shono
Advertisement
Sandip Ghosh

রাতভর ম্যারাথন জেরা, এখনও সিবিআই দপ্তরে আর জি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ

Published By: Sayani SenPosted: 08:34 AM Aug 17, 2024Updated: 09:21 AM Aug 17, 2024

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে রাতভর জেরা। শুক্রবার দুপুর তিনটে নাগাদ মাঝরাস্তা থেকে পাকড়াও করে সিজিও কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। এখনও সিজিও কমপ্লেক্সেই রয়েছেন প্রাক্তন অধ্যক্ষ। সিবিআইয়ের তলবে যাননি তিনি। শেষপর্যন্ত নাটকীয়ভাবে আরজিকর হাসপাতালের প্রাক্তন অধ‌্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে শুক্রবার দুপুর তিনটে নাগাদ নিজেদের গাড়িতে তুলে সল্টলেকে সিজিও কমপ্লেক্সে নিয়ে যায় সিবিআই। হাসপাতালের অন‌্য চিকিৎসক ও কর্তারা ইতিমধ্যেই জিজ্ঞাসাবাদে সিবিআইকে জানিয়েছেন, প্রাক্তন অধ‌্যক্ষের নির্দেশ তাঁরা পালন করেছেন মাত্র। এই বিষয়ে একের পর এক তথ‌্যও এসেছে সিবিআইয়ের কাছে।

Advertisement

আবার আরজিকর হাসপাতালে নির্যাতিতা মহিলা চিকিৎসকের অভিভাবকরাও সিবিআই আধিকারিকদের জানিয়েছেন যে, তাঁদের মেয়ে অত‌্যন্ত চাপে থাকতেন। তাঁকে জোর করে ডিউটি দেওয়া হত। এই ব‌্যাপারেও প্রাক্তন অধ‌্যক্ষর বিরুদ্ধেই অভিযোগের আঙুল তুলেছেন তাঁরা। খুন ও ধর্ষণের মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের সঙ্গে প্রাক্তন অধ‌্যক্ষর সরাসরি যোগাযোগ ছিল, এমন তথ‌্যও এসেছে সিবিআইয়ের হাতে। আর জি কর হাসপাতালে নির্যাতিতার মৃত্যুর পর সঞ্জয়ের সঙ্গে সন্দীপ ঘোষের যোগাযোগ হয়েছিল কি না, সিবিআই তা জানার চেষ্টা করছে।

সন্দীপবাবুও ষড়যন্ত্রে সামিল কি না, জেরার সুবাদে সেই ব‌্যাপারে নিশ্চিত হতে চাইছেন সিবিআই আধিকারিকরা। তাঁর বিরুদ্ধে আইনি ব‌্যবস্থা নেওয়া হবে কি না, এদিন রাতে তা নিয়েও সিজিও কমপ্লেক্সে আলোচনা করেন সিবিআই কর্তারা। এদিকে এদিনই সিবিআইয়ের তরফে চারজন চিকিৎসক ও ইন্টার্নকে তলব করে জেরা করা হয়। এ ছাড়াও চেস্ট বিভাগের প্রধান, এক অ‌্যাসিস্ট‌্যান্ট সুপারকেও জেরা করা হয়। জানা গিয়েছে, ঘটনার রাতে আরজি করে কর্তব‌্যরত বেসরকারি সংস্থার মোট ৪৯ জন নিরাপত্তারক্ষীকে তলব করে সিবিআই। এপর্যন্ত ১৩ জনকে জেরা করা হয়েছে।

[আরও পড়ুন: ট্র্যাকে পাথর! গভীর রাতে লাইনচ্যুত সবরমতী এক্সপ্রেসের ২২টি কামরা, নেপথ্যে নাশকতা?]

বৃহস্পতিবারই আরজিকর হাসপাতালের প্রাক্তন অধ‌্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে সিবিআই তলব করেছিল। কিন্তু তলবে তিনি সাড়া দেননি। বৃহস্পতিবার আরজিকরে যায় সিবিআইয়ের একটি টিম। বর্তমান অধ‌্যক্ষের সঙ্গে আধিকারিকরা আলোচনা করেন। তাঁর কাছ থেকে বেশ কিছু নথি চাওয়া হয়। তাঁর কাছ থেকে প্রশাসনিক কিছু তথ‌্যও জানতে চান সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা। কিন্তু অধ‌্যক্ষ তাঁদের জানান, যেহেতু তিনি নতুন এসেছেন, তাই অনেক তথ‌্যই তাঁর কাছে নেই। তিনিও সিবিআইকে স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে, সন্দীপ ঘোষের কাছেই রয়েছে যাবতীয় তথ‌্য।

