shono
Advertisement

ঠাকুমাকে খুনের অভিযোগে শ্রীঘরে মা-দিদি, অনাথ কিশোরীর ভরসা এখন দুই ‘ঋতু’

গড়িয়াহাটে খুন হওয়া বৃদ্ধার বাকি দুই পুত্রবধূর নামই এক। The post ঠাকুমাকে খুনের অভিযোগে শ্রীঘরে মা-দিদি, অনাথ কিশোরীর ভরসা এখন দুই ‘ঋতু’ appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 10:14 AM Dec 15, 2019Updated: 11:26 AM Dec 15, 2019

অর্ণব আইচ: যে ঠাকুমা তাকে সারাক্ষণ আগলে রাখতেন, তিনি খুন হয়েছেন। আর ঠাকুমাকে খুনের দায়ে মা আর দিদি গ্রেপ্তার হয়েছে। বাবার মৃত্যু হয়েছে বহু বছর আগে। হঠাৎ প্রায় অনাথ হয়ে যাওয়া জুন্ড পরিবারের কিশোরী মেয়েটির বড় অবলম্বন এখন দুই ‘ঋতু’, অর্থাৎ তার দুই কাকিমা।

Advertisement

কিশোরী বেশিরভাগ সময় থাকত ঠাকুমার সঙ্গে পাঞ্জাবে থাকত। সে পাঞ্জাবেরই একটি স্কুলে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। চোখের সামনে ঠাকুরমার মৃত্যু, তার উপর মা ও দিদির গ্রেপ্তারির পর সে বাকরুদ্ধ। তখনও তার চোখে জল। হতভম্ব হয়ে যাওয়া মেয়েটির দায়িত্ব নিয়েছেন দুই ‘ঋতু’ই। তাঁরা জানান, এখন থেকে বড় জায়ের ১৪ বছরের মেয়েটি তাঁদের কাছেই থাকবে। নিজেদের কাছে রেখে কলকাতা বা শিলিগুড়ির স্কুলে তাকে পড়াতে চান। এই স্নেহশীল দুই নারীর নামই ঋতু জুন্ড। একজনের স্বামী বাড়ির মেজ ছেলে দীপক। অন্যজনের স্বামী ছোট ছেলে বলরাজ।

[আরও পড়ুন: বিধানসভার আগে সেলিব্রিটিদের কাছে টানার কৌশল, বিজেপির রাজ্য কমিটিতে থাকবেন বিশিষ্টরাও]

শাশুড়ি উর্মিলাদেবীকে খুনের ঘটনায় যে মূল চক্রী তাঁদেরই বড় জা ডিম্পল ও জায়ের বড় মেয়ে গুড়িয়া, তা এখনও বিশ্বাস করতে পারছেন না নিহত বৃদ্ধার অন্য দুই পুত্রবধূ। বাড়ির মেজ বউ ঋতু জুন্ড থাকেন শিলিগুড়িতে। তিনি জানান, লোভী ছিল ডিম্পল। শুধু টাকার দাবি ছিল তার। তা ‘বলে বাড়ির বড় বউ এত নিচে নেমে নামতে পারে, তা তাঁদের কল্পনার বাইরে। দুই পুত্রবধূ জানাচ্ছেন, শাশুড়ির সবথেকে কাছের ও প্রিয় পুত্রবধূ ছিল ডিম্পল। স্বামীর মৃত্যুর পর শাশুড়ি ও দেওরদের কাছে বড় বউ যা চাইত, তা-ই পেত। যখনই দশ বা কুড়ি হাজার টাকা চেয়েছে, তখনই তাকে সেই টাকা দিয়েছেন শাশুড়ি উর্মিলাদেবী। কিন্তু দিনে দিনে তার টাকা ও গয়নার উপর লোভ বেড়ে যাচ্ছিল। ব্যাংকের লকারে প্রচুর গয়না ছিল শাশুড়ি ও ডিম্পলের নামে। সেই গয়না একাই হস্তগত করতেই শাশুড়িকে ছক কষে ডিম্পল খুন করেছে, এমন সন্দেহ অনেকেরই।

রিচি রোডের বহুতলের পাঁচতলার ফ্ল্যাটটি ছিল বড় ভাই মনদীপ ও ছোট ভাই বলরাজের নামে। কিন্তু দুই মেয়েকে নিয়ে ওই ফ্ল্যাটে ডিম্পল থাকত। এই ফ্ল্যাটটি সম্পূর্ণভাবে তার নামে লিখে দিতে বলেছিল ডিম্পল। দুই ‘ঋতু’ জানান, তাঁদের আরেকটি ফ্ল্যাট তৈরি হচ্ছে। সেটি তৈরি হয়ে গেলে রিচি রোডের ফ্ল্যাটটি ডিম্পলকে দিয়ে দেবেন বলে আশ্বস্ত করেছিলেন উর্মিলাদেবী। কিন্তু তার আগেই হয়ে গেল এই ঘটনা।

[আরও পড়ুন: বাড়ছে CAA বিরোধী আন্দোলনের ঝাঁজ, ফের সংযত হওয়ার বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর]

ছোট ছেলের স্ত্রী ঋতু জানান, তিনি কলকাতায় থাকলেও কোনওদিন সৌরভ পুরী নামে বড় জায়ের ওই প্রেমিকের নামও শোনেননি। যদিও ডিম্পলের সঙ্গে মনোমালিন্যের জেরে তিনি গত তিন বছর ধরে রিচি রোডের বাড়িতে পা দেননি। কেউ বাড়িতে না থাকার কারণেই বেড়ে উঠছিল ডিম্পলের সঙ্গে অসমবয়সি সৌরভের প্রণয়। তবে ছোট মেয়েটি পরিবারকে জানিয়েছে, পাঞ্জাবে থাকার সময় সে মায়ের সঙ্গে সৌরভকে কয়েকবার দেখেছে। বড় নাতনি গুড়িয়া তার দাদিকে ভালবাসলেও, ইদানীং তার আচরণে পরিবর্তন দেখা গিয়েছিল। খুনের আগের দিন দাদিকে ডাক্তার দেখাতেও নিয়ে গিয়েছিল গুড়িয়া। কিন্তু দাদির বাড়িতে কিছু খায়নি। অন্যদিন দাদির কাছে টাকার জন্য বায়না করত। কিন্তু সেদিন দাদি টাকা দিতে গেলেও নেয়নি সে। কিন্তু প্রিয় দাদিকে খুন করতে সে নিজেই এগিয়ে আসবে, তা ভাবতে পারছে না পরিবার।

The post ঠাকুমাকে খুনের অভিযোগে শ্রীঘরে মা-দিদি, অনাথ কিশোরীর ভরসা এখন দুই ‘ঋতু’ appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement