সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তুমুল বিতর্কের মাঝেই শুক্রবার নমাজপাঠ হয় কাশীর জ্ঞানবাপী মসজিদে। তবে ওজুখানায় ‘শিবলিঙ্গ’ মেলায় ‘ওজু’ বা হাতমুখ ধুয়ে পরিচ্ছন্ন হওয়ার ধর্মীয় রীতি পালন করতে পারলেন না নমাজ পড়তে আসা মানুষজন। এমনটাই খবর সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে।
[আরও পড়ুন: ‘বাবরি হারিয়েছি, আর কোনও মসজিদ হারাতে রাজি নই’, জ্ঞানবাপী বিতর্কে বিস্ফোরক ওয়েইসি]
সম্প্রতি বারাণসী সিভিল কোর্টের (Varanasi Civil Court) নির্দেশে বারাণসীর জ্ঞানবাপী মসজিদে ভিডিও সার্ভে হয়। সেই ভিডিওগ্রাফি চলাকালীন দাবি ওঠে, মসজিদের অন্দরের জলাশয়ে যেখানে ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা ওজু করতেন, সেখানে একটি ‘শিবলিঙ্গ’ রয়েছে। এরপরই ১৭ মে ওই জলাশয়ের আশপাশ সিল করে দেওয়ার নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। তবে মসজিদে নমাজ বন্ধ রাখা যাবে না বলেও জানিয়ে দিয়েছিল সিভিল আদালত। এদিন সেইমতো নমাজ পাঠ হলেও ওজু হয়নি বলেই খবর।
উল্লেখ্য, ২০২১-এর আগস্টে পাঁচ হিন্দু মহিলা জ্ঞানবাপীর ‘মা শৃঙ্গার গৌরী’ (ওজুখানা ও তহখানা নামে পরিচিত) এবং মসজিদের অন্দরের পশ্চিমের দেওয়ালে দেবদেবীর মূর্তির অস্তিত্বের দাবি করে তা পূজার্চনার অনুমতি চেয়েছিলেন বারাণসী আদালতে। সেই মামলায় কয়েকদিন আগেই বারাণসী আদালতের নির্দেশে জ্ঞানবাপী মসজিদের ভিতরে শুরু হয়েছিল ভিডিও সার্ভে। কিন্তু এই ভিডিও সার্ভেতে আপত্তি তোলেন মসজিদ কমিটির সদস্য ও তাদের আইনজীবীরা। তাঁরা জানান, মসজিদের মধ্যে কোনও রকম ভিডিওগ্রাফি করা যাবে না। কিন্তু পিটিশন দাখিলকারীদের আইনজীবীরা বলেন, তাঁরা আদালতের নির্দেশ মেনেই সব করছেন। তারপরই সুপ্রিম কোর্টে যায় মসজিদ কমিটি। কিন্তু সার্ভে থামাতে কোনও নির্দেশ দেওয়া থেকে বিরত থাকে শীর্ষ আদালত। আজ অর্থাৎ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টে সেই মামলায় ফের শুনানি আছে।
প্রসঙ্গত, কাশী বা বারাণসীর বিখ্যাত বিশ্বনাথ মন্দিরের গায়েই রয়েছে জ্ঞানবাপী মসজিদ। ঐতিহাসিকদের একাংশের মতে, একাধিকবার বিদেশি হানাদারদের হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় মন্দিরটি। ১৬৬৯ সালে মূল মন্দিরটি দখল করে জ্ঞানবাপী মসজিদ তৈরি করেন মুঘল বাদশাহ ঔরঙ্গজেব। এখনও মসজিদের দেওয়ালে হিন্দু দেবদেবীর ছবি দেখা যায়। অষ্টাদশ শতকে হিন্দুদের আবেগকে মান্যতা দিয়ে মসজিদের কাছেই আজকের বিশ্বনাথ মন্দিরটি তৈরি করেন মারাঠা রাজ্য মালওয়ার রানি অহল্যাবাই হোলকার।