বিপ্লবচন্দ্র দত্ত, কৃষ্ণনগর: যুগ এগিয়েছে। তবে মননে কি সত্যিই আমরা এগিয়েছি? একের পর এক নানা ‘বর্বর’ ঘটনায় আবারও উঠছে একই প্রশ্ন। নদিয়ার (Nadia) কৃষ্ণনগরের গোয়ারিবাজারে প্রাক্তন বিজেপি (BJP) নেত্রীর নীতিপুলিশি নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
ঠিক কী ঘটেছে? কৃষ্ণনগর গোয়ারিবাজার এলাকায় গত বুধবার যুগল ঘোরাফেরা করছিল। তাদের বাধা দেন প্রাক্তন বিজেপি নেত্রী বাবলি মুখোপাধ্যায়। কেন যুগলের ঘোরাফেরায় বাধা দিলেন ওই বিজেপি নেত্রী? কারণ, করিমপুরের বাসিন্দা ওই তরুণ মুসলমান পরিবারের সন্তান। কিশোরী হিন্দু পরিবারের সন্তান। ভিনধর্মের তরুণ এবং কিশোরীর প্রেমেই আপত্তি ওই বিজেপি নেত্রীর। সে কারণেই তিনি তাঁদের বাধা দেন।
[আরও পড়ুন: দাউদাউ করে জ্বলছে চেতলার ঝুপড়ি, আগুনে ঝলসে গেল ২ শিশু-সহ চারজন]
তবে প্রাক্তন বিজেপি নেত্রীর ফতোয়া মানতে রাজি ছিলেন না তরুণ এবং কিশোরী। অভিযোগ, সে কারণেই প্রাক্তন বিজেপি নেত্রী তাঁদের হেনস্তা করে। প্রকাশ্য রাস্তায় তাঁদের চুল কেটে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। মারধরের পর যদিও বাড়ি ফিরে যায় যুগল। সাহস করে এই বিষয়টি নিয়ে কাউকে কিছুই বলতেও পারেননি তাঁরা।
প্রাক্তন বিজেপি নেত্রী নিজেই যুগলকে মারধরের ছবি এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করে। নিজের আস্ফালনের কথা জাহির করতে গিয়েই বিপাকে পড়েন প্রাক্তন বিজেপি নেত্রী। তাঁর শেয়ার করা ছবি, ভিডিও নজরে পড়ে পুলিশের। প্রাক্তন বিজেপি নেত্রীর বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু হয়। এরপরই কোতয়ালি থানার পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। ধৃতের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৪১, ৩২৩, ৩৫৪, ১৫৩এ, ৫০০, ৫০৫(১), ৫০৯ এবং ৩৪ ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ। আদালতে তোলা হলে প্রাক্তন বিজেপি নেত্রীকে জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। শুধুমাত্র ভিনধর্মে প্রেমের ‘অপরাধে’ যুগলকে শাস্তির ঘটনায় বিভিন্ন মহলে উঠেছে নিন্দার ঝড়।