সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ৩৭-এ পা দিলেন লিওনেল মেসি। এখন তিনি রয়েছেন আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের (Argentina Football Team) সঙ্গে। ফের দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে হবে কোপা আমেরিকা। প্রতিজ্ঞাবদ্ধ সকলেই।
ফিরে যাওয়া যাক বছর তিনেক আগে। সেবার ফাইনালে ব্রাজিলের সামনে আর্জেন্টিনা। আসলে তো সব নজর একজনের দিকেই। মাঠে হলুদ জার্সির নেইমার থাকলেও হাজার রঙের আলো এসে পড়ে একজনের উপরেই। তাঁর জার্সির রং নীল-সাদা। জার্সির নম্বর ১০। এর আগেও কোপা ফাইনালে খেলেছেন তিনি। কিন্তু চোখের জল ছাড়া কিছুই নিয়ে ফেরেননি। ২০২১-র ফাইনালটা অবশ্য লেখা রইল লিওনেল মেসির (Lionel Messi) জন্য।
তিনি জিতলেন, শুরু হল অন্য এক জয়যাত্রা। তার পর ফাইনালিসিমা। সবশেষে ২০২২-এ বিশ্বকাপ। আর্জেন্টিনার জার্সিতে তিনি ব্যর্থ। মুছে গেল এই তকমা। কিন্তু তার জন্য পেরিয়ে আসতে হয়েছে ২০১৪-র বিশ্বকাপ ফাইনাল, ২০১৫, ২০১৬ কোপা ফাইনাল হারের যন্ত্রণা। পথটা তো সহজ ছিল না। কাঁটায় ক্ষতবিক্ষত পা নিয়েই লক্ষ্যভেদ করেছেন মেসি। সাম্প্রতিক সাফল্য যতটা আলোচনা হয়, ঠিক ততটাই যেন হারিয়ে যায় ব্যর্থতার গল্পরা। সেই দিনগুলোই তো শিখিয়েছে যুদ্ধজয়ের পথ।
[আরও পড়ুন: অঙ্কের জটিলতা নয়, অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়েই সেমিফাইনালে যাওয়ার পরিকল্পনা রোহিতদের]
চলতি কোপা আমেরিকা (Copa America 2024) সেই বৃত্ত সম্পূর্ণ করার মুখে দাঁড়িয়ে আছে। ফের তাঁর হাতে ট্রফি উঠবে কিনা পরের কথা। কিন্তু নতুন প্রজন্মের আর্জেন্টিনাকে সঙ্গে নিয়ে যে মেসি সর্বস্ব দিয়ে ঝাঁপাবেন সে কথা বলাই বাহুল্য। সম্ভবত এটাই তাঁর শেষ আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট। ২০২৬-এর বিশ্বকাপে খেলবেন কিনা, সেটা নিয়ে মেসির নিজেরও সংশয় রয়েছে। বারবার স্বীকারও করেছেন সেটা। ফলে কোপার ফাইনালে পরপর দুবার খালি হাতে ফেরার যন্ত্রণা টানা ট্রফি জিতেই ভুলতে চাইবেন।
৩৭ তম জন্মদিনে (Lionel Messi Birthday) সেটা হতে পারে তাঁর প্রথম শপথ। সতীর্থরাও চাইবেন তাঁকে ট্রফি উপহার দিতে। কিন্তু তার আগেই অবশ্য নতুন 'শপথ'-এর কথা জানালেন তিনি। সেই ছোটবেলায় চলে গিয়েছিলেন বার্সেলোনায়। দীর্ঘদিন পর্যন্ত স্পেনই ছিল তাঁর ঘর-সংসার। সেই কারণে স্প্যানিশ ছাড়া অন্য কোনও ভাষায় কথাও বলেন না ৮ বারের ব্যালন ডি'অর জয়ী তারকা। কিন্তু এখন তিনি খেলেন আমেরিকার ইন্টার মিয়ামিতে। যেখানে ইংরেজিই প্রধান ভাষা। সেটা নিয়ে একটি সাক্ষাৎকারে মেসি বলেন, "সত্যি কথাটা হল, আমি ইংরেজিটা ভালোই বুঝি। ধীরে ধীরে কথা বলাও শুরু করেছি। তবে এখনও সাহস করে উঠতে পারি না। যদি কোনও ভুলভ্রান্তি হয়, সবার সামনে অস্বস্তিতে পড়ি। সেটা নিয়ে এখনও মাঝে মাঝে খুব ভয় পাই। তাই ইংরেজিতে কথা বলি না। তবে আমি কথা বলা শুরু করেছি।"
[আরও পড়ুন: গম্ভীর কোচ হলেই কি ভারতীয় ক্রিকেটে শেষ রোহিত-বিরাট যুগ? জল্পনা তুঙ্গে]
সেই সাক্ষাৎকারে তিনি তুলে এনেছেন স্ত্রী আন্তোনেল্লার কথাও। ১৩ বছর বয়সে স্পেনে চলে গেলে দূরত্ব বাড়তে থাকে। যোগাযোগের আর কোনও উপায়ও ছিল না। ফলে প্রায় চার বছর কথাবার্তা বন্ধ ছিল। পরে অবশ্য ফের রূপকথার রাজা-রানির মতো দেখা হয় তাঁদের। দীর্ঘ প্রেমকাহিনির পর ২০১৭-এ বিয়েও হয়। ফুটবলের বাইরে পরিবারই যেন সব মেসির কাছে। কোপা হোক বা বিশ্বকাপ, স্ত্রী-সন্তানরাই তাঁর শক্তি। এবারের কোপা আমেরিকায় কি সেই স্বপ্নমূহূর্ত ফেরাতে পারবেন তিনি? তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে আরও কিছুদিন।