দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: সুন্দরবনের জঙ্গলে ব্যাপক গুলির লড়াই। চোরাশিকারিদের হাতে খুন বনদপ্তরের কর্মী। শনিবার রাতে বোট নিয়ে জঙ্গল সংলগ্ন নদীতে টহল দেওয়ার সময় হরিণ শিকারীদের মুখোমুখি হন বনকর্মীরা। তখনই দুষ্কৃতীরা গুলি চালায়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় বনদপ্তরের ওই কর্মীর। তাঁর মাথায় কুড়ুলের আঘাতের চিহ্নও রয়েছে।
বনদপ্তর ও পুলিশ সূত্রে খবর, নিহত বনকর্মীর নাম অমলেন্দু হালদার (৫৯)। রায়দিঘির বাসিন্দা। জানা গিয়েছে, শনিবার সন্ধেয় বোট নিয়ে বের হয়েছিলেন অমলেন্দু বাবু। সঙ্গে ছিলেন আরও তিনজন কর্মী ও বোটের ২ কর্মী। সুন্দরবনের বিদ্যা রেঞ্জে অফিসের অধীনে নেতাধোপানি ক্যাম্প এলাকার জঙ্গলে হরিণ শিকারিরা তাঁদের মুখোমুখি পড়ে যায় বলে খবর। তখনই দুপক্ষের মধ্যে ব্যাপক গুলির লড়াই হয়। চোরাশিকারিদের ছোড়া গুলি লাগে অমলেন্দুবাবুর শরীরে। যদিও পরে তাঁকে কোপানো হয় বলেও মনে করা হচ্ছে। কারণ তাঁর মাথায় কুড়ুলের গভীর ক্ষতচিহ্ন রয়েছে। দেহ উদ্ধার করে সুন্দরবন কোস্টাল থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ময়নাতদন্তে পাঠানো হচ্ছে দেহ।
[আরও পড়ুন: কাল কালবৈশাখী, সপ্তাহের শুরু থেকেই রাজ্যজুড়ে ঝড়জল, কমবে গরম?]
শনিবার সন্ধের এই ঘটনার পর থেকে খোঁজ ছিল না অমলেন্দুবাবুর সঙ্গীদের। তবে এদিন সকালে তাঁরা সকলেই ক্যাম্পে ফিরে এসেছেন। এই ঘটনার পর বনকর্মীদের সমস্ত ছুটি বাতিল করা হয়েছে। দুষ্কৃতীদের খোঁজে জঙ্গলে শুরু হয়েছে তল্লাশি। নেতাধোপানি ক্যাম্প থেকে বাংলাদেশ সীমান্তের দূরত্ব বেশি নয়। ফলে চোরাশিকারিরা আদপে বাংলাদেশের জলদস্যু ছিল কিনা, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনাপ্রসঙ্গে রাজ্যের মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) দেবল রায় বলেন, "আমাদের একজন কর্মী মারা গিয়েছেন। বাকিরা সুরক্ষিতভাবে ফিরে এসেছেন। বিষয়টির সঙ্গে বাংলাদেশি জলদস্যু নাকি অন্য কেউ জড়িত, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দুর্গম এলাকায় ঘটনাটি ঘটায় তদন্তে সময় লাগছে।"
নেতাধোপানি ক্যাম্পটি সুন্দরবনের কোর এলাকায়। সাম্প্রতিক অতীতে বহু নেতা-মন্ত্রী সেখানে রাত্রিবাস করেছেন। কিন্তু এই ঘটনার পর জঙ্গলের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেল।