শিলাজিৎ সরকার: আইএসএলে শুরুটা খারাপ হয়নি মহামেডানের। প্রথম তিন ম্যাচ থেকে সংগ্রহ ছিল চার পয়েন্ট। কিন্তু মোহনবাগানের কাছে ডার্বিতে বিধ্বস্ত হওয়ার পর ছন্দ হারিয়েছে সাদা-কালো শিবির। ঘরের মাঠে হারতে হয়েছে কেরালা ব্লাস্টার্স ও হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে। টলমল করছে কোচ আন্দ্রে চেরনিশভের আসন। এবার সামনে ইস্টবেঙ্গল। আরও একটা ডার্বি। তার আগে অবশ্য চেরনিশভ তাঁর ভবিষ্যৎ নিয়ে বিন্দুমাত্র চিন্তিত নন।
ইস্টবেঙ্গল সদ্য এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের ছাড়পত্র অর্জন করেছে। লাল-হলুদ বাহিনী অবশ্য আইএসএলে হারের ডবল হ্যাটট্রিক করেছে। কিন্তু এএফসি-র সাফল্যের পর তেতে রয়েছে অস্কার ব্রুজোর ছেলেরা। এই পরিস্থিতিতে মহামেডান কোচকে ভরসা জোগাচ্ছে প্রথম তিন ম্যাচ। যেখানে যথেষ্ট আক্রমণাত্মক খেলেছিলেন কাসিমোভরা। মহামেডান কোচের বক্তব্য, "হাই প্রেসিং ফুটবলে আক্রমণের প্লেয়ারদের উপর অনেক দায়িত্ব থাকে। তারা যদি বিপক্ষের উপর চাপ না তৈরি করতে পারে, তাহলে ডিফেন্সেও সমস্যা হয়। দুটোর তালমিল এখনও হয়নি। এটা ঠিক যে আমরা প্রচুর গোল খেয়েছি। কিছু গোল তো নিজেদের ভুলে হজম করেছি। সবাই এখন শেষ তিন ম্যাচ নিয়ে কথা বলছে। কিন্তু কেউ প্রথম ম্যাচগুলোর কথা বলছে না। ওখানে আমরা ভালো ফুটবল খেলেছিলাম। আমরা আবার সেরকম খেলব।"
চেরনিশভ যাই বলুন না কেন, ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে হারলে আরও চাপ বাড়বে তাঁর উপর। ইতিমধ্যেই কোচ বিদায়ের গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। মহামেডান কোচ অবশ্য সেসব পাত্তা দিতে নারাজ। তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, "ইন্টারনেট বিষয়টা আমার পছন্দ নয়। মিডিয়া নিয়েও একই বক্তব্য। আমি জানি না এই ম্যাচের পর কী হবে? হয়তো সবাই বলবে, আমিই মহামেডানের সেরা কোচ। কিংবা বলবে আমি ততটাও ভালো নই। এসব আমি ভাবি না। আমি এর আগেও নিজের কাজ দায়িত্ব নিয়ে করেছি। আবারও সেটাই করব। এই তো এখন আন্সেলোত্তিকে নিয়েও এত চর্চা। কিন্তু উনি রিয়ালকে দুবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতিয়েছেন। এটাই ফুটবল। এটাই জীবন। কোচেদের সব পরিস্থিতির জন্য তৈরি থাকতে হয়।"
কিন্তু গলদ কোথায় হচ্ছে? সেটাও ধরে ফেলেছেন তিনি। আর তার জন্য চেরনিশভ দায়ী করছেন প্লেয়ারদের আইএসএলে অনভিজ্ঞতাকে। তিনি বলেন, "মরশুমের শুরুতেই আমি বলেছিলাম, আমাদের দল তরুণ। আইএসএলে প্রথমবার খেলছি। আমাদের দলে প্রচুর তরুণ ফুটবলার আছে। যাদের বয়স ২৮-২৯, তারাও আগে আইএসএল খেলেনি। ২-৩ ম্যাচ খারাপ হওয়াটা খুব স্বাভাবিক একটা ব্যাপার। সমর্থকদের আবেগ বুঝি। কিন্তু ৩-৪ মাসে শক্তিশালী দল তৈরি করা সম্ভব নয়। তার জন্য ৬ থেকে ৮ মাস প্রয়োজন। একটা গোটা মরশুমও লাগতে পারে।" কিন্তু পরিস্থিতি যেদিকে তাতে এতটা সময় নাও পেতে পারেন তিনি। ইস্টবেঙ্গল ম্যাচ থেকেই জয়ে ফেরার কাজ শুরু করতে হবে চেরনিশভকে।