সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গোরক্ষকদের দাদাগিরির খবর আকছার পাওয়া যায় উত্তর ভারতের রাজ্যগুলি থেকে। কখনও রাজস্থান, কখনও ঝাড়খণ্ড, কখনও খাস রাজধানী দিল্লি, গোহত্যার অভিযোগে সংখ্যালঘুদের প্রাণ কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ এখন নিত্যনৈমিত্তিক। কিন্তু এ যেন এক উলট পুরাণ। গরুদের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করেছেন মধ্যপ্রদেশের মুসলিম গৃহবধূ মেহেরুন্নেসা খান। জাতীয় গো-সেবা সমিতির রাজ্য সভাপতির পদও পেয়েছেন তিনি। আর তাতেই খাপ্পা তাঁর পরিবার। মেহেরুন্নেসার অভিযোগ, গরুর দেখাশোনা করার জন্য স্বামী-সহ পরিবারের অন্য সদস্যরা তাঁকে প্রাণে মারার হুমকি দিচ্ছে।
[আইটেম ডান্সার স্বপ্না চৌধুরিকে ‘অশ্লীল’ ইঙ্গিত করলেন বিজেপির বিধায়ক]
মেহেরুন্নেসা বলেন, ‘যেদিন আমি এই কাজে যোগ দিয়েছি সেদিন থেকেই আমি প্রাণনাশের হুমকি পাওয়া শুরু করেছি। শুধু বাইরের লোক নয়, আমাকে হুমকি দিয়েছে আমার পরিবারের লোকেরাও। পরিস্থিতি এতটা খারাপ হয়ে গিয়েছিল যে, আমি বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছি। তা সত্ত্বেও অব্যাহত হুমকি দেওয়া। এখনও আমাকে বলা হয়, গরুর সেবা করা নাকি পরিবারের মান-সম্মানের পরিপন্থী।’ মেহেরুন্নেসা আজও বুঝতে পারেননি অবলা জীবের সেবা করলে কীভাবে পরিবারের সম্মানহানি হয়।
[পরপর ছয় মেয়ের জন্ম, রাগের মাথায় শিশুকে ছুরির কোপ বাবার]
তবে, এসব হুমকি সত্ত্বেও থামতে রাজি নন মেহেরুন্নেসা। ঘর-পরিবার হারিয়ে আপাতত নিমুচ জেলায় একটি গো-শালা তৈরি করেছেন মেহেরুন্নেসা। হাজার হুমকি পেলেও তিনি এই কাজ চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘অবলা প্রাণীগুলির সেবা করতে পারলে আমি মানসিক শান্তি পাই। আমি গো-সেবা চালিয়ে যাব, হুমকিতে থেমে যাব না কোনওদিন। আগামিদিনে মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য আমি উদাহরণ হয়ে থাকতে চাই।’
[মেয়েকে অপহরণ করেছেন বিজেপি বিধায়ক, চাঞ্চল্যকর অভিযোগ প্রাক্তন সেনাকর্মীর]
গোরক্ষকদের দাদাগিরির জন্য অনেকাংশে সমালোচিত বিজেপি সরকার। কোথাও এই ধরনের ঘটনা ঘটলেই আঙুল তোলা হয় সরকারের দিকে। শাস্তির দাবি জানানো হয় গোরক্ষকদের। কিন্তু মেহেরুন্নেসার সঙ্গে যা হয়েছে তাঁর প্রতিবাদে কেউ প্রকাশ্যে আসেনি কেন, প্রশ্ন মেহেরুন্নেসার বাবা-মায়ের।
The post গো-সেবা করা ‘অপরাধ’, মুসলিম মহিলাকে তাড়িয়ে দিল পরিবার appeared first on Sangbad Pratidin.