স্বাস্থ‌্যভবন সূত্র জানিয়েছে, এদিন সকালে তিনি স্বাস্থ‌্য ভবনে যান। তাঁর বাবা একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তাঁকেও দেখতে যান তিনি। তারপর পুলিশি নিরাপত্তার আর্জি চেয়ে হাই কোর্টে তাঁর দায়ের করা মামলাতেও উপস্থিত হন সন্দীপবাবু। জানা গিয়েছে, এরপর সল্টলেকে ফিরে আসার পর একটি গাড়িতে সিবিআইয়ের আধিকারিকরা তাঁর পিছু নেন। রাস্তায় গাড়িটি সন্দীপ ঘোষের গাড়ি আটকায়। তিনি কোনও প্রশ্ন করার আগেই নিজেদের গাড়ি থেকে নেমে ছুটে এসে সন্দীপবাবুর গাড়ির সামনে আসেন সিবিআই আধিকারিকরা। তাঁকে নিজেদের পরিচয় দিয়ে গাড়ি থেকে বেরিয়ে আসতে বলেন।

এর পর সন্দীপবাবুকে নিয়ে তাঁরা চলে যান নিজেদের দফতরে। সঞ্জয়ের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ও যোগাযোগ নিয়ে সন্দীপ ঘোষকে প্রশ্ন করা হয়। সহ সুপার সিবিআইকে জানান, তিনি নির্যাতিতা তরুণী চিকিৎসকের বাড়িতে ফোন করে তাঁর অভিভাবকদের জানান যে, তাঁদের মেয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন। তাঁকে প্রাক্তন অধ‌্যক্ষ নিজেই এই তথ‌্যটি ফোন করে বাড়ির লোকেদের জানানোর নির্দেশ দেন। যখন প্রাক্তন অধ‌্যক্ষ নিজের ঘরে এই নির্দেশ দেন, তখন অফিসে উপস্থিত ছিলেন অন‌্য এক চিকিৎসকও। তিনি প্রশ্ন তোলেন যে, প্রত্যেকেই ওই তরুণীর দেহটি দেখেছে। বোঝাই যাচ্ছে তাঁকে খুন করা হয়েছে। তাঁর উপর চালানো হয়েছে নির্যাতন। সেখানে তিনি কেনই বা আত্মহত‌্যার তত্ত্ব খাড়া করতে চাইছেন? এই প্রশ্নে আমল না দিয়ে সন্দীপ ঘোষ ওই সহ সুপারকে নির্দেশ দেন, আত্মহত‌্যার কথাই বলতে।

এমনকী, প্রথম দফায় টালা থানার যে আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে যান, তাঁদেরও প্রাক্তন অধ‌্যক্ষ বোঝানের চেষ্টা করেন যে, এটি আত্মহত‌্যারই ঘটনা। এই ক্ষেত্রে সঞ্জয় তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করার পর তিনি আত্মহত‌্যার তত্ত্ব খাড়া করে ময়নাতদন্তেও নিজের প্রভাব খাটাতে চান কি না, সেই তথ‌্য সিবিআই জানার চেষ্টা করছে। এদিকে, এদিন লালবাজারে পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল জানান, তাঁরা কোনও তথ‌্য ও প্রমাণ নষ্ট করেননি। সিবিআইয়ের যদি সন্দেহ হয়, তবে সিবিআই অবশ‌্যই তা খতিয়ে দেখতে পারে। সেই ক্ষেত্রে পুলিশ সিবিআইকে সাহায‌্য করবে বলেও জানান পুলিশ কমিশনার।

[আরও পড়ুন: ‘মমতাই পারেন, অন্য কারও দম নেই’, বিরোধী শিবিরে প্রধানমন্ত্রীর মুখ নিয়ে মন্তব্য স্বামীর]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে রাতভর জেরা।
  • শুক্রবার দুপুর তিনটে নাগাদ মাঝরাস্তা থেকে পাকড়াও করে সিজিও কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে।
  • এখনও সিজিও কমপ্লেক্সেই রয়েছেন প্রাক্তন অধ্যক্ষ।
Advertisement