই এগিয়ে যাক কলকাতা পুলিশ।
এদিন মোহনবাগান সচিব সৃঞ্জয় বোস বলেন, “আমি প্রথম থেকেই বলে আসছি শেষ দু-তিন বছর ধরে। আইএফএ-কে প্রথম চিঠি দিয়েছিলাম ২০২৩ সালে। তখন কেউ পাত্তা দিত না। আমরা যারা কষ্ট করে দল গড়তাম, তাঁরা বুঝতাম কিছু একটা গোলমাল ঘটছে। আমার মনে হয় এই গ্রেপ্তারগুলো সঠিক পদক্ষেপ। যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, আমাদের কাছেও এমনটাই খবর ছিল। শেষপর্যন্ত পুলিশ উঠেপড়ে লেগেছে। আইএএফরও এটায় চোখ খোলা উচিত। আইএফএ এতদিন চুপ করে বসেছিল। আরও আগে পদক্ষেপ করলে বাংলার ফুটবলেরই ভালো হত। তবে যাই হোক দেরি হলেও ভালো কাজ। আমি বলব পুরো সিস্টেমটাই পরিষ্কার করা উচিত। এখানেই থেমে থাকা নয়।" তিনি আরও যোগ করেন, “প্রতিটা দলে এই ফিক্সাররা একটা-দুটো করে লোকের সঙ্গে সংযোগ রাখত। নয়তো ফুটবলারদের কাছে পৌঁছত কীভাবে? সেগুলো সামনে আসা উচিত। ফুটবলে যাঁরা টাকা খরচ করেন, তাঁরা খুব কষ্ট করেই দল গড়েন। তাঁদের প্রচেষ্টা এভাবে নষ্ট হওয়া উচিত নয়। সবাই একসঙ্গে মিলেমিশে স্থানীয় ফুটবলের এই উইপোকাটাকে তাড়ানো উচিত।”
ইস্টবেঙ্গল শীর্ষ কর্তা দেবব্রত সরকার বলেন, “এটার প্রথম কৃতিত্ব দেব আইএফএ-কে। তারপর কৃতিত্ব দেব ক্রীড়ামন্ত্রীর। উনি চেয়েছিলেন এটা সবার সামনে আসুক। পুলিশ কমিশনারকেও অজস্র ধন্যবাদ। সারা বিশ্বে যেভাবে এই নোংরা গড়াপেটার খেলা চলছে, ভারতবর্ষের মধ্যে প্রথম বাংলা দেখাল কীভাবে সেই গড়াপেটার বিরোধিতা করা যায়। আমি আশা রাখি এটারও সমাপ্তি ঘটবে। আমার ধারণা শুধু এরা দু’জনই নয়, এটা একটা সমুদ্রের মতো। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ এখানেই থেমে থাকলে চলবে না। স্পোর্টসকে এভাবে কালিমালিপ্ত করা কখনই যাবে না। সবাইকে এক হয়ে এই নোংরা খেলার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।”
মহামেডান কার্যকরী সভাপতি কামারউদ্দিন বলেন, “ম্যাচ ফিক্সিংমুক্ত ময়দান করতে হবে। এভাবে কখনও চলতে পারে না। খুব ভালো হয়েছে এরা ধরা পড়েছে।” ইউনাইটেড কর্তা নবাব ভট্টাচার্য বলেন, "এটা একটা আনন্দের দিন। ফিক্সার ধরা পড়েছে এটা আনন্দের দিন। আমি মনে করি, যদি তদন্তে এরা দোষী প্রমাণিত হয় তাহলে কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত। ফিক্সার নামক এই ক্যান্সারকে ময়দানমুক্ত করতে হবে।"
