shono
Advertisement

গণেশের মধ্যেই আছে সমণ্বয়ের বার্তা!

গণেশ পুজোর মূলসূরটিও সম্ভবত এই সংহতির ভিতরই নিহিত৷ The post গণেশের মধ্যেই আছে সমণ্বয়ের বার্তা! appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 10:32 PM Sep 05, 2016Updated: 06:02 PM Sep 05, 2016

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দিকে দিকে মহাসামারোহে পালিত হচ্ছে গণেশ চতুর্থী৷ দেশের বিভিন্ন প্রদেশ আলাদা আলাদা করে মেতেছে গণপতির আরাধনায়৷ নানা বৈচিত্র নিয়েও সিদ্ধিদাতার আরাধনায় এক ধরনের সংহতি চোখে পড়ে দেশজুড়ে৷ গণেশ পুজোর মূলসূরটিও সম্ভবত এই সংহতির ভিতরই নিহিত৷

Advertisement

গণেশ নামের মূলে আছে গণ৷ যা আসলে গোষ্ঠী৷ এই গোষ্ঠীর ধারনা পেতে গেলে পৌঁছে যেতে হবে প্রাগার্য সমাজব্যবস্থায়৷ ট্রাইব বা উপজাতি অর্থে এই গণের প্রয়োগ৷ অনেক বিশেষজ্ঞের ধারনা, মরু থেকে জঙ্গলে যে বিভিন্ন গণের বসবাস ছিল তাদেরই সমণ্বয়ের এক রূপ আছে গণেশের মধ্যে৷ অর্থাৎ এই মূর্তিকেই সকল গণের ঈশ্বর হিসেবে ধারণা করে নেওয়া হয়েছে৷ আর্য সভ্যতা বিস্তারের সময় বহু অনার্য গণ বা গোষ্ঠীকে সভ্যতার অঙ্গীভূত করে নেওয়া হয়েছে৷ তারই এক স্মারক যেন গণেশ৷ আর তাই কোনও মনুষ্য মূর্তিতে তাঁকে কল্পনা করা হয়নি৷

এরপর বিভিন্ন সময়ে তাঁর জন্মের নানা আখ্যান গড়ে উঠেছে৷ বিভিন্ন পুরাণে গণেশজন্মের যে কাহিনীর সমাহার রয়েছে তা আসলে বহু সময় ধরে পরবর্তীকালে গড়ে উঠেছে৷

পাল্টা মত হিসেবে বলা যায়, সবকিছুই অনার্যকে তুষ্ট করতে নয়৷ তা করতে হলে আর্যদের প্রাচীন জীবনটিও অস্বীকার করতে হয়৷ হয়তো আর্যরা যে গণ-সমাজে বাস করত তারই ছায়া পড়েছে এই গণেশের মধ্যে৷ পরবর্তীকালে সুসংবদ্ধ ও শিক্ষিত যে আর্যসভ্যতা গড়ে উঠেছে, বহু বছর ধরে তা বহন করে নিয়ে চলেছে অতীত ইতিহাসটিকেও৷ তবে আর্য হোক বা অনার্য – বহু গণকে তুষ্ট করতেই যে এ দেবতার জন্ম তা একরকম স্পষ্ট৷

তবে কেন নানা গণের ভিতর থেকে গণেশের হস্তিমুখ হল তার মীমাংসা নিয়ে বহু মতভেদ আছে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে৷ অনেকের ধারণা, গণদেবতাকে তুষ্ট করতে একটি শ্রেণিকেই প্রতিভূ হিসেবে ধরে নিয়ে এই মূর্তির নির্মাণ হয়েছিল৷ হাতিদের আক্রমণ থেকে ফসল বাঁচানোর তত্ত্বটিও ঘোরাফেরা করে৷ আবার নাগ সম্প্রদায়ের মতো কোনও সম্প্রদায় যাদের স্মারক হস্তিমুখ, তার শ্রেষ্ঠত্ব স্বীকার করে নেওয়ার কথাও মনে করেন অনেকে৷

বিঘ্নের দেবতা হিসেবেও বিনায়কের উল্লেখ মেলে৷  কেন বিঘ্ন থেকে তিনি বিঘ্ননাশের দেবতা হয়ে উঠলেন তা নিয়েও নানা মতভেদ আছে বিশেষজ্ঞদের মতে৷ তবে আর্য সভ্যতার বিস্তারের সাপেক্ষে অনুমান, আলাদা আলাদা উপজাতিগুলির থেকে যে বিঘ্ন আসত আর্যদের সামনে, গণেশের মধ্যে সমণ্বয় খোঁজার পর থেকে হয়ত তা প্রশমিত হয়েছিল৷ সেই হিসেবেই তিনি সিদ্ধিদাতা এবং সব দেবতাদের আগে তাঁর পুজো করার রীতি প্রচলিত হয়৷ অর্থাৎ গণেশ আর্য বা অনার্য নন, আবার দু’য়ের পক্ষেই মঙ্গলজনক এক সমন্বয় বা সেতু বলা যায়৷ সেই মঙ্গল ও সমৃদ্ধির প্রার্থনায় গণেশপুজোর রীতি আজও বিদ্যমান৷

দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নানারকম গণেশের সন্ধান পাওয়া যায়৷ শিল্পকলার নানা বিবর্তনে ধরা আছে বিভিন্ন সময়ের ও বিভিন্ন প্রদেশের গণেশ মূর্তিতে৷ সমণ্বয়ের এই বার্তাটি গণেশের সঙ্গে থেকেই গিয়েছে৷ দেশ ব্রিটিশ শাসনের অধীনে থাকাকালীন জাতীয়তাবোধের উত্থান ঘটাতে ও স্বদেশীদের একজোট করতে তাই গণেশ পুজোরই প্রচলন দেখা গিয়েছিল৷

আজও সারা দেশ জুড়ে মহাধুমাধামের সঙ্গে পালিত হচ্ছে এই গণেশ পুজো৷ আসলে উদযাপনের আড়ালে মিশে আছে এই সমণ্বয়ের মঙ্গলবার্তা৷ বা নিজের অতীতকে সমৃদ্ধির পাশাপাশি বয়ে চলার বার্তা নিহিত এই পুজোয়৷

The post গণেশের মধ্যেই আছে সমণ্বয়ের বার্তা! appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement