ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বোলপুর: তিন পড়ুয়ার বহিষ্কারের সিদ্ধান্তে উত্তাল হয়ে ওঠে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় (Visva Bharati University) চত্বর। ছাত্র আন্দোলনের জল গড়ায় কলকাতা হাই কোর্টেও। সেই অসন্তোষে লাগাম টানতেই বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাই কোর্ট। হাই কোর্টের নির্দেশের ৫০ ঘণ্টা পর বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের পরিবর্তের স্থগিতাদেশ জারি করল বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ফের কি বহিষ্কৃত হতে পারেন তাঁরা, দুশ্চিন্তায় ওই তিন পড়ুয়া।
অর্থনীতি বিভাগে সোমনাথ সৌ, ফাল্গুনী পান এবং সংগীত ভবনের রূপা চক্রবর্তী নামে সংগীত বিভাগের পড়ুয়াকে ৬ মাসের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছিল। পরবর্তীতে সাসপেনশন বর্ধিত করা হয়। তারা সাসপেন্ড থাকাকালীন তিন পড়ুয়াকে ৩ বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সরব পড়ুয়ারা। তাঁদের দাবি, উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী (Bidyut Chakrabarty) বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘যথেচ্ছাচার’ করছেন।
[আরও পড়ুন: মার্কিন সেনার জন্য রান্না করতে থেকে যান আফগানিস্তানে, এতদিনে বাড়ি ফিরলেন বাংলার যুবক]
উপাচার্যের বাসভবন প্রতীচী ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান পড়ুয়ারা। সপ্তাহখানেক ধরে একটানা ছাত্র আন্দোলনে কার্যত গৃহবন্দি হয়ে পড়েন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। নিরাপত্তার দাবিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠিও পাঠান তিনি। কলকাতা হাই কোর্টেও ছাত্র আন্দোলনের জল গড়ায়। ছাত্র আন্দোলনে হস্তক্ষেপ করে কলকাতা হাই কোর্ট। উপাচার্যের বাসভবনের সামনে থেকে ঘেরাও প্রত্যাহারের নির্দেশ দেয় আদালত। সেই অনুযায়ী বিশ্বভারতী প্রাঙ্গন থেকে ৫০ মিটার দূরে ফের অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেন পড়ুয়ারা। শিক্ষক দিবসে অনশনও শুরু করেন তাঁরা।
এরই মাঝে কলকাতা হাই কোর্টে (Calcutta High Court) ধাক্কা খায় বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। পড়ুয়াদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশের পরেও ক্লাসে যোগের বিষয়ে কোনও বিজ্ঞপ্তি জারি করেনি বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। গত বৃহস্পতিবার ই-মেলের মারফত বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে ক্লাস যোগের ইচ্ছাপ্রকাশের কথা জানান বহিষ্কৃত পড়ুয়ারা। তারই পরিপ্রেক্ষিতে ছাত্রছাত্রীদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্তে স্থগিতাদেশ জারি করা হয়। তবে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত এখনও প্রত্যাহার করা হয়নি। আবারও যেকোনও কারণ উল্লেখ করে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত কার্যকর করার আশঙ্কায় ওই তিন পড়ুয়া।