দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: মডেল-অভিনেত্রী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের (Arpita Mukherjee) বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাটে উদ্ধার হওয়া টাকা গুনতে রাতের ঘুম নষ্ট ইডি এবং ব্যাংক আধিকারিকদের। ঠিক সেই সময় রাতের অন্ধকারে বারুইপুরের বেগমপুরে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাগানবাড়িতে ঘটল চমকপ্রদ ঘটনা। চার অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীর হানায় বাগানবাড়ি থেকে গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু নথিপত্র। তবে মূল্যবান কোনও সামগ্রী চুরি হয়ে গিয়েছে কিনা, তা এখনও স্পষ্ট নয়। বারুইপুর থানার পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে।
স্থানীয়দের দাবি, বুধবার রাত ১টা নাগাদ চারজন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি বারুইপুরের বেগমপুরের বাগানবাড়ির সামনে আসে। তালা খোলার শব্দে ঘুম ভেঙে যায় এলাকাবাসীর। তাঁরা বাড়ি ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে আসেন। তবে সেই সময় ওই চার দুষ্কৃতী তাদের কার্যত হুমকি দেয় বলেই অভিযোগ। তালা ভেঙে ভিতরে ঢোকে প্রত্যেকে। কিছুক্ষণের মধ্যে বেশ কিছু নথিপত্র হাতে বেরিয়ে আসতে দেখা যায় তাদের। এলাকাবাসীর অনুমান, ওই বাগানবাড়ি থেকে শুধুমাত্র নথিপত্র খোয়া গিয়েছে। তবে অন্য কোনও গুরুত্বপূর্ণ সামগ্রী খোয়া গিয়েছে কিনা, সে বিষয়ে এখনও স্পষ্ট কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি। বারুইপুর থানার পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। খোয়া যাওয়া নথিপত্রে কী এমন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ছিল। তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। তবে কি নিছক চুরি নাকি এর নেপথ্যে অন্য কোনও রহস্য লুকিয়ে রয়েছে, স্বাভাবিকভাবেই উঠছে প্রশ্ন।
[আরও পড়ুন: টালিগঞ্জকে টেক্কা বেলঘরিয়ার, অর্পিতার ফ্ল্যাটে উদ্ধার প্রায় ২৮ কোটি, মিলল তাল তাল সোনা]
বেগমপুরের এই বাগানবাড়িতে সামনে নেমপ্লেটে লেখা ছিল ‘বিশ্রাম’। প্রায় ২০ বিঘা জমির উপর তৈরি এই বাগানবাড়িতে একসময় প্রচুর পরিচারক ও পরিচারিকা ছিলেন। তবে করোনাকালে প্রত্যেকে কাজ হারান। বর্তমানে পরিচারিকা কিংবা পাহারাদার কেউই নেই ওই বাগানবাড়িতে। শোনা যাচ্ছে, মাঝেমধ্যে ওই বাগানবাড়িতে আসাযাওয়া ছিল পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। সঙ্গে থাকতেন অর্পিতাও। নিরিবিলিতে কিছুটা সময় কাটিয়ে ফের দু’জনে ফিরে যেতেন বলেই দাবি এলাকাবাসীর।
শুধু বেগমপুরই নয়। আরও নানা জায়গায় একসঙ্গে যাতায়াত করতেন পার্থ-অর্পিতার। ইডি সূত্রে খবর, সিঙ্গাপুরে যাওয়ার সময় পার্থর সফরসঙ্গিনী ছিলেন অর্পিতা। যদিও বিষয়টি আপাতত তদন্তসাপেক্ষ। এদিকে, এখনও পর্যন্ত অর্পিতার টালিগঞ্জ এবং বেলঘরিয়ার দু’টি ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হওয়া টাকার পরিমাণ প্রায় ৫০ কোটি।