সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাশিয়া-ইউক্রেন (Russia-Ukraine War) প্রথম দফা শান্তি আলোচনায় সমাধান সূত্র মেলেনি। অষ্টম দিনেও আগ্রাসী পুতিনের সেনার হামলায় নাস্তানাবুদ ইউক্রেন। এই পরিস্থিতিতে দ্রুত ভারতীয়দের দেশে ফেরানোর চেষ্টা করছে দিল্লি। ইউক্রেন ও রাশিয়া দুই দেশের সঙ্গেই এই বিষয়ে নিয়মিত কথা চালানো হচ্ছে। যদিও এর মধ্যে দুই ভারতীয় পড়ুয়ার মৃত্যু হয়েছে। তবে কূটনৈতিক দিক থেকে আপাতত মধ্যপন্থায় ভারত। একদিকে যেমন যুদ্ধ সমর্থন করছে না নয়াদিল্লি, তেমনই প্রকাশ্যে ‘বন্ধু’ রাশিয়ার বিপক্ষে যাচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে ঘুরিয়ে ভারতকে রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য পদ পাইয়ে দেওয়ার ‘টোপ’ দিল ফ্রান্স (France)।
এদিন ভারতে নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত যা বললেন, তার অর্থ হল ভারত যদি রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের বিরোধিতা করে, তবে রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী পদের বিষয়ে ভারতকে সমর্থন করবে ফ্রান্স। ভারতে ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত ইমানুয়েল লেনেঁ (Emmanuel Lenain) বলেন, “ভারতের বক্তব্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। আন্তর্জাতিক মঞ্চে আরও বড় দায়িত্ব পেতে চায় ভারত।” এরপরই ইমানুয়েল বলেন, “রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ভারতের স্থায়ী পদের বিষয়ে আমার দেশের সমর্থন রয়েছে। ভারত এমন একটি কণ্ঠ, যা গোটা বিশ্ব শুনতে চায়। বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের উপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। ভারত আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি সম্মান জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে। এই ভাবনাকে স্বাগত জানাই আমরা।”
[আরও পড়ুন: রুশ ফৌজের দখলে ইউরোপের বৃহত্তম পরমাণু কেন্দ্র, IAEA-কে জানাল মস্কো]
পুতিনের ইউক্রেন হানার পর সরাসরি যুদ্ধে না গেলেও রাশিয়ার ওপর আর্থিক নিষেধাজ্ঞা-সহ নানাভাবে চাপ তৈরি করছে পশ্চিমী দেশগুলি। পুতিনকে রুখতে নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে ভোটাভুটিও হয়। যদিও ওই ভোটাভুটিতে নিজেদের অবস্থান বদল করেনি ভারত। ভোট দেওয়া থেকে বিরত থেকেছে নয়াদিল্লি। এদিন রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভাতে রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের নিন্দা প্রস্তাব আনা হয়, এই ভোটাভুটিতেও অংশ নেয়নি ভারত। উল্লেখ্য, পুতিনের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে আমেরিকা-সহ পশ্চিমী দেশগুলির আনা নিন্দা প্রস্তাবের পক্ষে ভোট পড়েছে ১৪১টি। বিপক্ষে মাত্র ৫টি। ভারত-সহ মোট ৩৫টি দেশ ভোটাভুটিতে অংশ নেয়নি। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতের রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ভারতের স্থায়ী পদ পাওয়া সংক্রান্ত মন্তব্যের পর কী অবস্থান নেবে নয়াদিল্লি?
[আরও পড়ুন: আবার যুদ্ধ হবে, থামাতে পারবেন না বাইডেন! ভবিষ্যদ্বাণী ট্রাম্পের]
প্রসঙ্গত, প্রথম থেকেই ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ থামাতে মধ্যস্থতা করছে ফ্রান্স। এদিনও পুতিনের (Vladimir Putin) সঙ্গে প্রায় ৯০ মিনিট ফোনে কথা বলেন ফ্রান্সের প্রেসিডন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ (Emmanuel Macron)।যদিও তাঁদের মধ্যে কী কথা হয়েছে তা এখনও জানা যায়নি। সব মিলিয়ে জটিল আন্তর্জাতিক রাজনীতির সাক্ষী হচ্ছে বিশ্ব।