রাজ কুমার, আলিপুরদুয়ার: হাসিমারা সেনা ছাউনিতে রাতভর পড়েছিল নিথর বিপুল রায়ের (Bipul Roy) দেহ। আর এদিকে তখন বাড়ছে উদ্বেগের পারদ। কফিনবন্দি ঘরের ছেলেকে শেষবার দেখার জন্য সারারাত ছটফট করেছে আলিপুরদুয়ারের বিন্দিপাড়া। অবশেষে শুক্রবার সন্ধেয় গ্রামে পৌঁছল শহিদের দেহ। পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষকৃত্য হল তাঁর। চোখের জলে ঘরের বীর ছেলেকে বিদায় জানাল গোটা গ্রাম।
দাম্পত্য জীবনের বয়স বেশি নয়। ঘরে রয়েছে মাত্র বছর পাঁচেকের সন্তান। ভেবেছিলেন ফিরে আসবেন। স্ত্রী, সন্তানের হাত ধরে জীবনের রাস্তার চড়াই উতরাই পেরোবেন। কিন্তু বৃথা সেই ভাবনা। চিনা সেনার বর্বরতায় সব শেষ। প্রাণ গিয়েছে আলিপুরদুয়ারের বীর সন্তান বিপুল রায়ের। প্রাণ নিয়ে আর বাড়ি ফেরা হয়নি। পরিবর্তে প্রাণবন্ত ছেলে ফিরল কফিনবন্দি হয়ে। শুক্রবার হাসিমারা বায়ুসেনা ছাউনিতে গান স্যালুট দেওয়া হয় শহিদ বিপুল রায়কে। তারপর সড়কপথে তাঁর দেহ পৌঁছয় বিন্দিপাড়া গ্রামে।
[আরও পড়ুন: করোনা রুখতে মিলছে না পিপিই, অমিল ছুটিও, নার্সদের বিক্ষোভে কৃষ্ণনগর জেলা হাসপাতালে ধুন্ধুমার]
আগের মতো স্বামীকে আর কাছে টেনে নিতে পারবেন না জানেন শহিদের স্ত্রী। তবু শেষ দেখা দেখতেই মীরাট থেকে মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে শুক্রবারই তিনি ফেরেন বিন্দিপাড়া। স্বামী হারানোর যন্ত্রণায় যেন কথা বলতেও ভুলে গিয়েছেন। নিষ্পলক চোখ দুটো দিয়ে শুধুই বেরোচ্ছে জল। এটাই বোধহয় নিয়তি। কষ্ট হলেও মানতে শুরু করেছেন স্বামী চলে যাওয়ার মতো কঠিন সত্যিটা। মেয়ে বুঝেছে বাবা আর নেই। কিন্তু কী কারণে এত বড় ঘটনা ঘটল তা বুঝতে পারছে না খুদে। শহিদের পরিবারের সকলেই যেন কঠিন বাস্তবকে মানতে চাইলেও পারছেন না। শেষ দেখার জন্য শহিদের বাড়ির সামনে ভিড় জমান প্রায় গোটা গ্রামের সকলেই। ফুলে ফুলে ঢেকে যায় তাঁর কফিন। এরপর গদাধর নদীর তীরে তাঁর শেষকৃত্য হয়। ঘরের ছেলের মৃত্যুতে যেন থমকে গিয়েছে বিন্দিপাড়া। কান্নার শব্দে ভারি গোটা এলাকা। চোখের জল বাঁধ মানছে না কারও।
[আরও পড়ুন: আনলক ওয়ানেই খুলছে ঘোজাডাঙা সীমান্ত, সামাজিক দূরত্বের বিধি মেনে বাণিজ্য শুরুর সিদ্ধান্ত]
The post পঞ্চভূতে বিলীন চিনা বর্বরতায় শহিদ বিপুল, ঘরের ছেলের শেষকৃত্যে মনমরা বিন্দিপাড়া appeared first on Sangbad Pratidin.