সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইটালির রেনেসাঁস না কি ফরাসি বিপ্লব? চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনাল নিয়ে উত্তর খুঁজছিল ফুটবলপ্রেমীরা। আসলে শেষবার ইটালিতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ঢুকেছিল ১৬ বছর আগে। ইন্টার মিলানের হাত ধরেই। আর ফ্রান্সের কোনও ক্লাব জিতেছিল ৩২ বছর আগে। মার্সেইয়ের পর বহুবার চেষ্টা করেও আর কোনও ফরাসি ক্লাব বিপ্লব ঘটাতে পারেনি। অবশেষে নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতল প্যারিস সাঁ জাঁ। মিউনিখের ফাইনালে ইন্টার মিলানকে কার্যত মাটি ধরাল ৫-০ গোলে হারিয়ে। ইউসিএলের ফাইনালে এর আগে এরকম আধিপত্য দেখা যায়নি।
ফ্রান্সের লিগে বরাবরই দাপট পিএসজি'র। অধরা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের জন্য মেসি-নেইমার-এমবাপের ত্রিফলাও জড়ো করেছিল। তিন মহাতারকা যা করে দেখাতে পারেনি, সেই অসাধ্যসাধন করে দেখাল লুইস এনরিকের ছেলেরা। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সফরের শুরুটা ভালো হয়নি। কিন্তু শেষটা হল হাসিমুখেই। মিউনিখের ফাইনালে ১২ মিনিটে পিএসজি'কে এগিয়ে দেন আচরাফ হাকিমি। ২০ মিনিটে দ্বিতীয় গোল দেসিরে দুয়ের। ফুটবল মহলে বিস্ময় প্রতিভা লামিনে ইয়ামালকে নিয়ে যতটা চর্চা হয়েছে, তার তলায় ঢাকা পড়ে গিয়েছেন ১৯ বছরের এই ফরাসি প্রতিভা। সম্ভবত সেরার মঞ্চে সেটারই জবাব দিলেন। মজার বিষয়, যে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ের জন্য এমবাপে পিএসজি রিয়ালে গেলেন, তাঁর আগেই ইউরোপ সেরা হল ফ্রান্সের ক্লাব। ছিনিয়ে নিল ত্রিমুকুটও।
৫৪ মিনিটে বাধ্য হয়েই ডিফেন্ডার ডিমার্কোকে বসাতে বাধ্য হন ইন্টার কোচ সিমিওনে ইনজাঘি। মূলত তাঁর দিক থেকেই দুটি গোল হজম করে ইটালির ক্লাব। কিন্তু তাতেই বা পালটা আঘাত দেওয়া হল কোথায়? বরং ৬৩ মিনিটে ফের গোল দুয়ের। ৭৩ মিনিটে ৪-০ করেন খিভিচা কাভারাস্কেলিয়া। জর্জিয়ার এই তারকা এর আগে নাপোলির হয়ে ইটালি সেরা হয়েছিলেন। ফ্রান্সে এসেও ফুল ফোটাচ্ছেন। ৮৬ মিনিটে ইন্টারের কফিনে শেষ পেরেকটি পোঁতেন সেনি মায়ুলু। এর আগে ১৯৯৩-৯৪ মরশুমে এসি মিলান চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছিল ৪-০ গোলে। আর তাদের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইন্টার এবার গড়ল ফাইনালে সবচেয়ে বেশি গোলে পর্যুদস্ত হওয়ার লজ্জার রেকর্ড।
পিএসজি'র হয়ে গোল না পেলেও জোড়া অ্যাসিস্ট করেন উসমান ডেম্বেলে। সম্ভাব্য ব্যালন ডি'ওরের তালিকায় তাঁর নামও সেভাবে চর্চিত নয়। চোট-আঘাতের প্রবণতা পার করে প্যারিসের ক্লাবের সাফল্যের নেপথ্যে ডেম্বেলের ভূমিকাই সবচেয়ে বেশি। আর অবশ্যই বলতে হয় লুইস এনরিকের কথা। তাঁর কোচিংয়ে ত্রিমুকুট জিতল পিএসজি। এর আগে বার্সেলোনাকে ত্রিমুকুট দিয়েছিলেন। দুটি ক্লাবের হয়ে ট্রেবল জেতার একমাত্র নজির এখন এনরিকের হয়েই।
